শুক্রবার ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ই-পেপার   শুক্রবার ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ



মুজিব থেকে বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠায় রেণুর প্রেরণাঃ ‘কারাগারের রোজনামচা’য় বঙ্গমাতা
প্রকাশ: ১০ আগস্ট, ২০২০, ৯:০০ পূর্বাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ

মুজিব থেকে বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠায় রেণুর প্রেরণাঃ ‘কারাগারের রোজনামচা’য় বঙ্গমাতা

শেখ মুজিব থেকে বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠার পিছনে বঙ্গমাতা মুজিবের ভূমিকা ছিলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। বঙ্গবন্ধু জেলে থাকা অবস্থায় জেলে বারবার দেখা করতে গিয়ে জেলের বাইরের পরিস্থিতি জানানো থেকে শুরু করে সংসার সামলানো, নেতা কর্মীদের সাথে যোগাযোগ, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ পালন করে নিজ বাড়িতে আওয়ামী লীগের মিটিং পর্যন্ত করেছেন বঙ্গমাতা। বঙ্গমাতা মুজিবের আত্মত্যাগ বঙ্গবন্ধুকে করেছে আরো দৃঢ়, দিয়েছে লক্ষ্যে পৌছানোর প্রেরণা। বঙ্গবন্ধুর লিখে যাওয়া কারাগারের রোজনামচা বইতে বঙ্গমাতা মুজিবের কারাগারের সাক্ষাৎ নিয়ে উল্লেখিত ঘটনাবলীতে আমরা এর কিছুটা ধারণা পাই। এই প্রবন্ধে সেই অংশগুলো পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।

সময়ঃ ৯ জুন ১৯৬৬

বেগম সাহেবা ছেলেমেয়ে নিয়ে এসেছেন । হঠাৎ এল, ব্যাপার কি! আজকাল তো ১৫ দিনের কমে দেখা করতে দেয় না। আগে যখন জেলে এসেছি তখন দেখা করতে অনুমতি দিত। কোনো খারাপ খবর কিনা? তাড়াতাড়ি রওয়ানা হলাম জেল গেটের দিকে। প্রায় দুই তিন শত ছেলে-কয়েদির কাপড় পরে, ফাইল করে বসে আছে। আমাকে দেখে তারা দাড়িয়ে গেল। আমাকে হাত তুলে এক সাথে অভিবাদন জানাল, আমিও তাদের অভিনন্দন দিলাম। দাঁড়ানোর হুকুম নাই, জেলের আইনে। তাই গেটের দিকে চললাম । শুভেচ্ছা জানিয়ে চললাম।

ছোট্ট ছেলেটা পূর্বের মতোই ‘আব্বা’ আব্বা বলে চিৎকার করে উঠল । আমি তাকে কোলে নিলাম। আদর করলাম। বাচ্চা মেয়েটি দরজার কাছে দাঁড়াইয়া ছিল তাকেও আদর করলাম। জামালের জ্বর, দূরেই বসেছিল, কাছে ডেকে আনলাম। বড় মেয়ে, বড় ছেলে, খোকা, আমার স্ত্রী একে অন্যের দিকে চাইছে, কি যেন বলতে চায় বলতে পারছে না। আমি বললাম এত তাড়াতাড়ি দেখা করার অনুমতি দিল-ব্যাপার কি? আমার স্ত্রী আস্তে আস্তে বলল যে,”টেলিগ্রাম এসেছে মার শরীর খুব খারাপ ” বুঝতে আর বাকি রইল না, মার শরীর বেশি খারাপ না হলে আমার আব্বা কোনোদিন টেলিগ্রাম করতেন না। তিনি খুব বিচক্ষণ ও বুদ্ধিমান লোক। মনটা আমার খুবই খারাপ হয়ে পড়ল। ছেলে-মেয়েদের বুঝতে দিলাম না যে আমি খুব মুষড়ে পড়েছি। কিছু সময় বসলাম, কোনো কথাই আমার আর ভাল লাগল না। বেগম সাহেবার কাছ থেকে একটা পান খেলাম। ঢাকার ও অন্যান্য স্থানের অবস্থা যে খুব খারাপ বুঝতে বাকি রইল না। আমার স্ত্রী বললো প্যারোলের জন্য দরখাস্ত করতে। আমি বললাম “কয়েকদিনের জন্য যেয়ে মার শরীর যদি ভাল না হয় তাঁকে ফেলে আবার জেলে ফিরে আসলে তার হার্টফেল করে যেতে পারে। মুক্তি দেয় যাব, নতুবা নয়। কাউকে সত্বর পাঠাইয়া দেও, নাসেরকে খবর দেও বাড়ি যেতে।

