রবিবার ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ই-পেপার   রবিবার ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ



লঞ্চের কেবিনে অন্তরঙ্গ সময় কাটিয়ে বাচ্চুকে হত্যা করে সাবেক স্ত্রী
প্রকাশ: ৪ আগস্ট, ২০২২, ১০:১১ পূর্বাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ

লঞ্চের কেবিনে অন্তরঙ্গ সময় কাটিয়ে বাচ্চুকে হত্যা করে সাবেক স্ত্রী

দুই বছর আগে ‘জিনের বাদশা’ পরিচয়ে আরজু আক্তারকে ফোন করেন জাকির হোসেন বাচ্চু। কথা বলতে গিয়ে দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে তারা বিয়ে করেন। তবে প্রতারণার মাধ্যমে পাওয়া অর্থ অনৈতিক কাজে ব্যয় করা নিয়ে তাদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়। পাঁচ মাস আগে তাদের বিচ্ছেদ ঘটে। আনুষ্ঠানিক বিচ্ছেদ হলেও দু’জনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল আগের মতোই।

সম্প্রতি আরজু বুঝতে পারেন, একাধিক নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছিলেন তার সাবেক স্বামী। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি ভয়ংকর পরিকল্পনা করেন। একসঙ্গে বাড়িতে যাওয়ার নাম করে প্রথমে লঞ্চের কেবিনে অন্তরঙ্গ সময় কাটান। এরপর দুধের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে তাকে খাওয়ান। শেষে হাত-পা বেঁধে শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ লুকিয়ে রাখেন খাটের নিচে।

লঞ্চের কেবিনে শ্বাসরোধে হত্যা একাধিক নারীর সঙ্গে

শারীরিক সম্পর্কের বলি জাকির

 

ঢাকা থেকে ভোলাগামী গ্রীনলাইন-৩ লঞ্চের কেবিন থেকে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধারের ঘটনার তদন্তে নেমে এসব তথ্য জানতে পেরেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ঢাকা জেলা ইউনিট। হত্যায় জড়িত আরজুকে গতকাল মঙ্গলবার ভোরে সাভারের নবীনগর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানাতে আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে পিবিআই প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে পিবিআই ঢাকা জেলা ইউনিটের ইনচার্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খোরশেদ আলম জানান, বাচ্চু হত্যার ঘটনায় তার প্রথম স্ত্রী সুরমা আক্তার বাদী হয়ে গত ৩১ জুলাই দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। তিনি এজাহারে উল্লেখ করেন, বাচ্চু ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে দ্বিতীয় বিয়ে করেন।

এরপর তিনি কিছুদিন দ্বিতীয় স্ত্রী আরজুর সঙ্গে থাকেন। পরে তাদের বিচ্ছেদ হয়। গত ২৯ জুলাই সকাল ৭টার দিকে তিনি লঞ্চে বাড়িতে আসবেন বলে জানান। সেদিন স্বামীর ফোনে একাধিকবার কল দিয়ে তা বন্ধ পান সুরমা। এতে সন্দেহ হলে তিনি বিষয়টি আত্মীয়-স্বজনকে জানান। সবাই খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে সদরঘাট নৌ থানার মাধ্যমে সংবাদ পান, লঞ্চের কেবিনে খাটের নিচে তার লাশ পাওয়া গেছে।  লঞ্চের স্টাফদের মাধ্যমে জানতে পারেন, কেবিনে তার সঙ্গে কফি কালারের বোরকা পরা একটি মেয়ে ছিল। মৃত্যুর পর তাকে আর কোথাও দেখা যায়নি। মামলাটি  পিবিআইর সিডিউলভুক্ত হওয়ায় পিবিআই ঢাকা জেলা স্ব-উদ্যোগে তদন্ত অধিগ্রহণ করে। এরপর পিবিআই প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমার মজুমদারের তত্ত্বাবধান ও দিকনির্দেশনায় এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আনোয়ার হোসেন।

তিনি জানান, বিয়ের পর বাচ্চু তার দ্বিতীয় স্ত্রী আরজুকেও জিনের বাদশা সেজে প্রতারণার কাজে ব্যবহার করেন এবং তাকেও এ কাজে পারদর্শী করে তোলেন। এরমধ্যেই তিনি একাধিক নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। জীনের বাদশা পরিচয়ে প্রতারণার মাধ্যমে বাচ্চু যে অর্থ পেতেন তা ব্যয় করতেন অনৈতিক কাজে। এসব নিয়ে মতবিরোধের জের ধরে তাদের বিচ্ছেদ হয়। তবে তালাক দেওয়ার পরও বাচ্চু তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক বজায় রাখেন।

