বিছানায় পড়ে আছেন ১১ হাজার গানের গীতিকার, খোঁজ নেয় না কেউ
প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:০৬ পূর্বাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ
‘চোখের জলে আমি ভেসে চলেছি’, ‘খোদা, তোমার এ দুনিয়ায় আমি এক এতিম অসহায়’, ‘তুমি ডুব দিয়ো না জলে কন্যা’, ‘মাটির কোলে খাঁটি মানুষ, খুঁজে পাওয়া দায়’, বাংলা চলচ্চিত্রের এমন জনপ্রিয় সব গানের গীতিকার আলমগীর কবির।
সিনেমা, দেশাত্মবোধক, আধুনিক ও ইসলামি মিলিয়ে ১১ হাজারের বেশি গান লিখেছেন তিনি। তার লেখা অনেক জনপ্রিয় গানে কণ্ঠ দিয়েছেন সৈয়দ আব্দুল হাদী, এন্ড্রু কিশোর, সাবিনা ইয়াসমীন, রথীন্দ্রনাথ রায়, দিলরুবা খান, সুবীর নন্দী, খুরশীদ আলম, ইন্দ্রমোহন রাজবংশীর মতো খ্যাতিমান শিল্পীরা। অথচ আজ সেই গীতিকার অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী। অর্থের অভাবে চিকিৎসা চলছে না ঠিকমতো!
প্রায় ১৫ বছর আগে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে রাজধানী ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দিনযাপন শুরু করেন তিনি। বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠালতলী ইউনিয়নের তালুক চরদুয়ানি গ্রাম। সেখানেই শয্যাশায়ী অবস্থায় দিন কাটছে তার। কেউ খোঁজ নেয় না। শরীরে নানা রোগ বাসা বাঁধলেও হচ্ছে না ঠিকমতো চিকিৎসা।
‘ঝিনুক মালা’, ‘মাটির কোলে’, ‘মিয়া ভাই’, ‘শিমুল পারুল’, ‘ভাই আমার ভাই’, ‘নাগ মহল’, ‘শশী পূর্ণ’, ‘কোহিনূর’সহ অনেক সিনেমার জন্য গান লিখেছেন আলমগীর কবির। তার বেশির ভাগ গানই তুমুল জনপ্রিয়। এছাড়া বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ‘রাজা তুমি ঘুমিয়ে আছো’ শিরোনামে একটি অ্যালবামের গানের গীতিকার আলগীর কবির। রাষ্ট্রীয় কোনো স্বীকৃতি অবশ্য তিনি পাননি।
পরিবারে তার তিন ছেলে, দুই মেয়ে ও স্ত্রী রয়েছেন। বড় ছেলে ঢাকায় একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন। বাকি দুই ছেলে পাথরঘাটায় কলেজে পড়াশোনা করেন। বড় মেয়ের বিয়ে হয়েছে। ছোট মেয়ে ফ্যাশন ডিজাইনে পড়াশোনা শেষ করেছেন। ছেলের সহায়তা ও এলাকায় থাকা সামান্য জমিজমা দিয়ে টেনেটুনে সংসার চলছে তার। কিন্তু চলছে না চিকিৎসা।
আলমগীর কবিরের মেয়ে তাফান্নুম সুবাইতা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার বাবা একসময়ের বিখ্যাত গীতিকার। অথচ তার ন্যূনতম জীবনধারণের নিশ্চয়তা রাষ্ট্র তাকে দিতে পারেনি। অসুস্থ হয়ে দীর্ঘদিন ধরে তিনি শয্যাশায়ী। অথচ কেউ খোঁজ নিচ্ছেন না।’
স্বামীর দূরবস্থার কথা বলতে গিয়ে গলা ধরে আসে আলমগীর কবিরের দ্বিতীয় স্ত্রী শাহনাজ বেগমের। তিনিই সেবাযত্ন করেন অসুস্থ স্বামীর। প্রথম স্ত্রী ও তার সন্তানেরা থাকেন অন্যত্র।