সময়ঃ ১৫ জুন ১৯৬৬
সাড়ে চারটায় জেলের লোক এসে বলল-চলুন আপনার দেখা আসিয়াছে, আপনার স্ত্রী ও ছেলেমেয়ে বসে আছে জেল অফিসে। তাড়াতাড়ি রওয়ানা করলাম। দূর থেকে দেখি রাসেল, রেহানা ও হাচিনা চেয়ে আছে আমার রাস্তার দিকে। ১৮ মাসের রাসেল জেল অফিসে এসে একটুও হাসে না-যে পর্যন্ত আমাকে না দেখে। দেখলাম দূর থেকে পূর্বের মতোই আব্বা আব্বা’ বলে চিৎকার করছে। জেল গেট দিয়ে একটা মাল বােঝাই ট্রাক ঢুকেছিল। আমি তাই জানালায় দাড়াইয়া ওকে আদর করলাম। একটু পরেই ভিতরে যেতেই রাসেল আমার গলা ধরে হেসে দিল। ওরা বলল আমি না আসা পর্যন্ত শুধু জানালার দিকে চেয়ে থাকে, বলে ‘আব্বার বাড়ি। এখন ওর ধারণা হয়েছে এটা ওর আব্বার বাড়ি। যাবার সময় হলে ওকে ফাকি দিতে হয়। ছোট মেয়েটার শুধু একটা আবদার। সে আমার কাছে থাকবে। আর কেমন করে কোথায় থাকি তা দেখবে। সে বলে, থেকে যেতে রাজি আছি। রেণু বলল, মাকে আমার ছোট ভাই খুলনা নিয়ে গেছে । একটু ভালর দিকে। ঢাকা আনা সম্ভব হবে না সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত। হাচিনার কলেজ বন্ধ, তাই খুলনা যেতে চায়। বললাম, যেতে দাও মা’র একটু খেদমত হবে। জামালের শরীর খারাপ, গলা ফুলে রয়েছে। এ বড় খারাপ ব্যারাম। রেণুকে তাই বললাম, ডাক্তার দেখাইও। স্কুলে যেতে পারবে না। এছাড়াও আরো অনেক কথা হলো।

রাশেদ মোশাররফ ঢাকা শহর আওয়ামী লীগের সহ-সম্পাদক। আমার বাড়ির কাছে থাকে। তাঁহার বিবাহের তারিখ ১২ই জুন ঠিক ছিলো, বিবাহের কার্ডও ছাপান হয়েছিল। তাকে গ্রেপ্তার করে জেলে আনা হয়েছে। রেণু দুখে করে বলল, সে তো বিবাহ নিয়াই ব্যস্ত ছিল, তাকে যে কেন ধরে এনেছে। এদের গ্রেপ্তারের কোনো তাল নাই। ছোট ছোট দুধের বাচ্চাদের ধরে নিয়ে এসেছে রাস্তা থেকে রাতভর মা মা করে কাদে। একজন মহিলা, এক ভদ্রলোকের বাড়িতে কাজ করে। এরই মাধ্যমে সংসার চালায়, বড় গরিব। তার ছয় বৎসরের ছেলেকে নিয়ে চলেছে সেই বাড়িতে কাজ করতে। গাড়ি থামাইয়া পুলিশ ডাক দেয়, এই ছেলে শোন। ছেলেটি এগিয়ে গেছে, তাকেও গাড়িতে উঠাইয়া নিয়েছে। মহিলাটি চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করেছে কে কার কথা শোনে। একেবারে জেলে নিয়ে এসেছে। এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে মোনায়েম খান সাহেবের দৌলতে।

প্রায় এক ঘণ্টা রেণু এবং আমার ছেলেমেয়েদের সঙ্গে ছিলাম। সংসারের ছোটখাট আলাপ। ওদের বলেছি আর কোনো কষ্ট নাই; একান্ত সঙ্গীবিহীন আছি। মানিক ভাইকে বলতে বললাম, তিনি যেন চীফ সেক্রেটারিকে বলেন কেন এই অত্যাচার? আমার স্ত্রী বলল, মানিক ভাইর সাথে দেখা করব। সাক্ষাতের সময় শেষ হয়ে গেছে আর দেরি করা চলে না। তাই বিদায় দিলাম ওদের। রাসেলকে গাড়ির কথা বলে কামালের কাছে দিয়ে সরে এলাম।

কে বুঝবে আমাদের মতো রাজনৈতিক বন্দিদের বুকের ব্যথা। আমার ছেলেমেয়েদের তো থাকা খাওয়ার চিন্তা করতে হবে না। এমন অনেক লোক আছে যাদের স্ত্রীদের ভিক্ষা করে, পরের বাড়ি খেটে, এমনকি ইজ্জত দিয়েও সংসার চালাতে হয়েছে। জীবনে অনেক রাজবন্দির স্ত্রী বা ছেলেমেয়ের চিঠি পড়ার সুযোগ আমার হয়েছে । সে-করুণ কাহিনী কল্পনা করতেও ভয় হয়।

