অনলাইন ডেস্কঃ
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংকটের কারণে গণপরিবহন বন্ধ থাকার পরও গত মে মাসে সারাদেশে ২১৩টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ২৯২ জন এবং আহত ২৬১ জন। নিহতের মধ্যে ৩৯ জন নারী এবং ২৪ জন শিশু।বৃহস্পতিবার (৪ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।এপ্রিল মাসের তুলনায় মে মাসে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা ও প্রাণহানি উভয়ই বেড়েছে। এপ্রিল মাসে ১১৯ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৩৮ জন নিহত এবং ১১২ জন আহত হয়েছিল। আর মে মাসের ২১৩টি দুর্ঘটনার মধ্যে মহাসড়কে ঘটেছে ৮৯টি, আঞ্চলিক সড়কে ৮৩টি এবং গ্রামের সড়কে ৪১টি ঘটনা ঘটেছে।বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দুর্ঘটনায় বেশি প্রাণহানি ঘটেছে এককভাবে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়। মে মাসে ৯৭ টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ৮৯ জন, যা মোট নিহতের ৩৩.৪৭ শতাংশ।
দুর্ঘটনায় পথচারী নিহত হয়েছেন ৫৬ জন। পরিবহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ২১ জন। দুর্ঘটনায় ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী কর্মক্ষম মানুষ নিহত হয়েছেন ১৯৬ জন। এছাড়া এই সময়ে ৯টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৩২ জন নিহত ও ১৭ জন নিখোঁজ হয়েছেন।দুর্ঘটনায় ট্রাক যাত্রী ১৯ জন, পিকআপ যাত্রী ১২ জন, প্রাইভেট কার যাত্রী ৮ জন, সিএনজি যাত্রী ১১ জন, কাভার্ডভ্যান যাত্রী ৪ জন, মাইক্রোবাস যাত্রী ৩ জন, ট্রলি যাত্রী ৫ জন, অটোরিকশা যাত্রী ২১ জন এবং নসিমন-করিমন-ভটভটি-আলমসাধু-মাহিন্দ্র ইত্যাদি স্থানীয় যানবাহনের ৬৪ জন যাত্রী নিহত হয়েছেন।নিহতদের মধ্যে ৬ জন শিক্ষক, ১ জন চিকিৎসক, ১ জন সেনা সদস্য, ১ জন পুলিশ সদস্য, ১ জন গ্রাম পুলিশ সদস্য, ১ জন ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বার, ২ জন স্থানীয় আ’লীগ নেতা, ১ জন পরিবহন শ্রমিক নেতা, ১ জন কৃষি কর্মকর্তা, ১ জন ফুটবলার (জেলা অনূর্ধ-১৯ দলের অধিনায়ক), ২ জন ইমাম, ৯ জন পোশাক শ্রমিক এবং বিভিন্ন শ্রেণির ৪৮ জন শিক্ষার্থী।৭টি জাতীয় দৈনিক, ৫টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে রাজশাহী বিভাগে। এখানে ৪৬টি দুর্ঘটনায় ৬৮ জন নিহত হয়েছেন। সবচেয়ে কম বরিশাল বিভাগে। ১৭টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২৪ জন। একক জেলা হিসেবে ময়মনসিংহে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ১২টি দুর্ঘটনায় ১৭জন নিহত। সবচেয়ে কম কুষ্টিয়ায়। ১টি দুর্ঘটনায় নিহত ১জন।সড়ক দুর্ঘটনার কারণ হিসেব ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন; বেপরোয়া গতি; চালকদের অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা; বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা; মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল; তরুণ ও যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো; জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা; দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা; বিআরটিএ’র সক্ষমতার ঘাটতি; এবং গণপরিবহণ খাতে চাঁদাবাজিকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।