স্টাফ রিপোর্টার : বিভিন্ন দাবিতে ডাকা ধর্মঘটের কারণে বরিশালে লঞ্চ, বাস, মাইক্রোবাসসহ তিন চাকার যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ যাত্রীরা।
বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের আগের দিন শুক্রবার (০৪ নভেম্বর) সকাল থেকে কোনো রুটের লঞ্চই বরিশাল থেকে ছেড়ে যায়নি। যদিও এ বিষয়ে লঞ্চ মালিক ও শ্রমিক সমিতির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ ( বিআইডব্লিউটিএ) বরিশালের নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিদর্শক কবির হোসেন বলেন, একটি লঞ্চে হামলার প্রতিবাদে গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর থেকে বরিশাল-ভোলা রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। আর আজ সকাল থেকে অভ্যন্তরীন সব রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে, এরফলে কোনো লঞ্চ যাত্রী নিয়ে বরিশাল ছেড়ে যায়নি, আবার কোনো লঞ্চ বরিশালে আসেওনি।
যদিও লঞ্চে বন্ধের বিষয়ে মালিক বা শ্রমিক সমিতি আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি।
এদিকে পূর্ব ঘোষণা ছাড়া অভ্যন্তরীন সব রুটের লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায়, যাত্রীরা পড়েছেন বিপাকে। সকাল থেকে যাত্রীরা নদী বন্দরে এসে ফিরে যাচ্ছেন। মনির হোসেন নামে মেহেন্দিগঞ্জের পাথারহাটের এক বাসিন্দা বলেন, ডাক্তার দেখাতে বরিশালে এসেছিলেন বৃহস্পতিবার সকালে, তবে রাত হয়ে যাওয়ায় আর ফিরতে পারিনি। আজ সকালে ঘাটে এসে দেখছি লঞ্চ চলাচল বন্ধ। এখন বাধ্য হয়ে বরিশালের থাকতে হবে।
অপরদিকে বরিশাল থেকে ভোলায় স্পিডবোট চলাচল করছে। তবে যাত্রীদের নিয়ে বরিশাল নগরের ডিসি ঘাট থেকে স্পিডগুলো ভোলার উদ্দেশে যাত্রা করলেও ফিরে আসছে খালি। যাত্রীদের অভিযোগ লঞ্চ বন্ধ থাকায় বোটগুলোতে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। বোট চালকরা জানান, ভোলা থেকে যাত্রী আনতে না পারায় তেলের খরচ পুষিয়ে নিতে স্বাভাবিক সময়ের থেকে কিছুটা বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।
এদিকে বরিশাল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নথুল্লাবাদ ও রুপাতলী থেকে কোন রুটে বাস চলাচলও করছে না। সেইসঙ্গে সড়ক-মহাসড়কে টেম্পু, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ভাড়ায় চালিত মাইক্রোবাস চলাচলও বন্ধ রয়েছে।
সকাল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নথুল্লাবাদ ঘুরে দেখা গেছে, গোটা বাস টার্মিনাল ও এর আশপাশের সড়কগুলোতে যাত্রীবাহী বাসগুলোকে সারিবদ্ধভাবে পার্কিং করে রাখা হয়েছে। টিকিট কাউন্টারগুলোও বন্ধ রয়েছে। ফলে যাত্রীরা টার্মিনালগুলোতে এসে বিকল্প যানবাহনের জন্য অপেক্ষা করছেন। আর বিকল্প যানবাহন হিসেবে কেউ ব্যাটারি চালিত ভ্যান, রিকশা আবার কেউ মোটরসাইকেলে চেপে গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দিচ্ছেন। তবে এসব যানবাহনেরও সংকট থাকায় বেশিরভাগ যাত্রীই ফিরে যাচ্ছেন।
ফজলু নামে পটুয়াখালীর বাউফলের এক বাসিন্দা বলেন, জরুরি প্রয়োজনে বাড়িতে যাওয়ার জন্য সকালে নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালে এসেছি। কিন্তু বাস চলছে না। তাই বাধ্য হয়ে কয়েকগুন বেশি ভাড়া দিয়ে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফিরছি।
যদিও বাস মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ জানান,মহাসড়কে অবৈধ যানবাহন চলাচলবন্ধের দাবিতে তারা আগে থেকেই ৪ ও ৫ নভেম্বর ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছেন। এতে মানুষ বিষয়টি আগে থেকেই জানতো।