সময়ঃ ২৯ জুন ১৯৬৬
জমাদার সাহেব এসে বললেন, চলেন আপনার, সাক্ষাৎ’। তাড়াতাড়ি যেয়ে দেখি আমার স্ত্রী আসে নাই। তার শরীর অসুস্থ কয়েকদিন ধরে। ছেলেমেয়েরা এসেছে। ছোট ছেলেটা আমাকে পেয়ে কিছু সময় ওর মায়ের কথা ভুলে গেল। ছেলেমেয়েরা ওদের লেখাপড়ার কথা বলল। আমার মা খুলনায় আছে, অনেকটা ভাল। ছোটখাট অনেক বিষয় বলল। অনেক আবদার। আমার কষ্ট হয় কিনা! ছোট মেয়েটা আমার কাছে কাছে থাকে, যাতে ওকে আমি আদর করি। বড় মেয়েটা বলছে, আব্বার চুলগুলি একেবারে পেকে গেল। বড় ছেলে কিছু বলে না, চুপ করে থাকে। লজ্জা পায়। আমার কোম্পানির ম্যানেজার এসেছিল, ব্যবসা সম্বন্ধে আলোচনা করতে। বললাম যে, যারা আমাদের ব্যবসা দেয় তাদের আমার কথা বলতে, নিশ্চয়ই ব্যবসা দিবে। ছোট ছেলেটার, তার মার কথা মনে পড়েছে। তাড়াতাড়ি বললাম, তোমরা যাও না হলে ও কাঁদবে।

ছেলেমেয়েরা চলে গেল । দেখলাম ওরা যেতেছে। মনে পড়ল নিশ্চয়ই রেণুর শরীর বেশি খারাপ নতুবা আসতো। সামান্য অসুস্থতায় তাকে ঘরে রাখতে পারত না। জেলের ভিতর চলে এলাম আমার জায়গায়। আমি তো একা আছি, এই নির্জন ইটের ঘরে। আমাকে একলাই থাকতে হবে । চিন্তা তো মনে আসেই।

সময়ঃ ৬ই জুলাই ১৯৬৬

বিকালে চা খাবার সময় সিকিউরিটি জমাদার সাহেবকে আসতে দেখে ভাবলাম বোধহয় বেগম সাহেবা এসেছেন। গত তারিখে আসতে পারেন নাই অসুস্থতার জন্য। ‘চলিয়ে, বেগম সাহেবা আয়া।’ আমি কি আর দেরি করি? তাড়াতাড়ি পাঞ্জাবি পরেই হাঁটা দিলাম গেটের দিকে। সেই পুরান দৃশ্য। রাসেল হাচিনার কোলে। আমাকে দেখে বলছে, আব্বা! আমি যেতেই কোলে এল। কে কে মেরেছে নালিশ হলো। খরগোশ কিভাবে মারা গেছে, কিভাবে দাঁড়াইয়া থাকে দেখালো। রেণুকে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘খুব জ্বরে ভুগেছ। এখন কেমন আছ?’

‘পায়ে এখনও ব্যথা। তবে জ্বর এখন ভালই।’

বললাম, ‘ঠান্ডা লাগাইও না।’

আমার চারটা ছেলে মেয়ে স্কুল থেকে এসেছে। ছেলে দুইটাই বাসায় ফিরেছে। মেয়ে দুইটার একজন কলেজ থেকে, আর একজন স্কুল থেকে সোজা এসেছে। ছোট ছেলেটা রাস্তায় দাঁড়াইয়া থাকে কখন আমি গেটে আসবো।

ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া, মা, আব্বা, ভাইবোনদের খোঁজ-খবর নিলাম । মা ঢাকা আসতে চান না। এতদূর আসতে তাঁর কষ্ট হবে—কারণ অসুস্থ। আবার বয়সও হয়েছে। আব্বা বাড়িতে। তাঁরও কষ্ট হয় সকলের চেয়ে বেশি। একলা আছেন। আজ অনেক সময় কথা বললাম। সবই আমাদের সাংসারিক খবর এবং আমি কিভাবে জেলে থাকি তার বিষয়। বাচ্চারা দেখতে চায় কোথায় থাকি আমি। বললাম, ‘বড় হও, মানুষ হও দেখতে পারবা।’

সময় হয়ে গেছে, ‘যেতে দিতে হবে’। ফিরে এলাম আমার জায়গায়। হরলিক্স ও আম নিয়ে এসেছে। জিজ্ঞাসা করলাম, ‘আমার জন্য না এনে বাচ্চাদের কিনে দেও তো।’

সন্ধ্যা হয়ে এল। ওদের বিদায় দিয়ে আমার স্থানে আমি ফিরে এলাম। মনে মনে বললাম, আমার জন্য চিন্তা করে লাভ কি? তোমরা সুখে থাক। আমি যে পথ বেছে নিয়েছি সেটা কষ্টের পথ।

সময়ঃ ১২ই জুলাই ১৯৬৬

আমার বেগম ও বাচ্চারা এল। হঠাৎ দেখা পাওয়ার অনুমতি পেল কি করে? আমি কিছু সময় বাচ্চাদের সাথে আলাপ করলাম। মাকে আব্বা খুলনা থেকে বাড়িতে নিয়ে গিয়েছেন। অনেকটা ভাল এখন, তবে আপাততঃ ঢাকা আসবে না। রেণু বলল, কামাল খুব লেখাপড়া আরম্ভ করেছে। আগামীবারে ম্যাট্রিক দিবে। সকলকে মন দিয়ে পড়তে বলে বিদায় নিলাম । বেশি সময় কথা বলার উপায় নাই- ছোট্ট কামরা জেল অফিসের, বিজলি পাখা বন্ধ। ছোট্ট বাচ্চাটা গরমে কষ্ট পাচ্ছে। ছোট মেয়েটা স্কুল থেকে এসেছে। বিদায় নিয়ে রওয়ানা হলে গেটে দাঁড়াইয়া ওদের বিদায় দিলাম। গেট পার হয়েও রাসেল হাত তুলে আমার কাছ থেকে বিদায় নিল। বোধ হয় বুঝে গিয়েছে এটা ওর বাবার বাড়ি, জীবনভর এখানেই থাকবে!

