বরিশালে ইলিশের দাম ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাওয়ায় বাজার মনিটরিংয়ের দাবি করেছেন ভোক্তারা। তারা বলছেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে না থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবে জেলা প্রশাসনের দাবি, নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। মৎস্য আড়তদার সমিতি বলছে, বৈরী আবহাওয়ার কারণে ইলিশ শিকার করা যাচ্ছে না। এ কারণে চাহিদার তুলনায় ইলিশ কম উঠছে বাজারে। ফলে দাম একটু বেশি।
৬৫ দিন নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগর থেকে গত কয়েক দিন নগরীর পোর্ট রোড
পাইকারি মৎস্য বন্দরে ইলিশ আসতে শুরু করেছে। তবে এসব ইলিশ এখন সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। অভিযোগ রয়েছে, অদৃশ্য কারণে প্রতিবছরই ইলিশের দাম নিয়ে চলে কারসাজি। আবুল হোসেন নামে এক ক্রেতা আক্ষেপ করে বলেন, আগে যে ইলিশের কেজি ছিল ৮০০ টাকা এখন সেগুলো চাইছে ২ হাজার টাকা।
রাশিদা বেগম নামে এক বেসরকারি হাসপাতালের কর্মচারী বলেন, ইলিশের যা দাম তাতে আমাদের পক্ষে কেনা সম্ভব নয়। অনেক মানুষ আছেন সবশেষ কবে ইলিশ খেয়েছেন সেটি ভুলেই গেছেন। কারা ইলিশের দাম বাড়িয়ে যাচ্ছেন তা খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিতে সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি। আবদুস সালাম নামে এক অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা বলেন, আমরা বরিশালবাসী ইলিশের দাম এমন বাড়তি চাই না। আমাদের বরিশালের ইলিশ আমরা ন্যায্যমূল্যে কিনতে চাই।
এদিকে মৎস্য ব্যবসায়ীদের দাবি নদ-নদীতে তুলনামূলকভাবে ইলিশ না পাওয়ার সঙ্গে জেলেদের মাছ ধরার খরচ ও চাহিদা বাড়ায় ইলিশের দাম বেড়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক জেলে জানান, আগের মতো ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না। এ ছাড়া জ্বালানি খরচ বৃদ্ধিসহ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে ইলিশের দাম বাড়ছে।
তবে বরিশাল সদর থানা মৎস্য আড়তদার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নিরব হোসেন টুটুল বলেন, আবহাওয়ার কারণে জেলেরা তেমনভাবে জাল ফেলতে না পারলেও আগের চেয়ে মাছ কয়েকগুণ বেড়েছে। আগে এলসি (৭শ গ্রাম থেকে ১ কেজির নিচে) ইলিশের মন ছিল ৬০ হাজার টাকা। এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৪৮ হাজার টাকায়। একইভাবে এখন গ্রেড সাইজের (এক কেজির উপরে) ইলিশ ৬০ হাজার টাকা ও ভেলকা (৬০০ গ্রামের নিচে) ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৪০ হাজার টাকা মন।
জেলা মৎস্য অফিসার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, বরিশালে না বাড়লেও বরগুনা, আলীপুর, মহিপুর, পাথারঘাটায় প্রচুর মাছ আসছে। বরিশালে কম মাছ আসায় ও চাহিদা বেশি থাকায় ইলিশের দাম বাড়তে পারে। তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমরা দাম নিয়ন্ত্রণ বা বাজার মনিটরিং করি না। বরিশাল জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা নিয়মিত বাজার মনিটরিং করি। ইলিশের চাহিদা বেশি ও সরবরাহ কম থাকায় দাম ওঠানামা করতে পারে। কৃত্রিমভাবে দাম বাড়ানো হচ্ছে কিনা তা আমরা যাচাই করব। এ ছাড়া বাজার মনিটরিং আরও জোরদার করা হবে।