বরিশালে এক মাসের মধ্যে আবারো নিজ থানার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হতে হয়েছে আরও এক উপ-পরিদর্শককে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই মেহেদী হাসানকে গ্রেফতার করা হয়।
স্কুলছাত্রীর ভিডিও ফাঁসের ভয় দেখিয়ে জিম্মি ও টাকা আদায়ের ঘটনায় ফাঁদ পেতে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বুধবার দুপুরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়।
এক নারীর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন।
এর আগে গত ১৫ অক্টোবর এক বিধবা নারীকে ধর্ষণের মামলায় কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই আবুল বাশারকে গ্রেফতার করা হয়।
মঙ্গলবার গ্রেফতার হওয়া এসআই মেহেদী হাসানসহ থানার অপর এসআই ইব্রাহিম খলিলকে পর্যটকদের আটকে ঘুস নেওয়ার অভিযোগে গত ২৬ সেপ্টেম্বর সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছিল।
পুলিশ কমিশনার বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার আসামি হিসেবে এসআই মেহেদী হাসানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে বুধবার দুপুরে ওই মামলার আসামি হিসেবে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কোতোয়ালি মডেল থানার এক এএসআই জানান, সাময়িকভাবে বরখাস্ত থাকা অবস্থায় এসআই মেহেদী হাসান নগরীর স্ব-রোড বাকলার মোড়সংলগ্ন মন্টু ঘোষের বাসার ৩ তলায় থাকেন। সংগ্রহ করা আপত্তিকর ভিডিও দেখিয়ে জিম্মি এবং অর্থনৈতিক সুবিধা নেওয়ার ঘটনায় এক স্কুলছাত্রী তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেয়। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে ফাঁদ পেতে ছাত্রীর পাঠানো টাকা বিকাশ থেকে নেওয়ার সময় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এসআই মেহেদীকে গ্রেফতার করা হয়।
মামলায় করা অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নগরীর আমতলা এলাকার বাসিন্দা বরিশাল সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী ওই ছাত্রীর ফোন নাম্বারে অজ্ঞাত ব্যক্তি ফোন করে জানায়, তার একান্ত ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও তার কাছে রয়েছে। তখন সে একাধিকবার ফোন করে ওই ব্যক্তির পরিচয় জানতে চায়। অজ্ঞাত ব্যক্তি নিজের পরিচয় গোপন করে ছদ্মবেশ ধারণ করে ওই রাতে মেয়েটির হোয়াটস অ্যাপ নাম্বারে একান্ত ব্যক্তিগত ভিডিও পাঠিয়ে দেয়। এরপর থেকে অজ্ঞাত ওই ব্যক্তি বিভিন্ন সময় তার মোবাইলে ফোন করে হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে আরও ভিডিও ও ছবি দাবি করে। কিন্তু মেয়েটি রাজি না হলে গত ১১ নভেম্বর তাকে ফোন করে ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও আত্মীয় স্বজনের কাছে পাঠানোর হুমকি দেয়।
এক পর্যায়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে কুপ্রস্তাব ও রুমডেট করার প্রস্তাব দেয়। গত ১৫ নভেম্বর বিকালে ফোন করে হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে বিকাশের মাধ্যমে টাকা চায়। বিষয়টি পুলিশে জানানো হলে বিকাশে টাকা পাঠানোর ফাঁদ পেতে গ্রেফতার করা হয় মেহেদীকে।
পুলিশ কমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, এসআই মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে আগে একটি বিভাগীয় মামলা রয়েছে। নতুন এ ঘটনায় আরও একটি বিভাগীয় মামলা করা হবে।