পিরোজপুর সদর উপজেলায় এক এসএসসি পরীক্ষার্থী রাতে সন্তান প্রসব করে সকালে পরীক্ষা হলে হাজির পরীক্ষা দিয়েছেন। এ ঘটনায় ওই পরীক্ষার্থীর সাহসিকতার গুণগান ছড়িয়ে পড়ছে এলাকাজুড়ে।
প্রসূতির নাম হাসিনা আক্তার। তিনি দূর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. হালিম হোসেন হাওলাদারের মেয়ে। বুধবার রাতে তার কোলজুড়ে আসে ফুটফুটে এক ছেলে সন্তান। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়েছে এসএসসি পরীক্ষা। রাতে সন্তান জন্মদানের পর সকালে যথাসময়ে বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষা দিতে বসে হাসিনা।
স্থানীয় দূর্গাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে সে। তার পরীক্ষা কেন্দ্র পড়েছে পিরোজপুর সরকারি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে।
দূর্গাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ বিষয়ে বলেন, হাসিনা আক্তার তার স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। সে অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রী।
স্থানীয়রা বলেন, সন্তান জন্ম দেওয়ার পর আবার পরীক্ষায় অংশ নেওয়াটা সাহসিকতার। সবাই এমনটা করতে পারে না। হাসিনার ভালো পরীক্ষা দেবে বলেও আশা তাদের।
প্রসূতির মা সাজেদা বেগম বলেন, ২০২১ সালে নাজিরপুর উপজেলার শ্রীরামকাঠী ইউনিয়নের ভীমকাঠী গ্রামের চাঁন মিয়া ফকিরের ছেলে মো. রাহেন ফকিরের সঙ্গে বিয়ে হয় হাসিনার। গর্ভবতী ও এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী হওয়ায় সে হাসিনা বাবার বাড়ি আসে। বুধবার রাতে প্রসব ব্যথা ওঠে হাসিনার। পরে ঘরেই স্বাভাবিকভাবে ছেলে সন্তানের জন্ম দেয় সে। সাজেদা আরও জানান, তার নাতির নাম রাখা হয়েছে জায়ান। তার মেয়ে পড়াশোনায় অত্যন্ত আগ্রহী ও মেধাবী। তাদের জামাতা রাহেনও হাসিনার পড়াশোনার ব্যাপারে আন্তরিক। সন্তান জন্ম দেওয়ার পর কষ্ট হলেও হাসিনা পরীক্ষা দিতে গেছে, কারণ সে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে বড় কিছু করতে চায়। তিনি সবার কাছে মেয়ে ও নাতির জন্য দোয়া চেয়েছেন।