বরিশালে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক দিবস পালিত
প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর, ২০২২, ১:৩২ পূর্বাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ
বরিশাল খবর ডেস্ক :
মায়ের ডাক ও হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারস
নেটওয়ার্কের আয়োজনে বরিশালে ২৫ নভেম্বর নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক দিবস পালন করা হয়েছে।
২৫ নভেম্বর নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক দিবস। ১৯৬০ সালের ২৫ নভেম্বর ডোমেনিকান
রিপাবলিকের তিনজন নারী রাজনৈতিক কর্মীকে সেই দেশের শাসক হত্যা করে। এর প্রতিবাদে ১৯৮১ সাল থেকে
২৫ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে নারী অধিকার কর্মীরা নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে এই দিনটিকে আন্তর্জাতিক
দিবস হিসেবে পালন করে আসছেন। ২০০০ সালের ৭ ফেব্রুয়ারী জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ এ দিনটি পালনের
জন্য রেজ্যুলেশন গ্রহন করে।
আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ না হওয়া, অকার্যকর বিচার ব্যবস্থা, পুলিশ প্রশাসনের দুর্নীতি, সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়
এবং রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় অপরাধীরা ক্রমাগত দায়মুক্তি পেয়ে যাওয়ার কারনে বর্তমানে বাংলাদেশে নারীদের
প্রতি সহিংসতা ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। নারীরা পারিবারিক সহিংসতা, যৌতুক সহিংসতা, এসিড নিক্ষেপ,
ধর্ষণ, যৌন হয়রানিসহ বিভিন্ন ধরনের সহিংসতা এবং বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। এছাড়া বাল্য বিবাহের কারণে
অনেক মেয়ে শিশুর মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। বাংলাদেশে নারীদের প্রতি সহিংসতার পাশাপাশি গুমের শিকার
ব্যক্তিদের পরিবারের নারী সদস্যদের ওপর বিভিন্ন ধরনের নিপীড়ন চলছে বলে অভিযোগ রয়েছে। গুম মানবতা
বিরোধী অপরাধ হওয়া সত্ত্বেও ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে
বাংলাদেশে গুমের অভিযোগগুলো নিয়মিতভাবে প্রকাশ পেতে থাকে, যা ২০১৩ সাল থেকে ব্যাপক আকার ধারন
করে। “তথ্য গোপন করছেন” এমন বাক্য লেখা কাগজে সই নেয়ার জন্য গুম হওয়া ব্যক্তির পরিবারের নারী
সদস্যদের ওপর চাপ প্রয়োগ,বাসায় গিয়ে তাঁদের জেরা করা, থানায় ডেকে পাঠানো এবং ক্ষেত্র বিশেষে সাদা কাগজে
সই নেয়াসহ বিভিন ধরনের হয়রানির অভিযোগ রয়েছে সরকারের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের বিরুদ্ধে।
এছাড়া সরকারদলীয় ব্যক্তিরা গুমের শিকার পরিবারের নারী ও কন্যা শিশুদের ছবিকে ফটোশপ করে উক্ত নারী ও
কন্যা শিশুদের নিয়ে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘৃন্য প্রচারণা চালিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা গুমের শিকার ব্যক্তিদের আত্মীয়স্বজনদের প্রতি ‘প্রতিশোধমূলক
কর্মকা-’ দ্রুত বন্ধে বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
অধিকার ও মায়ের ডাক গুম হওয়া ব্যক্তির পরিবারের নারী সদস্যদের ওপর নিপীড়ন বন্ধসহ সমাজে নারীর প্রতি
সকল সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছে।
নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধের লক্ষ্যে মায়ের ডাক ও হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারসর্
নেটওয়ার্কের সুপারিশ সমূহঃ
১. গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের নারী সদস্যদের ওপর নিপীড়ন বন্ধ করতে হবে
২. বিচার বিভাগকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে ও নারীর প্রতি সহিংসতার মামলা গুলোর দ্রুত বিচারের
ব্যবস্থা করতে হবে;
৩. নারীর প্রতি সহিংসতার মামলাগুলো রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রত্যাহার করা যাবে না;
৪. প্রিন্ট এবং ইলেক্ট্রনিক মাধ্যম, পাঠ্যবইসহ সর্বস্তরে দীর্ঘকালীন সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে;
৫. সহিংসতার শিকার নারী ও সাক্ষীর নিরাপত্তার জন্য আইন করে তার বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে;