পটুয়াখালী ওজোপাডিকো: নির্বাহী প্রকৌশলীর মো. মাঈনউদ্দীনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ
প্রকাশ: ৭ ডিসেম্বর, ২০২২, ১:১২ অপরাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ
পটুয়াখালী বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ওজোপাডিকো) ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশালী মো. মাঈনউদ্দীনের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, বিদ্যুৎ বিক্রয় বিতরণ, সিস্টেম লস, গ্রাহকসেবা উন্নয়ন এবং অনিয়ম-দুর্নীতি রোধের লক্ষ্যে ২০০৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলা নিয়ে গঠন করা হয় ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো)। কোম্পানি গঠনের ২ বছর নিয়ম মেনে চলে আসছিল ওজোপাডিকোর পটুয়াখালীর কার্যক্রম। কিন্তু ২০০৯ সাল থেকে ওজোপাডিকো পটুয়াখালীতে দুর্নীতির মহোৎসব শুরু হয়।
পাওয়ার হাউজের স্টোরে রক্ষিত তামার তার, শহর প্রকল্পের তার চুরি এবং বিক্রির আভিযোগে তৎকালীন নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। মামলা সূত্রে এবং নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী জানান, নির্বাহী প্রকৌশলী নিয়মবহির্ভূতভাবে কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে বিনা টেন্ডারে প্রায় ৪শ বৈদ্যুতিক খুঁটি অপসারণ করে আর্থিকভাবে লাভবান হন। পটুয়াখালী পৌরসভার ৪ লেন প্রকল্পের সড়কে তিতাস মোড় থেকে চৌরাস্তা পর্যন্ত এবং শহরের নতুন নতুন রাস্তা বর্ধিতকরণ ও ড্রেন নির্মাণের কারণে এসব খুঁটি অপসারণ করা হয়। এছাড়া কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া শহরের বিদ্যুতের ২টি সোর্স চৌরাস্তা থেকে ১৩২ কেভি গ্রিড এবং ৩৩/১১ কেভি লাইন ডিজবেল্টিং করেছেন, যা নিয়মবহির্ভূত। সূত্র আরও জানায়, তিনি শহরের ফটিকের খেয়াঘাটের আলামিনের ১০তলা ভবন, তিতাস মোড়ে সুবর্ণা টাওয়ার, নবাবপাড়ার বিসমিল্লাহ ভবন, বালিকা বিদ্যালয় সড়কের রুপালি ভবন, সবুজবাগ ৩নং লেনের ১০তলা ভবন, সবুজবাগ ১নং লেনের পটুয়াখালী টাওয়ারসহ শহরের একাধিক ১০তলা-৫তলা ভবনে ইস্টিমেট ছাড়া সংযোগ এবং অস্থায়ী মিটার না দিয়ে আবাসিক মিটার দিয়ে নির্মাণকাজ চালানোর অনুমতি দেন। এতে সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে। তাছাড়াও শহরের নির্মাণাধীন বহুতল ভবনেও অনুরূপ সংযোগ রয়েছে এবং তিনি বিভিন্ন শিল্পকারখানাসহ বহুতল ভবনে অবৈধ সংযোগ দিয়ে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন, যা তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে।
ওজোপাডিকো পটুয়াখালীর ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলীর অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সহকারী প্রকৌশলী এসএম আব্দুল করিমকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করলে তিনি বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ম আমলি আদালতে মামলা করেন, মামলা নং- ১৫৩৯ (১৪/১১/২০২২)। দুর্নীতি, অনিয়ম এবং মামলার বিষয় জানতে চাইলে ওজোপাডিকোর পটুয়াখালীর ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাঈনউদ্দীন কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি। ওজোপাডিকোর প্রধান প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মামলা হয়েছে শুনেছি, তবে এখনো কোনো কাগজ পাইনি। পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওজোপাডিকোর ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. আজাহারুল ইসলাম মোবাইল ফোনে বলেন, মামলার কাগজ এবং নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়ে আমরা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।