অনেক খাবার নিয়ে এসেছিল। সন্ধ্যায় কিছু কিছু বন্ধু-বান্ধবদের দিলাম। আবার রাতেও খাবার সময় আশে পাশে কিছু দিলাম, কারণ নষ্ট হয়ে যাবে।

সময়ঃ ২৬শে জুলাই ১৯৬৬

আজ নিশ্চয়ই ‘দেখা’। ছেলেমেয়ে নিয়ে রেণু আসবে যদি দয়া করে অনুমতি দেয়। পনের দিনতো হতে চলল, দিন কি কাটতে চায়, বার বার ঘড়ি দেখি কখন চারটা বাজবে। দুপুরটা তো কোনোমতে কাগজ নিয়ে চলে যায় । এত দুর্বল হয়ে পড়েছি যে, হাটতে ইচ্ছা আজ আর হয় না। সাড়ে চারটায় আমাকে নিতে আসল সিপাহি সাহেব। দূর থেকেই ছোট্ট বাচ্চাটা আব্বা, আব্বা’ করে ডাকতে শুরু করে। এইটাই আমাকে বেশি আঘাত দেয়। দুইজন করে অফিসার পাঠায়। এরা জানে আমার স্ত্রী ও ছেলেমেয়েরা রাজনীতির ধার ধারে না। এদের সাথে আলোচনা ঘর-সংসারের। মা কিছুটা ভাল আছেন, আব্বা খুলনায় গেছেন, আমার ছোট ভাইয়ের ছেলেমেয়েরা কেমন, সংসার কেমন চলছে-অর্থাভাব হবে কি না? উপার্জন কম করি নাই, তবে খরচ করে ফেলেছি । এই সমস্ত ঘরোয়া কথাবার্তা। বেচারা কর্মচারীরা বোধহয় লজ্জাও পায়। কি শুনবে বসে বসে। রেণুকে বললাম, মোটা হয়ে চলেছি, কি যে করি! অনেক খাবার নিয়ে আসে। কি যে করব বুঝি না। রেণু আমার বড় মেয়ের বিবাহের প্রস্তাব এনেছে, তাই বলতে শুরু করল । আমার মতামত চায়। বললাম, ‘জেল থেকে কি মতামত দেব; আর ও পড়তেছে পড়ুক, আইএ, বিএ পাশ করুক। তারপরে দেখা যাবে।’ রেণু ব্যস্ত হয়ে পড়েছে । কতদিন যে আমাকে রাখবে কি করে বলব! মনে হয় অনেকদিন এরা আমায় রাখবে। আর আমিও প্রস্তুত হয়ে আছি । বড় কারাগার থেকে ছোট কারাগার, এই তো পার্থক্য।

সময়ঃ ৩রা আগস্ট ১৯৬৬

আজ অনেকক্ষণ হাঁটাচলা করলাম। বিকালে চা খেতে বসেছি, দেখি সিকিউরিটি ব্রাঞ্চের সিপাহি সাহেব এসেছে আমাকে জেলগেটে নিতে। দেখা’ এসেছে-জহিরুদ্দিন সাহেব, আবুল সাহেব ও আমার স্ত্রী। ছোট তিনটা বাচ্চাদের নিয়ে এসেছে। মামলা সম্বন্ধে আলোচনা হলো কিছুটা। আইবি অফিসারদের সামনেই আলোচনা করতে হবে। দুইজন ইন্সপেক্টর দিয়েছে। সামনেই বসে থাকে কোনো কিছু আলাপ করার উপায় নাই। কিভাবে মামলা চালাব তাহাই আইবি জানতে চায়। আর আমরা তা বলব কেন? বললাম, নকল (certified copy) নিতে। নকল না দিলে মামলা করব না। বলে দিব, যাহা ইচ্ছা করুক। কাগজপত্র না পেলে মামলা চালাইব কি করে ? সালাম সাহেবও আসবেন । শুনলাম অনেক উকিল আসবেন ৮ তারিখে জেল গেটে মামলা করার জন্য। রেণুকে বললাম, কিছু টাকা দিতে নকল নেওয়ার জন্য। ছোট্ট ছেলেটা আমার কানে কানে কথা বলে। একুশ মাস বয়স। বললাম, আমার কানে কানে কথা বললে আইবি নারাজ হবে, ভাববে একুশ মাসের ছেলের সাথে রাজনীতি নিয়ে কানে কানে কথা বলছি। সকলেই হেসে উঠল। এটা রাসেলের একটা খেলা, কানের কাছে মুখ নিয়ে চুপ করে থাকে আর হাসে। আজ আমার কাছ থেকে ফিরে যাবার চায় না। ওর মায়ের কাছে দিয়ে ভিতরে চলে আসলাম। ছোট্ট মেয়েটা-রেহানা আমার কাছ থেকে সরতে চায় না, তাই তাকে একটু আদর করলাম। মামলায় যে কি হবে জানি না। তবে সরকারের উৎসাহ একটু বেশি মনে হয়। অনেকগুলি মামলাই তো আছে। জেল থেকে কবে যে বের হতে পারব জানি না। সন্ধ্যার একটু পূর্বে আসলাম, আমার সেই পুরানা বাড়িতে।

