নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ উচ্চাদালতের নির্দেশে ভেঙ্গে ফেলা বাকেরগঞ্জের কবাই ইউনিয়নের হানুয়া গ্রামের সূর্য ইটভাটার কার্যক্রম আবারো শুরু হয়েছে। উচ্চাদালতের নির্দেশে গত ৪ ফেব্রুয়ারী ভ্রাম্যমান আদালত অবৈধ এ ইটভাটার চিমনি ভেঙ্গে ফেলে। ঘটনার কয়েকদিন পরেই আবারো ভাটায় ইট পোড়ানো কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ভ্রাম্যমান আদালত চিমনির আংশিক অংশ ভেঙ্গে ফেলেছে। এছাড়াও চুলা ও কয়েক লক্ষ কাঁচা ইট নষ্ট করা হয়নি। যার কারনে ঘটনার কয়েকদিন পর চিমনি মেরামত করে ইট পোড়ানো কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। এ ঘটনায় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দেয়া স্মারকলিপির কপি পরিবেশ অধিদপ্তরের মহা-পরিচালক ও বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালকের কাছেও দেয়া হয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছে, তিন ফসলি উর্বর জমিতে অবৈধভাবে ইটভাটা গড়ে উঠেছে। স্কুল-মাদরাসা ও দুটি বাজারের পাশে কৃষি জমিতে ২০১৯ সালে মেসার্স সূর্য ব্রিকস গড়ে তোলেন ক্বারী আলী হোসেন। স্থানীয়দের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ২২ অক্টোবর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সরেজমিন তদন্ত করে ওই জমি তিন ফসলি উল্লেখ করে পরিবেশ অধিদফতরে প্রতিবেদন দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে পরিবেশ অধিদফতর ২০২০ সালের ১৪ জানুয়ারি ওই ইটভাটার অবস্থানগত ছাড়পত্র বাতিল করে। পরিবেশ অধিদফতরের ওই আদেশের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ১২ মার্চ হাই কোর্টে রিট করেন ইটভাটার মালিক। উচ্চ আদালত একই বছরের ৩০ নভেম্বর এক আদেশে পরবর্তী এক মাসের মধ্যে জনবসতিপূর্ণ এলাকায় তিন ফসলি কৃষি জমিতে থাকা ইটভাটাটি অপসারণের নির্দেশ দেয়। উচ্চ আদালতের নির্দেশে এক মাসের মধ্যে ওই ইটভাটাটি অপসারণ না করায় বিভাগীয় পরিবেশ অধিদফতর ফের সরেজমিন পরিদর্শন করে পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালকের কাছে প্রতিবেদন দেয়। পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক কার্যালয় গত ১৯ জানুয়ারি এক চিঠিতে পরিবেশ অধিদফতরের মনিটরিং অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট বিভাগের পরিচালককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়। স্থানীয় বাসিন্দা সুলতান আহমেদ বলেন, অদৃশ্য কোনো কালো হাতের ইশারায় অবৈধ ইটভাটাটি ভাঙা হচ্ছে না। ইটভাটাটির কারণে আশপাশের গাছপালা বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে। ধান চিটা হয়ে যাচ্ছে। এতে ওই এলাকার পরিবেশ মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়েছে। স্থানীয় আরেক বাসিন্দা মো. এজাজ রেজা বলেন, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় একটি ইটভাটা করে এলাকার মানুষকে ঝুঁকিতে ফেলা হয়েছে। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা, কৃষি বিভাগের প্রত্যয়ন এবং পরিবেশ অধিদফতরের চিঠি চালাচালির পরও এলাকার দরিদ্র কৃষকরা গত দুই বছরেও কোনো প্রতিকার পাননি।এ কারণে ওই এলাকার তিন ফসলি জমি অনাবাদি হয়ে কৃষক পথে বসেছে। তারা ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে ইটভাটাটি অপসারণের দাবি জানিয়েছেন।