ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরে আবারও তৎপর হয়ে উঠেছে লাগেজ পার্টি। বন্দরের কাস্টমস কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে পার পেয়ে গেলেও লাগেজ পার্টির পাঁচ সদস্য ধরা পড়েছে র্যাবের হাতে। জব্দ করা হয় সঙ্গে থাকা ভারতীয় পণ্য।
মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আখাউড়া উপজেলার ধরখার এলাকায় অভিযানকালে একটি মাইক্রোবাসে তল্লাশি চালানো হয়। এ সময় চার ভারতীয় নাগরিকসহ তাদের কাছ থেকে ৫ হাজার ৫০০ পিস ভারতীয় অন্তর্বাস, ১২০ পিস ভারতীয় থ্রিপিস, চার বোতল হুইস্কি, দুই বোতল বিয়ার উদ্ধার করা হয়। জব্দ করা হয় পাচার কাজে ব্যবহৃত গাড়ি ও ভারতীয় নাগরিকদের চারটি পাসপোর্ট। বুধবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে তাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে পাঠানো হয়।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন: ভারতের কলকাতার নারকেল ডাঙ্গার মো. জামানের ছেলে আমানত হুসাইন (৫২), একই এলাকার শাহেন শাহের ছেলে আকিল আহমেদ (৪৫), খুরশিদ আলমের ছেলে মো. আদিল (২৫), কেশব চন্দ্র সেন রোডের মো. আশরাফ আনসারির ছেলে মো. তৌফিক আনসারী (২৮) ও বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার চান্দিয়ারার বাবুল মিয়ার ছেলে মো. স্বপন (৩০)।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ ভারতীয় পোশাক আনছে। স্থানীয়দের ভাষায় তাদের লাগেজ পার্টি বলা হয়। ওই পার্টির কাজ হচ্ছে পাসপোর্টের মাধ্যমে বৈধভাবে ভারতে থেকে বাংলাদেশে আসা। এ সময় তারা সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে ভারতীয় পোশাক নিয়ে আসে। ক্ষমতাসীন দলের বর্তমান ও সাবেক নেতা, ছাত্রসমাজের সাবেক নেতা, কয়েকজন নামধারী ব্যবসায়ী, স্থলবন্দর ও আশপাশের এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি এ কাজে লাগেজ পার্টিকে সহায়তা করে। ওই লোকজনের কেউ কেউ পার্টির সঙ্গে সরাসরি জড়িত আবার কেউ কেউ বন্দর থেকে পণ্য অন্যত্র পাঠানোর কাজে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহায়তা করেন।
তবে বিজিবির কঠোর অবস্থানের কারণে বেশ কিছুদিন ধরে এ প্রক্রিয়ায় ভারতীয় পোশাক আনা বন্ধ হয়। সাংবাদিকরাও এ নিয়ে লেখালিখি শুরু করলে লাগেজ পার্টির তৎপরতা কিছুটা কমে আসে। সাম্প্রতিক সময়ে আবারও তাদের তৎপরতা বেড়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া অঞ্চলের দায়িত্বে থাকা র্যাব-১৪ ভৈরব ক্যাম্প সূত্র জানায়, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে আখাউড়া উপজেলার ধরখার এলাকায় অভিযান চালানো হয়। এ সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে একটি মাইক্রোবাসে তল্লাশি চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় পোশাক উদ্ধার করা হয়। ওই গাড়িতে থাকা ভারতীয় নাগরিকরা জানান, তারা বিভিন্ন কায়দা অবলম্বন করে এসব পোশাক নিয়ে এসেছেন।
আখাউড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সঞ্জয় কুমার সরকার জানান, ভারতীয় নাগরিকরা পাসপোর্ট নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। তাদের কাছে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় পোশাক পাওয়ার ঘটনায় র্যাবের পক্ষ থেকে আখাউড়া থানার মামলা করা হয়েছে।