সময়ঃ ৭ই সেপ্টেম্বর ১৯৬৬

রেণু দেখা করতে এসেছিল। রেহানার জ্বর, সে আসে নাই। রাসেল জ্বর নিয়ে এসেছিল। হাচিনার বিবাহের প্রস্তাব এসেছে। রেণু ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। ছেলেটাকে পছন্দও করেছে। ছেলেটা সিএসপি। আমি রাজবন্দি হিসেবে বন্দি আছি জেনেও সরকারি কর্মচারী হয়েও আমার মেয়েকে বিবাহ করার জন্য প্রস্তাব দিয়েছে। নিশ্চয়ই তাহার চরিত্রবল আছে। মেয়েটা এখন বিবাহ করতে রাজি নয়। কারণ আমি জেলে, আর বিএ পাশ করতে চায়।

আমি হাচিনাকে বললাম, ‘মা আমি জেলে আছি, কতদিন থাকতে হবে, কিছুই ঠিক নাই। তবে মনে হয় সহজে আমাকে ছাড়বে না, কতগুলি মামলাও দিয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য ধ্বংস হয়ে চলেছে। তোমাদের আবারও কষ্ট হবে। তোমার মা যাহা বলে শুনিও।’ রেণুকে বললাম, ‘আর কি বলতে পারি?’ আবার বললাম, ‘১০ তারিখে মামলা আছে । আকরাম ও নাছেরকে পাঠাইয়া দিও। বাচ্চারা কেমন আছে জানাইও।’

সময়ঃ ১১ই জানুয়ারি ১৯৬৭

১১ তারিখে রেণু এসেছে ছেলেমেয়ে নিয়ে দেখা করতে। আগামী ১৩ই ঈদের নামাজ। ছেলেমেয়েরা ঈদের কাপড় নিবে না। ঈদ করবে না, কারণ আমি জেলে। ওদের বললাম, তোমরা ঈদ উদযাপন কর।

এই ঈদটা আমি ছেলেমেয়ে নিয়ে আমার আব্বা ও মায়ের কাছে বাড়িতেই করে থাকি। ছোট ভাই খুলনা থেকে এসেছিল আমাকে নিয়ে বাড়ি যাবে। কারণ কারও কাছে শুনেছিল ঈদের পূর্বেই আমাকে ছেড়ে দিবে। ছেলেমেয়েদের মুখে হাসি নাই। ওরা বুঝতে শিখেছে। রাসেল ছোট্ট তাই এখনও বুঝতে শিখে নাই। শরীর ভাল না, কিছুদিন ভুগেছে। দেখা করতে এলে রাসেল আমাকে মাঝে মাঝে ছাড়তে চায় না। ওর কাছ থেকে বিদায় নিতে কষ্ট হয়। আমিও বেশি আলাপ করতে পারলাম না শুধু বললাম, “চিন্তা করিও না। জীবনে বহু ঈদ এই কারাগারে আমাকে কাটাতে হয়েছে, আরও কত কাটাতে হয় ঠিক কি! তবে কোনো আঘাতেই আমাকে বাঁকাতে পারবে না। খোদা সহায় আছে।” ওদের কাছ থেকে বিদায় নেবার সময় রেণুকে বললাম, বাচ্চাদের সবকিছু কিনে দিও । ভাল করে ঈদ করিও, না হলে ওদের মন ছোট হয়ে যাবে।

সময়ঃ ১৪ই জানুয়ারি ১৯৬৭

১৪ তারিখ রেণু বিশেষ অনুমতি নিয়ে আমার সাথে দেখা করতে এসেছে। ঈদের জন্য এই অনুমতি দিয়েছে। বাইরে সকলেই ১৩ তারিখে ঈদ করেছে। ঈদের আনন্দ তো বন্দিদের থাকতে পারে না। তারপর আবার রেণু এক দুঃখের সংবাদ আমাকে জানাল। আমার ফুফাতো ভাই, ক্যান্সার হয়েছিল, মারা গিয়েছে। মাদারীপুরে বাড়ি-ছোট বেলায় আমার ফুফা ও ফুফু মারা যান, আমার আব্বাই ওকে লেখাপড়া শিখিয়েছেন, ম্যাট্রিক পর্যন্ত আমরা এক সাথেই ছিলাম। সিভিল সাপ্লাই অফিসে সামান্য চাকরি করত। কয়েকটা ছেলেমেয়ে রেখে গিয়েছে, জমিজমা যা ছিল প্রায়ই আড়িয়াল খাঁ নদী গ্রাস করে নিয়েছে। কি করে এদের চলবে? ছেলেমেয়েগুলি ছোট ছোট।

সময় কেটে গেল, রেনু ছেলেমেয়ে নিয়ে চলে গেল। আমি এসে শুয়ে পড়লাম, আর ভাবলাম এই তো দুনিয়া!

