পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় শফিকুল ইসলাম সিকদার (৩৮) নামে জাতীয় পার্টি (এরশাদ) নেতাকে প্রকাশ্য দিবালোকে মহাসড়কে ফেলে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে এক পা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করেছে অজ্ঞাত একদল সন্ত্রাসী। স্থানীয়রা তাকে গুরুতর অবস্থায় বরিশাল শেরে বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মঠবাড়িয়া-চরখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের মাঝেরপুল নামক স্থানে ওই জাতীয় পার্টি নেতা এ সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন।
গুরুতর আহত শফিকুল ইসলাম উপজেলার তুষখালী গ্রামের মো. আইউব আলী সিকদারের ছেলে। তিনি স্থানীয় তুষখালী ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক।
এ সন্ত্রাসী হামলার জড়িতদের এখনও শনাক্ত করা যায়নি। তবে পুলিশ স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের ভাই নাসির হাওলাদারকে সন্দেহভাজন হিসেবে পুলিশ আটক করেছে।
থানা ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মঠবাড়িয়া উপজেলার তুষখালী ইউনিয়ন বাজারে দুটি ভিটির মালিকানা নিয়ে স্থানীয় কয়েকজনের সাথে জাতীয় পার্টির নেতা শফিকুল ইসলামের দীর্ঘদিন বিরোধ চলে আসছিল। এ ঘটনায় বেশ কিছু মামলা মোকদ্দমা আদালতে চলমান।
বৃহস্পতিবার সকালে মঠবাড়িয়া উপজেলা সদর আদালতে একটি মামলায় হাজিরা দিতে শফিকুল ইসলাম বাড়ি থেকে বের হন। একটি ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলযোগে উপজেলা সদরের যাওয়ার পথে মহাসড়কের মাঝেরপুল নামক স্থানে পৌঁছলে অজ্ঞাত ৪-৫ জন একটি মাহিন্দ্র গাড়িতে এসে শফিকুলের মোটরসাকেলের পেছন থেকে ধাক্কা মারে। এতে মোটরসাইকলেচালক ও আরোহী শফিকুল সড়কের পাশে পড়ে যান। এরপর সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা মাহিন্দ্র থেকে নেমে শফিকুলকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে বাম পা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে। এছাড়া তার পেট ও শরীরের নানা স্থানে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে সড়কে ফেলে দ্রুত মাহিন্দ্রযোগে সন্ত্রাসী দল পালিয়ে যায়।
আহত শফিকুলের আর্তচিৎকারে পথচারী ও স্থানীয় বাসিন্দারা এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখানে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে তার অবস্থার কোনো উন্নতি না হলে সড়ক পথে আহত শফিকুলকে ঢাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য স্থানান্তর করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে হামলায় আহত জাতীয় পার্টির নেতা শফিকুল ইসলামের বাবা মো. আইউব আলী সিকদার জানান, তার ছেলের সাথে তুষখালী বন্দরের দুটি ভিটির জমি নিয়ে স্থানীয় কয়েকজনের সাথে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে আদালতে মামলাও চলমান। প্রতিপক্ষরাই পরিকল্পিতভাবে আমার ছেলেকে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে এক পা বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। আমার ছেলের অবস্থা এখন আশঙ্কাজনক। আমরা এই সন্ত্রাসী হামলার ন্যায়বিচার চাই।
এদিকে এ ঘটনার বিচার দাবিতে পরিবারের পক্ষ হতে মঠবাড়িয়া থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।