বরিশাল নগরীর অধিকাংশ আবাসিক হোটেলে ৪ ও ৫ নভেম্বরের সিট অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। শুক্রবার বিকালে একাধিক হোটেলের মালিক ও ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। মহাসড়কে অবৈধ যান চলাচল বন্ধে বরিশাল বাস মালিক গ্রুপ ও বরিশাল-পটুয়াখালী বাস মিনিবাস মালিক সমিতি ওই দুদিন কর্মবিরতি ঘোষণা করেছে।
ফলে গণসমাবেশের দিন শনিবার ও তার আগের দিন শুক্রবার বরিশাল বিভাগে আঞ্চলিক ও দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ থাকবে। ধারণা করা হচ্ছে, এ কারণেই বিএনপির নেতাকর্মীরা বিভাগীয় গণসমাবেশে যোগ দিতে আগেই শহরে অবস্থান নিতে হোটেলগুলোতে অগ্রিম সিট বুকিং দিয়েছেন।
জানা যায়, নগরীতে ছোট-বড় শতাধিক আবাসিক হোটেল রয়েছে। প্রত্যেক হোটেলে গড়ে ৭০টি করে সিট রয়েছে। এক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিনই হোটেলগুলোতে ঢাকাসহ বরিশাল বিভাগের ছয় জেলার বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে সিট বুকিংয়ের জন্য কল আসছে। কয়েক দিন আগেই অধিকাংশ হোটেলের সিট অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। হোটেল মালিকরা নিয়ম অনুযায়ী বোর্ডারদের ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি ও মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে রেখেছেন।
পাশাপাশি হোটেলে প্রবেশের সময় সিসি ক্যামেরা বা ক্যামেরায় ছবি তুলে রাখবেন। তারা বিএনপির গণসমাবেশে যোগ দিতে আসবেন কিনা তা হোটেলসংশ্লিষ্টরা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি।
নগরীর হোটেল আলভির ব্যবস্থাপক মো. সোহরাব জানান, তার হোটেলে ওই দুদিনের জন্য সব সিট অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। অগ্রিম বুকিংয়ের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিতে সব নিয়মকানুন মানা হচ্ছে।
হোটেল সামস্-এর ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মানিক জানান, ঢাকাসহ বরিশাল বিভাগের মুলাদী, মেহেন্দিগঞ্জ, লালমোহন, পটুয়াখালী থেকে ওই দুদিনের সিট বুকিংয়ে সবচেয়ে বেশি কল আসছে। এখন বিরক্ত হয়ে কোনো ফোন কল রিসিভ করছি না।
প্রসঙ্গত, বরিশালে ৫ নভেম্বর বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশের ১০ দিন আগে বাস চলাচল বন্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছে বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপ। ৩ নভেম্বরের মধ্যে তাদের দাবি অনুযায়ী মহাসড়কে থ্রি হুইলারসহ অবৈধ যান বন্ধ না হলে ৪ ও ৫ নভেম্বর বরিশাল বিভাগ থেকে সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া আরেকটি সংগঠন বরিশাল-পটুয়াখালী বাস মিনিবাস মালিক সমিতিও একই দাবিতে ওই দুদিন কর্মবিরতি ঘোষণা করেছে।
গণসমাবেশ সফল করতে মহানগর বিএনপির প্রস্তুতি সভা : গণসমাবেশ সফলে প্রস্তুতি সভা করেছে মহানগর বিএনপি। নগরীর সদর রোডের দলীয় কার্যালয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য আবু নাসের রহমতুল্লাহ। বিশেষ অতিথি ছিলেন মহানগর বিএনপি আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান ফারুক। মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কেএম শহিদুল্লাহর সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন সিনিয়র সদস্য আ.ন.ম সাইফুল আহসান আজিম, সদস্য ইমন চাকলাদার, জাহানারা বেগম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, কথিত ধর্মঘটের নাটক সাজিয়ে বরিশালের গণসমাবেশ ঠেকানো যাবে না। জনগণ সব বাধা উপেক্ষা করে যথাসময়ে সমাবেশস্থলে পৌঁছাবে।
শ্রমিক দলের লিফলেট বিতরণ : গণসমাবেশ সফল করতে লিফলেট বিতরণ করেছে জেলা ও মহানগর শ্রমিক দলের নেতাকর্মীরা। শুক্রবার বিকালে বরিশাল সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে জেলা শ্রমিক দল ও নগরীর বান্দ রোড, লঞ্চঘাটসহ একাধিক এলাকায় মহানগর শ্রমিক দলের উদ্যোগে লিফলেট বিতরণ করা হয়।
মহানগর শ্রমিক দলের কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপি আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান ফারুক, সদস্য সচিব জাহিদুল কবির জাহিদ, মহানগর শ্রমিক দলের আহ্বায়ক ফয়েজ আহমেদ খান, সদস্য সচিব শহিদুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক শাহজাদা খন্দকার প্রমুখ।
অন্যদিকে জেলা শ্রমিক দলের কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আ. হক ফরাজী, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, বরিশাল সদর উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম আকন, সহসভাপতি নান্নু মিয়া প্রমুখ।