সময়ঃ ১৪ই এপ্রিল ১৯৬৭

১৪ তারিখ ১৫ দিন পর ছেলেমেয়েদের সাক্ষাৎ পেলাম। জেল গেটে যখন উপস্থিত হলাম ছোট ছেলেটা আজ আর বাইরে এসে দাড়াইয়া নাই দেখে একটু আশ্চর্যই হলাম। আমি যখন রুমের ভিতর যেয়ে ওকে কোলে করলাম আমার গলা ধরে ‘আব্বা’ ‘আব্বা’ করে কয়েকবার ডাক দিয়ে ওর মার কোলে যেয়ে ‘আব্বা’ ‘আব্বা’ করে ডাকতে শুরু করল। ওর মাকে ‘আব্বা’ বলে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ‘ব্যাপার কি? ওর মা বলল, “বাড়িতে ‘আব্বা’ ‘আব্বা’ করে কাঁদে তাই ওকে বলেছি আমাকে ‘আব্বা’ বলে ডাকতে। রাসেল ‘আব্বা আব্বা’ বলে ডাকতে লাগল । যেই আমি জবাব দেই সেই ওর মার গলা ধরে বলে, ‘তুমি আমার আব্বা।’ আমার উপর অভিমান করেছে বলে মনে হয়। এখন আর বিদায়ের সময় আমাকে নিয়ে যেতে চায় না।

এক ঘন্টা সময়। সংসারের কথা, ছেলেমেয়ের লেখাপড়া, আব্বা মা’র শরীরের অবস্থা আলোচনা করতে করতে চলে যায়। কোম্পানী আজও আমার প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা দেয় নাই, তাই একটু অসুবিধা হতে চলেছে বলে রেণু বলল। ডিসেম্বর মাসে আমি চাকরী ছেড়ে দিয়েছি-চারমাস হয়ে গেল আজও টাকা দিল না। আমি বললাম, জেল থেকে টেলিগ্রাম করব। প্রথম যদি না দেয় তবে অন্য পন্থা অবলম্বন করব। আমার টাকা তাদের দিতেই হবে। কোনোমতে চালাইয়া নিয়ে যাও। বাড়ির থেকে চাউল আসবে, নিজের বাড়ি, ব্যাঙ্কেও কিছু টাকা আছে, বছর খানেক ভালভাবেই চলবে, তারপর দেখা যাবে। আমার যথেষ্ট বন্ধু আছে যারা কিছু টাকা ধার দিতে কৃপণতা করবে না। “যদি বেশি অসুবিধা হয় নিজের বাড়ি ভাড়া দিয়ে ছোট বাড়ি একটা ভাড়া করে নিব”, রেণু বলল। সরকার যদি ব্যবসা করতে না দেয় তবে বাড়িতে যে সম্পত্তি আমি পেয়েছি আব্বার, মায়ের ও রেণুর তাতে আমার সংসার ভালভাবে চলে যাবে। রেণু বলল, “চিন্তা তোমার করতে হবে না।” সত্যই আমি কোনোদিন চিন্তা বাইরেও করতাম না, সংসারের ধার আমি খুব কম ধারি।’

সময়ঃ ২৮শে এপ্রিল ১৯৬৭

বহুদিন পরে ছেলেমেয়েদের ও রেণুর সাথে প্রাণ খুলে কথা বললাম। প্রায় দেড় ঘণ্টা। ঘর সংসার, বাড়ির কথা আরও অনেক কিছু । আমার শাস্তি হয়েছে বলে একটুও ভীত হয় নাই, মনে হলো পূর্বেই এরা বুঝতে পেরেছিল । রেণু বলল, পূর্বেই সে জানতো যে আমাকে সাজা দিবে। দেখে খুশিই হলাম। ছেলেমেয়েরা একটু দুঃখ পেয়েছে বলে মনে হলো, তবে হাবভাবে প্রকাশ করতে চাইছে না। বললাম, ‘তোমরা মন দিয়ে লেখাপড়া শিখ, আমার কতদিন থাকতে হয় জানি না। তবে অনেকদিন আরও থাকতে হবে বলে মনে হয়। আর্থিক অসুবিধা খুব বেশি হবে না, তোমার মা চালাইয়া দিবে। কিছু ব্যবসাও আছে। আর বাড়ির সম্পত্তিও আছে। আমি তো সারা জীবন বাইরে বাইরে অথবা জেলে জেলে কাটাইয়াছি তোমার মা’ই সংসার চালাইয়াছে। তোমরা মানুষ হও।’ ছোট মেয়েটা বলল, ‘আব্বা এক বৎসর হয়ে গেল।’ আমি ওকে আদর করলাম, চুমা দিলাম। আর বললাম, ‘আরও কত বৎসর যায় ঠিক কি?

