লাশ রেখে পালিয়ে যান স্বজনরা, গোসল ও জানাজা পড়ান এসিল্যান্ড
প্রকাশ: ৮ জুন, ২০২০, ৮:৪৭ অপরাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ
পিরোজপুর প্রতিনিধিঃ
পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় ঢাকা ফেরত করোনা উপসর্গ নিয়ে এক ব্যক্তির (৬০) মৃত্যুর পর লাশ রেখে পালিয়ে যান স্বজনরা। রোববার রাতে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. তৌহিদুল ইসলাম লাশের গোসল ও জানাজা পড়িয়ে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করেন।স্থানীয়দের সূত্রে জানাগেছে, উপজেলার রাজপাশা গ্রামের ওই ব্যক্তি ঢাকা থেকে গত শনিবার সর্দি-জ্বর নিয়ে বাড়িতে আসেন। ওই দিনই সে গুরুত্বর অসুস্থ হলে স্বজনরা তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে তার প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়িতে নিয়া হয়। রবিবার রাতে সে হঠাৎ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লে করোনা আক্রান্ত সন্দেহে ভয়ে স্ত্রী ও সন্তানরা লাশ ঘরে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। সেই সাথে মৃত বৃদ্ধের প্রতিবেশী বাড়ীর লোকজনসহ আপন দুই ভাইও পালিয়ে যায়।স্থানীয়রা উপজেলা প্রশাসনকে খবর দিলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল আলম, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এইচএম জহিরুল ইসলাম ও সহকারি কমিশনার(ভূমি) মো. তৌহিদুল ইসলাম রাতেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। লাশ উদ্ধার করে মেডিকেল টীম করোনা সংক্রমণ পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ করে। প্রশাসন পরিবারের স্বজন কাউকে না পেয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান মো. সিদ্দিকুর রহমান টুলুর সহায়তায় এক ব্যক্তিকে দিয়ে ওই বৃদ্ধের পারিবারিক কবরস্থানে কবর খোড়া হয়।পরে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. তৌহিদুল ইসলাম নিজেই লাশের গোসল ও জানাজার ইমামতির দায়িত্ব পালন করেন। এভাবে রাত ১ টার দিকে ওই বৃদ্ধের লাশ দাফন সম্পন্ন হয়।এ বিষয়ে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি ) মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, করোনার সংক্রমণের ভয়ে পরিবারের স্বজনরা লাশ ফেলে পালিয়েছে। উপজেলা প্রশাসন যথাযথ নিয়ম মেনে লাশ দাফনের ব্যবস্থা করেছে। আমি লাশের গোসল ও জানাজা পড়িয়েছি। কিন্তু দুর্ভাগ্য স্বজনরা কেউ কাছে আসেননি।উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এইচএম জহিরুল ইসলাম, ওই ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত কিনা তা এখনও আমরা নিশ্চিত নই। তার নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।উপজেলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকবর্তা নাজমুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, করোনার ভয়ে পরিবারের লোকজন তার লাশ ফেলে পালিয়েছেন। এটা দুঃখজনক। খবর পেয়ে প্রশাসন গিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গভীর রাতে লাশ দাফন করেছেন। তিনি আরো বলেন, প্রশাসন খবর না পেলে আজও হয়তো হতভাগ্য ওই বৃদ্ধের লাশ ঘরে পড়ে থাকতো।