শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা, ভিডিও ধারন করায় সাংবাদিকের মিরুদ্ধে মামলা
প্রকাশ: ২১ অক্টোবর, ২০২২, ১০:৫৭ অপরাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ
বরগুনা প্রতিনিধিঃ বরগুনার তালতলীতে সাংবাদিক জলিল আহমেদ’র বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। সাংবাদিক জলিল তালতলী রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক ও বেসরকারি টেলিভিশন এশিয়ান টিভির তালতলী উপজেলা প্রতিনিধি।
গত (১৭ অক্টোবর) বৃহস্পতিবার আমতলী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তার বিরুদ্ধে মারধরের হুকুমদাতা ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন মালেক আকন ওরুফে মালেক কোম্পানির ছেলে হিরো আকন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মালেক আকনের দ্বিতীয় স্ত্রী শাহানাজ আক্তারের বাড়ি উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের খোট্টার-চর এলাকায়। স্ত্রীকে মারধর করে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেন মালেক। রবিবার (১৬ অক্টোবর) শ্বশুরবাড়িতে বেরাতে এসে শাশুড়ি ও স্ত্রী শাহানাজকে বেধড়ক মারধর করে। ঘটনা শুনে সাংবাদিক জলিল আহমেদ, রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মল্লিক মো. জামাল, প্রেসক্লাবের সদস্য শাহিন সাইরাজ, সধংবাদিক ঐক্যজোটের সভাপতি আবুল হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুম বিল্লাহ্ জাফর ও সদস্য হায়দার হাওলাদার সহ আরো অনেক সাংবাদিকরা উপস্থিত হন ঘটনাস্থলে।
সাংবাদিকরা উপস্থিতর পরও কয়েক দফায় মালেক আকনের শশুর বাড়ির লোকজন সংঘর্ষে জড়ায়।প্রথমে মালকে আকন তার শাশুড়ীকে মারধর করে পরে তার শশুড় ও স্ত্রীর সাথে মারামারি হয়। সাংবাদিক ঐক্যজোটের সভাপতি আবুল হাসান বিষয়টি তাৎক্ষনিকভাবে পুলিশ কে জানালে কিছুক্ষণ পরে পুলিশ এসে মালেক, তার শ্বশুর মো. নিজাম ও স্ত্রীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। পরক্ষণে স্থানীয় ভাবে সালিশ বৈঠকের কথা বলে উভয় পক্ষ। অন্যদিকে মালেকআকনের ছেলে হিরো জলিল আহমেদ সহ ৭ জনকে আসামী করে আদালতে মামলা দেয়।
এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, মালেক আকন তার শাশুড়িকে মারধর করে মাটিতে ফেলে দেয় এ সময় মালেকের শ্বশুর- ও স্ত্রী তাকে মারধর করে।
সাংবাদিক জলিল আহমেদ বলেন, আমরা ঘটনাটি শুনে সাংবাদিকরা সেখানে উপস্থিত হয়ে ভিডিও ধারণ করি। এ সময় মালেক আমাকে হুমকি-ধমকি দেয় যে, তুই ভিডিও করিস না, তোকেও কিন্তু মামলায় দেব। মালেকর অপকর্ম ঢাকার জন্যই সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। তিনি আরো বলেন, এ ধরনের সন্ত্রাসী ও নৈরাজ্যমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করাই মালেক ও তার ছেলে হিরুর এখন একমাত্র কাজ।
মালেক আকন বলেন, আমাকে যখন মারধর করেছে তখন সাংবাদিক জলিল ওখানে উপস্থিত ছিল, আমাকে মারধর না ফিরিয়ে তিনি ভিডিও ধারণ করেন এই কারণেই আমি তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছি।
এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তালতলী রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মল্লিক মো.জামাল বলেন, একজন সাংবাদিকের কাজ সংবাদ সংগ্রহ করা। সেখানে শ্বশুর-শাশুড়ি ও স্ত্রী সহ একটি পরিবারের মধ্যে ব্যাপক মারধরের ঘটনা শুনে সাংবাদিকরা সেখানে সংবাদ সংগ্রহের জন্য উপস্থিত হন। মালেকের অপকর্ম লুকানোর জন্যই জলিলের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছেন। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে এই মামলা প্রত্যাহারের দাবিও জানাচ্ছি।
তালতলী সাংবাদিক ঐক্যজোটের সভাপতি আবুল হাসান বলেন, আমি গিয়ে দেখি মালেক আকন তার শাশুড়ীকে মেরে পালানোর চেষ্টা করছে। যার ভিডিও সাংবাদিক জলিল আহমেদের কাছে আছে। তিনি নিজে ভিডিও করেছেন। এসময়ে তার শশুড় ও স্ত্রী তাকে ঘরে আটকে দেয়। আমি তালতলী থানার অফিসার ইনচার্জকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানাই। তিনি পুলিশ পাঠায়ে তাদেরকে থানায় নিয়ে যায়। যেখানে ৮-১০ জন সাংবাদিক উপস্থিত ছিলো। তাদের সকলকে বাদ দিয়ে সাংবাদিক জলিল কে কেন আসামী করলো এটা আমাদের বোধগম্য নয়। আমরা এই মিথ্যা হয়রানী ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে তালতলী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, থানায় কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে আদালতে মালেক আকনের শশুড় ও সাংবাদিক জলিল সহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।