এ পর্যায়ে একাধিক নারীর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি আরজুর কাছে ধরা পরে। তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে সুযোগ খুঁজতে থাকেন। হত্যাকাণ্ডের আগের দিন রাতেও বাচ্চু তার এক পরকীয়া প্রেমিকার সঙ্গে রাত কাটান। এরপরই আরজু তার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেন। তিনি জানতে পারেন বাচ্চু গ্রামের বাড়ি ভোলায় যাবেন। একই এলাকায় দু’জনের বাড়ি হওয়ায় তিনিও সঙ্গে যেতে চান। এরপর বাচ্চু লঞ্চের একটি স্টাফ কেবিন ভাড়া করে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ওঠেন। কেবিন ভাড়া নেওয়ার সময় লঞ্চ কর্তৃপক্ষ তাদের কোনো তথ্য রাখেনি। লঞ্চে ওঠা থেকে নামা পর্যন্ত আরজুর বোরকা পরে ও মুখ ঢেকে ছিলেন।

আরজুকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পিবিআই জানায়, ঘটনার দিন সকাল ৮টার দিকে তারা সদরঘাট থেকে ভোলার ইলিশা যাওয়ার জন্য লঞ্চে ওঠেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী আরজু দুধের সঙ্গে পাঁচটি ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে নেন। লঞ্চের কেবিনে অন্তরঙ্গ সময় কাটানোর পর সেই দুধ বাচ্চুকে খাওয়ানো হয়। কিছুক্ষণের মধ্যে তিনি অচেতন হয়ে পড়লে ওড়না দিয়ে তার হাত-পা বেঁধে অন্য একটি ওড়না দিয়ে তার শ্বাসরোধ করেন আরজু। পরে লাশ কেবিনের স্টিলের খাটের নিচে লুকিয়ে রাখেন। লঞ্চটি ভোলার ইলিশা ঘাটে পৌঁছালে তিনি নেমে যান। সেদিন দুপুর আড়াইটায় লঞ্চটি ইলিশা থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয়। লঞ্চের স্টাফরা কেবিনটি তিন বাচ্চাসহ দুই নারীকে ভাড়া দেন। লঞ্চটি ঘাট ছেড়ে আসার প্রায় দুই ঘণ্টা পর একটি বাচ্চা খাটের নিচে ঢুকে পড়ে। তখন নারীদের একজন বাচ্চাটিকে বের করে আনতে গিয়ে লাশ দেখে চিৎকার শুরু করেন।




সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

প্রধান উপদেষ্টা : প্রফেসর শাহ্ সাজেদা ।

উপদেষ্টা সম্পাদক : সৈয়দ এহছান আলী রনি ।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মামুনুর রশীদ নোমানী ।

যোগাযোগ: আদালত পাড়া সদর রোড,বরিশাল।

ইমেইল: [email protected]

মোবাইল: 01713799669/01711358963

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি।
© বরিশাল খবর সম্পাদক মামুনুর রশীদ নোমানী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

  নলছিটির মগড় ইউনিয়নবাসীর সেবা করতে চান মোঃ সাইফুজ্জামান সুমন তালুকদার   প্রাণ ফিরছে বরিশাল নগরীর ৭ খালে   বেতারের সঙ্গীত শিল্পী (পল্লীগীতি) হিসেবে মনোনীত হলেন অ্যাড: জুয়েল   বরিশালের মাহমুদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্বেচ্ছাচারী প্রধান শিক্ষিকা স্ট্যান্ড-রিলিজ !   বরিশাল ল’ কলেজে দুর্নীতি, উন্নয়নের নামে অর্থ আত্মসাৎ   অনিয়ম দুর্নীতির আতুরঘর বরিশাল বেতার : চলছে জোড়াতালি দিয়ে   বরিশাল ডাকঘরের ক্যাশিয়ার নুরুল কবিরের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ   দেড় লাখ মামলা মাথায় বিএনপির ৫০ লাখ নেতাকর্মীর   আলু শুন্য বরিশালের পাইকারী বাজার   বাংলাদেশে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাধাদানকারীদের ওপর মার্কিন ভিসানীতি শুরু   মাদারীপুরের হিমাগারে ৩০ হাজার বস্তা, বাজারে আলুর কৃত্রিম সংকট   যুদ্ধ স্যাংশন সংঘাতের পথ এড়াতে প্রধানমন্ত্রীর আহবান   Mamunur Rashid Nomani charged with violating Bangladesh’s Digital Security Act   ঝালকাঠিতে রোহিঙ্গা আটক এসেছিলো ভোটার হওয়ার জন্য   সাঈদুর রহমান রিমনকে নিয়ে দিলিপ কুচক্র মহলের ষড়যন্ত্রের জবাব!   বাবুগঞ্জে ইজিবাইক ছিনতাই চক্রের চার সদস্য আটক   নলছিটিতে ৫০তম গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ   অপরাধ ঘটাতে আগাম ‘রেকি‘ করে গেছেন তারা!   ঝালকাঠি কারাগার: কু-প্রস্তাবের দাম দশ লাখ টাকা! জেলার বহাল তবিয়তে   রাজাপুর সাব-রেজিস্ট্রার অফিস দুর্নীতির আখড়া