টানা বৃষ্টি ও নদীর জোয়ারে দক্ষিণাঞ্চলের নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। কোথাও কোথাও আড়াই থেকে চার ফুট পর্যন্ত পানি উঠেছে। ব্যহত হচ্ছে স্বাভাবিক চলাফেরা। তীররক্ষা বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ ভেঙে যেতে পারে বলে আতঙ্কে রয়েছেন নদী পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষেরা।
টানা বৃষ্টি ও নদীতে অস্বাভাবিক জোয়ারের কারণে বরিশাল নগরীর অধিকাংশ এলাকায় রাস্তা-ঘাটে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ড্রেন থেকে ওঠা নোংরা পানিতে প্লাবিত হয়েছে। ফলে দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছেন নগরবাসী।
টানা ৫ দিন ধরে দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় সব নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। রোববার (১৪ আগস্ট) মেঘনা নদী পাড়ি দিতে গিয়ে বেলা ১২টার দিকে উলানিয়া লঞ্চঘাট সংলগ্নে ৩২০ টন পাথরসহ একটি বাল্কহেড উল্টে ডুবে গেছে। তবে বাল্কহেডটিতে থাকা ৪ জনকে জীবিত উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে রোববার (১৪ আগস্ট) সকাল থেকেই বরিশালে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। কখনো মুষলধারে আবার কখনো মাঝারি ও হালকা বৃষ্টি হচ্ছে এ অঞ্চলে। সেই সঙ্গে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় বজ্রসহ আরও বৃষ্টিপাত হওয়ারও শঙ্কা রয়েছে।
বরিশাল আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক মাহফুজার রহমান জানান, রোববার সকাল থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ৫৭.৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বাতাসের গতিবেগ ৮-১০ নটিক্যাল মাইল। বৈরি আবহাওয়ার কারণে বরিশাল অঞ্চলের নদী বন্দরগুলোকে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত আর পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখানো হয়েছে।
এছাড়া বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি এবং এসব জায়গার অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২ থেকে ৪ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. মাসুম জানান, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া, ভারী বৃষ্টি ও পূর্ণিমার প্রভাবে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। বিশেষ করে রোববার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বিষখালী নদীর পাথরঘাটা স্টেশনে গতকালের (শনিবার) তুলনায় ২৫ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। আর শনিবারে পাথরঘাটার বিষখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ১০০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।