আগামী ৩১ মার্চ অনুষ্ঠেয় দেশের ৩৭১টি ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণ সামনে রেখে এমন নির্দেশনা দিলো নির্বাচন কমিশন।
ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান বলেন, অনেক সময় ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা দুপুরের খাবার খাওয়ার জন্য ভোটগ্রহণ বন্ধ রাখেন। এতে ভোটগ্রহণে অনেক সময় বিলম্ব হয়। তাই একসঙ্গে সবাইকে খাবার খাওয়ার বিষয়ে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে নির্দেশনাটি আমরা সব রিটার্নিং কর্মকর্তা, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের কাছে পাঠিয়েছি। তারাই অন্যদের জানিয়ে দেবেন।
নির্দেশনায় ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের একগুচ্ছ করণীয় বিষয় তুলে ধরে হয়েছে।
প্রিজাইডিং অফিসার ও তার দলের সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ ভোটগ্রহণের ধার্য দিনের আগের রাতে
ভোটকেন্দ্রেই থাকার ব্যবস্থা করতে হবে এবং তারা যাতে ভোটকেন্দ্রে খাবার ও পানির বন্দোবস্ত করতে পারে তার জন্য আগে থেকেই
ব্যবস্থা করতে হবে। দূরবর্তী কেন্দ্রগুলোতে নির্বাচনি মালামাল, অন্য দ্রব্যাদি এবং ব্যালট পেপার যাতে যথাসময়ে পৌঁছানো যায়
তা নিশ্চিত করণার্থে ভোটকেন্দ্রের দূরত্ব ও যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রতি অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে।
প্রিজাইডিং অফিসার ভোটগ্রহণের আগের রাতেই ভোটকেন্দ্রে পুলিশসহ অবস্থান করবেন। রাতে অবস্থানকালে তারা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী, নির্বাচনি এজেন্ট, অথবা সমর্থকদের কাছ থেকে আহারাদি বা অন্য কোনো সুবিধা নিতে পারবেন না। কারণ এ ধরনের সুবিধা গ্রহণ আইনত দণ্ডনীয়।
ভোটগ্রহণের দিন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের কর্মস্থলেই কাজের ফাঁকে ফাঁকে পর্যায়ক্রমে খাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। মনে রাখবেন যে, খাওয়ার কারণে কোনো অবস্থাতেই ভোটগ্রহণ বন্ধ রাখা চলবে না। ভোটগ্রহণ বিরতিহীনভাবে চলবে।
ভোটকেন্দ্রে ভোট গণনায় স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) নির্বাচন বিধিমালা, ২০১০ এর ৩৯ বিধি অনুসারে ভোটকেন্দ্রে ভোট গণনার কার্যাদি সম্পন্ন করতে হবে। ভোটগ্রহণ সমাপ্তির পর পরই প্রিজাইডিং অফিসার ভোটকেন্দ্রেই উপস্থিত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী অথবা নির্বাচনি এজেন্ট অথবা পোলিং এজেন্টরা উপস্থিত থাকলে তাদের সামনে ভোট গণনা করবেন।
স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) নির্বাচন বিধিমালা, ২০১০ এর ৩৯ বিধির (২) উপবিধি অনুসারে প্রিজাইডিং অফিসার মনে করলে নিজ উদ্যোগে অথবা গণনার সময় উপস্থিত কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী অথবা কোনো নির্বাচনি এজেন্ট অনুরোধ করলে এবং প্রিজাইডিং অফিসার ওসই প্রস্তাব যুক্তিসংগত মনে করলে ভোট পুনঃগণনা করতে পারবেন।
প্রার্থী অথবা তার নির্বাচনি এজেন্ট অথবা পোলিং এজেন্টকে প্রিজাইডিং অফিসারের কাছে ভোট গণনার বিবরণী অর্থাৎ প্রত্যেক প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর প্রাপ্ত বৈধ ভোটের বিবরণী দিতে হবে। উপস্থিত কেউ তা গ্রহণ করতে অসম্মতি জানালে তিনি তা রেকর্ড করে রাখবেন।
ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) প্রথম ধাপের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন ৭৩ জন প্রার্থী। এছাড়া সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৮ জন, সাধারণ সদস্য পদে ৬৮ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
গত ৩ মার্চ দেশের ১৯ জেলার ৬৪ উপজেলার ৩৭১ ইউপিতে প্রথম ধাপে ভোটগ্রহণের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার শেষে প্রতীক নিয়ে প্রার্থীরা বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) প্রচারণায় নেমেছেন। ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ১১ এপ্রিল।
ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার উপ-সচিব মো. আতিয়ার জানান, গত ১৮ মার্চ মনোনয়পত্র দাখিলের শেষ দিন ছিল। ১৯ মার্চ ছিল বাছাই। আর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় ছিল ২৪ মার্চ।
এক্ষেত্রে চেয়ারম্যান ২৮১ জন, সংরক্ষিত নারী সদস্য ৯৭ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ৭০২ জনসহ মোট মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন ১ হাজার ৮০ প্রার্থী। সব মিলিয়ে প্রথম ধাপে ৩৭১ ইউপিতে তিন পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৯ হাজার ১৩৭ প্রার্থী। এদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ১ হাজার ৪২৯ জন, সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৪ হাজার ১৮০ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ১৩ হাজার ৫২৮ জন প্রার্থী রয়েছে।