বরিশালের গৃহবধু সাথী হত্যার বিচারের দাবিতে বাসদের বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত
প্রকাশ: ২ অক্টোবর, ২০২২, ৫:৪১ অপরাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ
২ অক্টোবর সকাল ১১ টায় অশ্বিনী কুমার হল চত্বরে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ ও সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম বরিশাল জেলা শাখার উদ্যোগে ‘বরিশালের গৃহবধূ ও সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের সদস্য মোর্শেদা জাহান সাথী হত্যার বিচার’ এর দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল বাসদ বরিশাল জেলা শাখার সদস্য দুলাল মল্লিকের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট, কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন খোকন, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক দিলরুবা নুরী, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট বরিশাল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মানিক হাওলাদার, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম বরিশাল জেলা শাখার সহ-সভাপতি মাফিয়া বেগম, সদস্য শানু বেগম, বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশন বরিশাল জেলার সাধারণ সম্পাদক অ্যালভার্ট রিপন বল্লভ, নিহত সাথী’র ভাই নজরুল ইসলাম, সচেতন নাগরিক মোস্তাফিজুর রহমান, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট, বরিশাল জেলা শাখার সহ-সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, ১৫নং ওয়ার্ড শাখার সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, ১৩ নং ওয়ার্ড শাখার সভাপতি শহিদুল ইসলাম, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট বরিশাল মহানগর শাখার প্রচার প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক বিজন সিকদার, গৃহবধূ রিনা বেগম, তাহসিন, রাহাত প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, গৃহবধূ মোর্শেদা আক্তার সাথীকে দীর্ঘদিন ধরে তার স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকেরা নির্যাতন করে আসছিল। এ বিষয়ে তিনি নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা করেছেন যার নম্বর ৩৩৯/২২। এই মামলা করায় ক্ষুব্ধ হয়ে গত ২৩শে সেপ্টেম্বর সকাল ১১টায় মোর্শেদা আক্তারকে তার ননদ লুনাসহ ৩ জন মিলে গায়ে কেরাসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এই নৃশংস অগ্নিকান্ডে মোর্শেদার মুখমণ্ডল, বুক, পেট, শ্বাসনালীসহ শরীরের ৩০% অংশ পুড়ে যায়। পরে আসামীরা মোর্শেদাকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ফেলে রেখে চলে আসে। উন্নত চিকিৎসার জন্য মোর্শেদাকে ঢাকায় শেখ হাসিনা বার্ন ইন্সটিটিউটে রেফার করা হয়। ৭দিন তিনি শেখ হাসিনা বার্ন ইন্সটিটিউটের আই সি ইউতে লাইফ সাপোর্টে মৃত্যুর সাথে লড়াই করে অবশেষে গত ৩০শে সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
বক্তারা আরও বলেন, মোর্শেদা আক্তার অত্যন্ত দরিদ্র ও পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হলেও তিনি বিভিন্ন নারী নির্যাতনবিরোধী কর্মসূচিতে অংশ নিতেন। আদালতে পারিবারিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে মামলা করায় তার এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার ঘটনা আইনের শাসনের জন্য অত্যন্ত মর্মান্তিক ও ন্যাক্কারজনক। ২৩শে সেপ্টেম্বর এই ঘটনা ঘটলেও আজ পর্যন্ত সকল আসামী গ্রেফতার হয়নি।
বক্তারা মোর্শেদা আক্তারের এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানান এবং অবিলম্বে এই ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার জোর দাবি জানান।
সমাবেশ শেষে একটি মিছিল নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে অশ্বিনী কুমার হল চত্বরে এসে শেষ হয়। এবং একটি প্রতিনিধি টিম জেলা প্রশাসক ও পুলিশ কমিশনার বরাবর স্মারকলিপি পেশ করেন ।