আপীল করবার কথা বললাম। আর নোয়াখালী, সিলেট, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও পাবনার মামলাগুলির কাগজপত্র আনাতে এবং হাইকোর্টে মামলা করতে বললাম যাতে সকল মামলা ঢাকায় আনা হয় । জেলে বসেই নিম্ন আদালতের বিচারগুলি হয়ে যায়। সবই বক্তৃতার মামলা।

রেণু শুনল। এখন যাহা পাই একলার পাক করে খাওয়া কষ্টকর। আমাকে বলল, কিছু প্রয়োজন আছে কিনা? বললাম, দেখা যাক কি হয় তারপর দরকার হলে জানাব। রাসেল একবার আমার কোলে, একবার তার মার কোলে, একবার টেবিলের উপরে উঠে বসে। আবার মাঝে মাঝে আপন মনেই এদিক ওদিক হাঁটাচলা করে । বড় দুষ্ট হয়েছে, রেহানাকে খুব মারে। রেহানা বলল, ‘আব্বা দেখেন আমার মুখখানা কি করেছে রাসেল মেরে।’ আমি ওকে বললাম, ‘তুমি রেহানাকে মার?’ রাসেল বলল, ‘হ্যা মারি।’ বললাম, ‘না আব্বা আর মেরো না।’ উত্তর দিল, ‘মারবো।’ কথা একটাও মুখে রাখে না। জামাল বলল, ‘আব্বা আমি এখন লেখাপড়া করি।’ বললাম, ‘তুমি আমার ভাল ছেলে মন দিয়ে পড়িও।’ সন্ধ্যা হয়ে এলে ছেলেমেয়েদের চুমা দিয়ে ও রেণুকে বিদায় দিলাম । বললাম, ভাবিও না অনেক কষ্ট আছে। প্রস্তুত হয়ে থাকিও।

সময়ঃ ১৭ই মে ১৯৬৭

১৭ তারিখে রেণু ছেলেমেয়ে নিয়ে দেখা করতে এসেছিল । হাচিনা আইএ পরীক্ষা দিচ্ছে। হাচিনা বলল, “আব্বা প্রথম বিভাগে বোধ হয় পাশ করতে পারব না তবে দ্বিতীয় বিভাগে যাবো।” বললাম, “দুইটা পরীক্ষা বাকি আছে। মন দিয়ে পড়। দ্বিতীয় বিভাগে গেলে আমি দুঃখিত হব না, কারণ লেখাপড়া তো ঠিকমত করতে পার নাই।”

রাসেল আমাকে নিয়ে যেতে চায় বাড়িতে। এক বৎসর হয়ে গেছে জেলে এসেছি। রাসেল একটু বড় হয়ে গেছে। জামাল আসে নাই, খুলনায় গিয়াছে। শুনলাম বাইরে খুব গোলমাল আওয়ামী লীগের মধ্যে। একদল পিডিএমএ যোগদান করার পক্ষে, আর একদল ছয় দফা ছাড়া কোনো আপোষ করতে রাজি নয়। ১৯ তারিখে ওয়ার্কিং কমিটির বর্ধিত সভা। জেলা ও মহকুমার প্রেসিডেন্ট ও সম্পাদকদেরও ডাকা হয়েছে। সভা আমার বাড়িতেই করতে হবে বলে একটিং সভাপতি ও একটিং সম্পাদক রেণুকে অনুরোধ করেছে । আমি বলেছি সকলে যদি রাজি হয় তাহা হইলে করিও। আমার আপত্তি নাই ।

সময়ঃ ২৭শে মে ১৯৬৭

রেণু এসেছে ছেলেমেয়েদের নিয়ে। হাচিনা পরীক্ষা ভালই দিতেছে। রেণুর শরির ভাল না। পায়ে বেদনা, হাটতে কষ্ট হয়। ডাক্তার দেখাতে বললাম। রাসেল আমাকে পড়ে শোনাল, আড়াই বৎসরের ছেলে আমাকে বলছে, ‘৬ দফা মানতে হবে-সংগ্রাম, সংগ্রাম চলবে চলবে-পাকিস্তান জিন্দাবাদ’, ভাঙা ভাঙা করে বলে, কি মিষ্টি শোনায়! জিজ্ঞাসা করলাম, “ও শিখলো কোথা থেকে?” রেণু বলল, “বাসায় সভা হয়েছে, তখন কর্মীরা বলেছিল তাই শিখেছে।” বললাম, “আব্বা, আর তোমাদের দরকার নাই এ পথের । তোমার আব্বাই ‘পাপের’ প্রায়শ্চিত্ত করুক।” জামাল খুলনা থেকে ফিরে এসেছে। রেহানা খুলনায় যাবার জন্য অনুমতি চায়। বললাম, ‘স্কুল বন্ধ হলে যাইও।’ কামালও বাড়ি যেতে চায় আব্বাকে দেখতে। বললাম, ‘যেও।’ কোথা থেকে যে সময় কেটে যায় কি বলব? জেলে সময় কাটতে চায় না, কেবল দেখা করার সময় এক ঘণ্টা দেখতে দেখতে কেটে যায়। ছেলেমেয়েরা বিদায় নিয়ে চলে গেল, আমিও আমার চির পরিচিত দেওয়ানী ওয়ার্ডের দিকে চললাম ।

