পিরোজপুরে রাস্তার পাশের সরকারি গাছ কেটে নেয়ার অভিযোগ
প্রকাশ: ৪ জুলাই, ২০২০, ৭:৩৬ অপরাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার শ্রীরামকাঠী ইউনিয়নের রাস্তার পাশের সরকারি গাছ কেটে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ৯২ জুলাই) রাতে উপজেলার শ্রীরামকাঠী ইউনিয়নের নাজিরপুর-শ্রীরামকাঠী সড়কের কালিবাড়ী বাজারের পূর্বপাশের রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানান শ্রীরামকাঠী ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান উত্তম কুমার মৈত্র।
শ্রীরামকাঠীর স্থানীয় বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা নিত্তানন্দ হালদার অভিযোগ করে জানান, ১৯৮৫ সালে শ্রীরামকাঠী ইউনিয়নের আর্থিক সহায়তায় স্থানীয় প্রগতী সংঘ নামে একটি ক্লাব স্বেচ্ছাশ্রমে নাজিরপুর-শ্রীরামকাঠী সড়কের পাশে সরকারি জায়গায় ঐ গাছগুলো রোপন করে। বর্তমানে প্রভাবশালী এক নেতার ভাই সরকারি জায়গার উপরে গাছসহ জায়গা নিজের দাবী করে তারকাটা দিয়ে বেড়া দেয় এবং গত বৃহস্পতিবার রাতে তার লোকজন দিয়ে রাস্তার পাশের ১১ টি বড় মেহগিনি গাছ কেটে নিয়ে যায়।নিত্তানন্দ হালদার বলেন, বিষয়টি তারা উপজেলা প্রশাসনকে জানালেও প্রশাসন তেমন কোন ব্যবস্থাই নিচ্ছে না।শ্রীরামকাঠী ইউনিয়নের দফাদার মো: আক্তারুজ্জামান জানান, রাতে গাছ কাটার খবর জানাতে পেরে তিনি ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকে বিষয়টি জানান এবং প্রশাসনকে জানালে নাজিরপুরের এ্যাসিল্যান্ড ঘটনাস্থলে আসেন। কিন্তু তিনিও গাছ জব্দ না করে এবং কোনও কিছু না বলে চলে যান। পরে যারা গাছ কাটছিল তারা দফাদারকে নানা রকম হুমকি ও ভয়ভিতি প্রদান করে।
এ বিষয়ে নাজিরপুরের ভূমি কর্মকর্তা ফাহমি মো. সায়েফ জানান, গাছ কাটার খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান এবং যে গাছ কাটা হয়েছে তা ব্যক্তি মালিকানাধীণ একটি বাড়ির সীমানার ভিতর থেকে কাটা হয়েছে তাই তিনি এ গাছ জব্দ করেননি। তবে তিনি বলেন, সেই কাটা গাছের সাথে রাস্তার পাশের সরকারি কয়েকটি গাছের ডাল কাটা হয়েছে সেই বিষয়ে তিনি ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান।শ্রীরামকাঠী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান উত্তম কুমার মৈত্র অভিযোগ করে জানান, বৃহস্পতিবার রাতে রাস্তার পাশের থাকা সরকারি জায়গার ১১টি গাছ কেটে ফেলে প্রভাবশালী এক জনপ্রতিনিধি ও ক্ষমতাসীন দলের নেতার ভাই । বিষয়টি তিনি জানাতে পেরে বন বিভাগের কর্মকর্তা ও প্রশাসনকে জানান। কিন্তু প্রশাসনের লোকজন তেমন কোন ব্যবস্থাই নিচ্ছে না এমনকি কাটা গাছও জব্দ করছে না।
সরকারি জায়গা দখল করে বেড়া দিয়ে সরকারি গাছ এ ভাবে কেটে নিয়ে গেলে আগামীতে এলাকায় কোন সরকারি গাছই থাকবে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করে ইউপি চেয়ারম্যান।তবে এ সকল অভিযোগ অস্বীকার করে প্রভাবশালী নেতার অভিযুক্ত ওই ভাই সাংবাদিকদের জানান, তিনি তার নিজস্ব জমির উপরে লাগানো ব্যক্তি মালিকানাধীণ গাছ কেটেছেন। বি এস রেকর্ড অনুযায়ী তিনি তার জমিতে সীমানা প্রাচীর দিয়েছেন আর সেই প্রাচীরের ভিতরে থাকা গাছ তার লোকজন কেটেছে। প্রশাসন যদি তাদের জমি মেপে দেখতে চায় তা হলেও তিনি প্রস্তুত আছেন বলে জানান।এ ব্যাপারে পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক আবু আলী মো: সাজ্জাদ হোসেন জানান, ঘটনাটি তিনি জানার পরপরই ঘটনাস্থলে প্রশাসনের লোক পাঠানো হয়েছিল। সেখানে গাছ ও জমির বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। যদি কোন অনিয়ম হয় সে বিষয়ে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।