নারী সাংবাদিকের নামে ভুয়া অশ্লীল ভিডিও ছড়িয়ে হয়রানির অভিযোগে ২ জন আটক
প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৯:৩৬ অপরাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ
বিবিসি বাংলা, ঢাকা
একজন নারী সাংবাদিকের নাম করে একটি ভুয়া অশ্লীল ভিডিও ছড়িয়ে দেবার অভিযোগে পুলিশ দুজনকে আটক করেছে।
পুলিশ বলছে, যাদের আটক করা হয়েছে তারা সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত।
অন্যদিকে যে নারী সাংবাদিকের নামে এই ভুয়া ভিডিও ছড়ানো হয়েছে তিনি সরকার সমর্থক হিসেবে পরিচিত বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ৭১-এ কাজ করেন। নাজনীন মুন্নী ঐ চ্যানেলের একজন সুপরিচিত সাংবাদিক ও উপস্থাপক।
মিজ মুন্নী বিবিসিকে বলেন, অনলাইনে বুলিং ও হয়রানী তার জন্য নতুন কিছু নয়, কিন্তু এবার তিনি যে পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন তা সীমা ছাড়িয়ে গেছে। অন্য একটি অশ্লীল ভিডিওতে তার নাম ব্যবহার করে চালিয়ে দেয়া হচ্ছে।
নাজনীন মুন্নী মনে করেন তার পেশার কারণেই তিনি এ ধরণের হেনস্তার শিকার হচ্ছেন।
“আমি যে টেলিভিশন চ্যানেলে কাজ করি সেটির এক ধরণের রাজনৈতিক পরিচয় আছে। সবাই মনে করে যে এটা আসলে সরকারের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করে বা সরকারের পক্ষ হয়ে কাজ করে। সেদিক থেকে আমরা সবসময় তোপের মুখে থাকি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর।”
ফেসবুকে তার এক ফলোয়ার তাকে প্রথম জানায় যে তার নামে একটি ভুয়া ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়েছে।
“আমার একটা নিজের অফিশিয়াল পেইজ আছে। সেখানে আমার কিছু ফলোয়ার এসে নক দেয়া শুরু করলেন যে আপু আপনার নামে একটা অশ্লীল ভিডিও ছড়ানো হচ্ছে। আপনি জানেন কি না? এক ফলোয়ার যখন আমাকে ইনবক্সে ভিডিওটা পাঠালেন বিষয়টি আমার জন্য খুবই শকিং ছিল, খুবই শকিং ছিল,” বলেন নাজনীন মুন্নী।
সাংবাদিক নাজনীন মুন্নীর নামে এই ভুয়া ভিডিও ছড়ানোর অভিযোগে তিনি গুলশান থানায় একটি মামলা দায়ের করেছিলেন।
এরপর পুলিশ দুজনকে আটক করেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গুলশান জোনের উপ-কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান আজ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, যাদের আটক করা হয়েছে তাদের রাজনৈতিক পরিচয় রয়েছে এবং তারা সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের সাথে জড়িত।
বাংলাদেশে হরহামেশাই নারীরা অনলাইন প্ল্যাটফর্মে তীব্র হয়রানীর শিকার হচ্ছে। কিন্তু বিষয়গুলো নিয়ে অনেকে আইনের আশ্রয় নিতে আগ্রহী হন না।
সাংবাদিক নাজনীন মুন্নী বলছেন, তার নামে ভুয়া অশ্লীল ভিডিও ছড়িয়ে দেবার বিষয়টি তার মধ্যে তীব্র মানসিক চাপ তৈরি করেছে। সেজন্য তিনি জানতে চান এর সাথে কারা জড়িত।
“কে বিশ্বাস করলো আর কে বিশ্বাস করলো না, তার চেয়েও বেশি মনে হচ্ছিল যে এই ঘটনা কে ঘটাচ্ছে আমার তাকে দেখতে হবে।”
নাজনীন মুন্নী বলছেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাকে টার্গেট করা হয়েছে। পুলিশও তাই মনে করছে।