সময়ঃ ২২শে জুন ১৯৬৭

বেগম সাহেবা এসেছিলেন আমার বড় বোনকে সাথে নিয়ে। আমাকে দেখেতো কেঁদেই অস্থির। বললাম, “বুজি, তুমি কাঁদ কেন? আমার সত্যই কোনো কষ্ট হয় না। আর ভিতর বাইরে সবই সমান। যারা দেশ চালায় তাদের অনেকের মধ্যে দয়া মায়া তো দূরের কথা মনুষ্যত্বও নাই। চিন্তা করিও না।”

আমার বড় বোন ১৯ বৎসর বয়সে বিধবা হয়েছে। একটা মেয়ে কোলে আর একটা ছেলে পেটে ছিল যখন ভগ্নিপতি মারা যান। আমার ভাগ্নে আজ বড় হয়ে অর্থশালী হয়েছে, তিনটা ছেলেমেয়ে হয়েছে। আজও আমার চোখের দিকে চেয়ে কথা বলে না। দেখা করতে এসে একদিন ছোট বাচ্চার মত কেঁদেছিল আর বলেছিল, “মামা ভাববেন না। মামী ও বাচ্চাদের যত টাকা লাগবে আমি দিব।” ওর টাকাও আছে, প্রাণও আছে।

৮ই ফেব্রুয়ারি ২ বৎসরের ছেলেটা এসে বলে, “আব্বা বালি চলো”। কি উত্তর ওকে আমি দিব। ওকে ভোলাতে চেষ্টা করলাম ও তো বোঝে না আমি কারাবন্দি। ওকে বললাম, “তোমার মার বাড়ি তুমি যাও। আমি আমার বাড়ি থাকি । আবার আমাকে দেখতে এসো।” ও কি বুঝতে চায়! কি করে নিয়ে যাবে এই ছোট্ট ছেলেটা, ওর দুর্বল হাত দিয়ে মুক্ত করে এই পাষাণ প্রাচীর থেকে।

দুঃখ আমার লেগেছে। শত হলেও আমি তো মানুষ আর ওর জন্মদাতা। অন্য ছেলেমেয়েরা বুঝতে শিখেছে। কিন্তু রাসেল এখনও বুঝতে শিখে নাই তাই মাঝে মাঝে আমাকে নিয়ে যেতে চায় বাড়িতে।

সুত্র :বাংলাদেশ আওয়ামিলীগের ওয়েব সাইট




এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

প্রধান উপদেষ্টা : প্রফেসর শাহ্ সাজেদা ।

উপদেষ্টা সম্পাদক : সৈয়দ এহছান আলী রনি ।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মামুনুর রশীদ নোমানী ।

যোগাযোগ: আদালত পাড়া সদর রোড,বরিশাল।

ইমেইল: [email protected]

মোবাইল: 01713799669/01711358963

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি।
© বরিশাল খবর সম্পাদক মামুনুর রশীদ নোমানী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

  নলছিটির মগড় ইউনিয়নবাসীর সেবা করতে চান মোঃ সাইফুজ্জামান সুমন তালুকদার   প্রাণ ফিরছে বরিশাল নগরীর ৭ খালে   বেতারের সঙ্গীত শিল্পী (পল্লীগীতি) হিসেবে মনোনীত হলেন অ্যাড: জুয়েল   বরিশালের মাহমুদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্বেচ্ছাচারী প্রধান শিক্ষিকা স্ট্যান্ড-রিলিজ !   বরিশাল ল’ কলেজে দুর্নীতি, উন্নয়নের নামে অর্থ আত্মসাৎ   অনিয়ম দুর্নীতির আতুরঘর বরিশাল বেতার : চলছে জোড়াতালি দিয়ে   বরিশাল ডাকঘরের ক্যাশিয়ার নুরুল কবিরের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ   দেড় লাখ মামলা মাথায় বিএনপির ৫০ লাখ নেতাকর্মীর   আলু শুন্য বরিশালের পাইকারী বাজার   বাংলাদেশে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাধাদানকারীদের ওপর মার্কিন ভিসানীতি শুরু   মাদারীপুরের হিমাগারে ৩০ হাজার বস্তা, বাজারে আলুর কৃত্রিম সংকট   যুদ্ধ স্যাংশন সংঘাতের পথ এড়াতে প্রধানমন্ত্রীর আহবান   Mamunur Rashid Nomani charged with violating Bangladesh’s Digital Security Act   ঝালকাঠিতে রোহিঙ্গা আটক এসেছিলো ভোটার হওয়ার জন্য   সাঈদুর রহমান রিমনকে নিয়ে দিলিপ কুচক্র মহলের ষড়যন্ত্রের জবাব!   বাবুগঞ্জে ইজিবাইক ছিনতাই চক্রের চার সদস্য আটক   নলছিটিতে ৫০তম গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ   অপরাধ ঘটাতে আগাম ‘রেকি‘ করে গেছেন তারা!   ঝালকাঠি কারাগার: কু-প্রস্তাবের দাম দশ লাখ টাকা! জেলার বহাল তবিয়তে   রাজাপুর সাব-রেজিস্ট্রার অফিস দুর্নীতির আখড়া