হঠাৎ করেই বরিশাল নগরীতে মানুষের চাপ বেড়ে গেছে। অলিগলি, চায়ের দোকানে মানুষের ভিড়। নগরীর কোনো হোটেলেও সিট খালি নেই। বিভিন্ন বাসা-বাড়িতেও নগরীর বাইরের লোকদের আনাগোনা বেড়েছে। এসব লোকজনের দাবি, তারা বিএনপির বরিশাল বিভাগীয় গণসমাবেশে অংশ নিতে আগেভাগেই বরিশালে এসেছেন।
nagad-300-250
বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, শুধু বরিশাল জেলার ১০ উপজেলাই নয়, এই বিভাগের ৬ জেলার ৪২ উপজেলার বিএনপি নেতাকর্মী ও সমর্থকরা শত বাধা পেরিয়ে সমাবেশে অংশ নিতে নগরীতে ঢুকে পড়েছে। জেলা-উপজেলা পর্যায়ের নেতাদের সিংহভাগ ইতোমধ্যেই নগরীতে চলে এসেছে। অনেকে আত্মীয়স্বজন ও বিএনপি নেতাকর্মীদের বাসা-বাড়িতে থাকছেন। কেউ হোটেলে উঠেছেন। যারা কোনো বাসা বা হোটেল পাননি, তারা সমাবেশস্থল বঙ্গবন্ধু উদ্যানে অবস্থান নিয়েছেন। তারা সেখানেই রাত্রিযাপন করবেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন হোটেল মালিক ও ম্যানেজার জানান, অনেক আগে থেকেই ৪ ও ৫ নভেম্বরের রুম বুকিং করা হয়েছে। যার কারণে এখন বরিশালে হোটেলগুলোয় সিট খালি নেই। এখন যারা আসছেন, তাদের ফিরিয়ে দেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
নগরীর জিলা স্কুল মোড়ে একটি চায়ের দোকানে কথা হয় হারুন নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে। তিনি বলেন, বিএনপির সমাবেশে এসেছি। লঞ্চ-বাস বন্ধ থাকবে, তাই আগেই চলে এসেছি। নগরীতে অবস্থান নেওয়া মুলাদী উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুস সত্তার খান বলেন, আমরা আগেই জেনেছি, সরকার সমাবেশে বাধা দিতে যানবাহন বন্ধ করে দেবে, তাই হাজার হাজার নেতাকর্মী নিয়ে আগেই বরিশালে অবস্থান নিয়েছি। বাকেরগঞ্জ থেকে নেতাকর্মী নিয়ে আসা সাবেক সংসদ-সদস্য আবুল হোসেন বলেন, যত বাধাই আসুক না কেন, আমরা বরিশাল থেকে সরকার পতনের ডাক দেব। সেই লক্ষ্যে বাকেরগঞ্জ থেকে শুরু করে বিভাগের হাজার হাজার মানুষ বরিশালে এসে পড়েছে। বরিশাল নগর বিএনপির সাবেক নেতা আনোয়ারুল হক তারিন বলেন, আমাদের গণসমাবেশ ব্যর্থ করতে সবরকম চেষ্টাই করছে সরকার। বিভিন্ন স্থানে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে। লঞ্চ-বাস, স্পিডবোট, তিন চাকার যানসহ বিভিন্ন যানবাহন বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু তারপরও সমাবেশ আমরা সফল করব।
দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মজিবুর রহমান নান্টু বলেন, সমাবেশে বাধা দেওয়ার জন্য ইতোমধ্যে এই নগরীসহ উজিরপুর, বাকেরগঞ্জ, বানারীপাড়া, পটুয়াখালীতে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা হয়েছে। ভয়ভীতি দেখিয়ে নেতাকর্মীদের সমাবেশে আসতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তাতে লাভ হবে না, ৫ নভেম্বরের গণসমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত করব আমরা। আর এই সমাবেশ হবে বরিশালের সর্বকালের সর্ববৃহৎ জনসভা। বরিশাল মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি রেজাউল করিম রনি বলেন, হাজার হাজার ছাত্রদল নেতাকর্মী এই সমাবেশে আসবে। আমরা ইতোমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি।
মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মীর জাহিদুল কবির জাহিদ বলেন, সরকার আমাদের যত বাধা দেবে, আমরা তত উজ্জীবিত হব। এই সমাবেশ দিয়ে আমরা সরকারকে দেখিয়ে দেব বরিশাল বিএনপির ঘাঁটি।