প্রেম প্রতারণার শিকার প্রেমকান্ত কি ভারতেই ফিরে যাবেন?
প্রকাশ: ৪ আগস্ট, ২০২২, ১১:২৩ অপরাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ
ভারতের তামিলনাড়ু থেকে বাংলাদেশের বরিশালে প্রেমিকাকে পেতে এসেছেন নৃত্যশিল্পী প্রেমকান্ত। প্রেমিকার সঙ্গে দেখাও হয়েছিল, তবে অন্য এক যুবকের সঙ্গে তার প্রেমিকার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। শেষে মারধরের শিকার হয়ে তাকে থানায় থাকতে হয়েছে ৩ রাত। তবুও হাল ছাড়েননি প্রেমকান্ত, প্রেমিকাকে মানাতে খুঁজছেন বরিশালজুড়ে।
প্রেমকান্ত জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার ড্যান্স দেখে প্রেমে মজে বাংলাদেশের বরগুনার তালতলী উপজেলার বাসিন্দা ও সরকারি বরিশাল মহিলা কলেজের এক ছাত্রী। আর প্রেমকান্তের ভিডিওতে প্রতিনিয়ত লাইক কমেন্টেও করতে থাকেন সেই কিশোরী।
প্রেমকান্ত জানান, এভাবে একপর্যায়ে ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় ও ভাবের আদান প্রদান শুরু হয় একে অপরের মধ্যে। টানা তিন বছর ধরে প্রেমের সম্পর্কও এগিয়েও চলে তাদের।
প্রেমকান্তের দাবি, প্রেম শুধু মেয়ের সঙ্গেই নয়, সুসম্পর্ক হয়েছে দুই পরিবারের মাঝেই। আর তাই ভিডিও কলে নয় মনস্থির করেন ভালোবাসার মানুষটিকে সরাসরি একনজর দেখবেন প্রেমকান্ত।
প্রেমিকাকে একনজর দেখার জন্য সুদূর ভারতের তামিলনাড়ু থেকে বাংলাদেশের বরিশাল নগরীতে আসেন। কারণ বরিশালের সরকারি মহিলা কলেজে ওই কিশোরী পড়াশুনা করেন। বরিশালে আসার পর দেখাও মেলে ওই কিশোরীর সঙ্গে। আর এরপরই প্রেমকান্তের প্রেম নতুন এক দিকে মোড় নেয়।
নেটওয়ার্কিং ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করা প্রেমকান্ত জানান, ২০১৯ সালে ফেসবুকে যে পরিচয়, এরপর ধীরে ধীরে সম্পর্ক আরও গভীর হয়। একপর্যায়ে উভয় পরিবারের মাঝেও গড়ে ওঠে সুন্দর একটি সম্পর্ক। করোনার বাধা কাটিয়ে প্রেমকান্ত বরিশালে আসে ২৪ জুলাই। ২৫ জুলাই বেলা ১২টায় বরিশালের সরকারি মহিলা কলেজে দুজনের দেখা হয়, তারপর দুপুর ২টায় হান্ডি কড়াইয়ে তারা দুপুরের খাবার গ্রহণ করেন। সর্বশেষ দেখা হয় বিকাল ৪টায় বঙ্গবন্ধু উদ্যানে।
দেখা হওয়ার একদিন পর প্রেমকান্ত জানতে পারেন তার অজান্তেই চয়ন হালদার নামের এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক আছে তার প্রেমিকার। আর এরপরই হঠাৎ প্রেমিকা ও তার পরিবার বন্ধ করে দেয় যোগাযোগ। শেষমেশ প্রেমিকার নতুন প্রেমিকের হাতে ২৭ জুলাই নগরীর কাশিপুর চৌমাথা এলাকায় মারধরের শিকার হন প্রেমকান্ত।
প্রেমকান্তের দাবি, তার কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয় টাকা-পয়সা। অভিযোগ দিতে গিয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটনের এয়ারপোর্ট থানা পুলিশের হেফাজতেও তিন দিন থাকতে হয় তাকে। সিসিটিভি ফুটেজ থাকলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। বরং তাকেই হয়রানি করা হচ্ছে, তাই পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি।
প্রেমকান্ত বলেন, আমার প্রেমিকা আমাকেই ভালোবাসে। তা না হলে ও আমাকে বরিশাল আসতে বলতো না। প্রিয়তমার সঙ্গে দেখা হলে আবারো আমার জীবনে ফিরে আসবে সে। তাই নিজ দেশ ভারতের তামিলনাড়ুতে ফিরে যাবার আগে আমার প্রেমিকার দেখা পেতে চাই।
এ বিষয়ে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমলেশ চন্দ্র হালদার জানান, ওই যুবক বৈধভাবে বাংলাদেশে আসেন। তাকে নিরাপত্তার স্বার্থে থানায় আনা হলে সে পুরো ঘটনা খুলে বলে। পরে ভারতীয় হাইকমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই যুবককে ১ আগস্ট সকালে ঢাকার গাড়িতে তুলে দেওয়া হয়। সেখান থেকে নিজ দায়িত্বে বিমানযোগে ভারতে চলে যাওয়ার কথা।
তিনি বলেন, যার সঙ্গে ওই যুবক তার সম্পর্কের কথা বলছেন, সে অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় বিষয়টি হাইকমিশনের কর্মকর্তারা ওই ছেলেকে বাংলাদেশের আইন সম্পর্কে অবহিত করে বোঝান। এরপর তাকে ভারতে চলে যাওয়ার জন্য বলেন, ছেলেটিও ভারতে চলে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করলে গাড়িতে তুলে দেওয়া হয়।