পথ হারিয়ে সুন্দরবনে আটকে পড়া নারী-শিশুসহ নয় পর্যটককে উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাত দশটার দিকে তাদের উদ্ধার করা হয়।
গুগলের সহায়তায় আটকে পড়া পর্যটকদের উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছে বুড়িগোয়ালিনীর নীলডুমুর নৌ-পুলিশ।
জানা যায়, শুক্রবার বেলা দেড়টার দিকে কলাগাছিয়া টহল ফাঁড়ি থেকে স্ত্রী-সন্তান ও আর চারজনসহ মোট নয়জন নীলডুমুর নৌ-ঘাটের উদ্দেশ্যে রওনা দেন জাহাঙ্গীর। কিন্তু মাঝি পথ হারিয়ে ফেলায় নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারিনি তাদের বহন করা ট্রলারটি। প্রায় আড়াই ঘণ্টা পরে গন্তব্যে পৌঁছাতে না পারায় ট্রলারের মাঝি ওই পথে কলাগাছিয়া ফেরার চেষ্টা করেন। কিন্তু জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়ায় ফেরা সম্ভব হয়নি। ফলে গভীর সুন্দরবনের মধ্যে আটকা পড়েন পর্যটকবাহী ট্রলারটি। পরে বনবিভাগ, টুরিস্ট পুলিশ, নৌযান মালিক সমিতিসহ ছয়টি উদ্ধারকারী দল তাদের লোকালয়ে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়।
উদ্ধার হওয়া পর্যটক জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, সন্ধ্যার পরও গন্তব্যে পৌঁছাতে না পারায় তিন সন্তান ও স্ত্রী কান্নাকাটি শুরু করে। এসময় মোবাইলের নেটওয়ার্ক না থাকায় অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছিল না। সুন্দরবনে অসংখ্য নদী ও খাল থাকলেও কোন দিকনির্দেশক বা মাইলস্টোন না থাকায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
ট্রলারের মাঝি শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জের চন্ডিপুর গ্রামের ফজের আলী জানান, ফেরার সময় পথ ভুল করে বনের গভীরে চলে যায় ট্রলারটি। অসতর্কতার কারণে পথ হারিয়ে ফেলেন বলেও দাবি করেন মাঝি ফজলে আলী।
তিনি আরও জানান, মাত্র ৫০ মিনিটের পথ। ট্রলারে দেড়-দুই ঘণ্টার জন্য জ্বালানি ছিল। ফলে জ্বালানি শেষ হলে গভীর সুন্দরবনের মধ্যে আটকা পড়ে ট্রলারটি। পরে উদ্ধারকারী দল তাদের লোকালয়ে নিয়ে আসে।
বুড়িগোয়ালিনীর নীলডুমুর নৌ-পুলিশের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক মো. হিলাল উদ্দীন বলেন, ‘শুক্রবার বিকাল সাড়ে চারটার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে পর্যটকদের সুন্দরবনের মধ্যে আটকে পড়ার খবর পাই। এসময় একাধিক নৌযান নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন পথে সুন্দরবনে প্রবেশ করি। গুগলের সহায়তায় আটকে পড়া পর্যটকদের কাছে পৌঁছে তাদের উদ্ধার করা হয়।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আক্তার হোসেন বলেন, ‘শুক্রবার বিকালের দিকে পুলিশের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারি। পরে বনবিভাগ, টুরিস্ট পুলিশ, নৌযান মালিক সমিতিসহ ৬টি টিম সুন্দরবনে প্রবেশ করে। রাত দশটার দিকে নারী ও শিশুসহ তাদের উদ্ধার করা হয়।’