নারায়ণগঞ্জে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে যুবদলের এক কর্মী নিহত হয়েছেন। তাঁর নাম শাওন মাহমুদ ওরফে আকাশ। তিনি নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার এনায়েতনগর ইউনিয়ন যুবদলের কর্মী ছিলেন।
শাওনের মৃত্যুর বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের (ভিক্টোরিয়া হাসপাতাল) আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা শেখ ফরহাদ। তিনি বলেন, শাওন মাহমুদকে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে। তাঁর শরীরে গুলির চিহ্ন আছে। লাশ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
পুলিশ দাবি করেছে, জানমাল রক্ষার্থে তাঁরা কাঁদুনে গ্যাস ও শর্টগানের গুলি ছুঁড়েছে .
জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল প্রথম আলোকে বলেন, পূর্ব অনুমতি ছাড়া বিএনপি নেতা-কর্মীরা সড়ক অবরোধ করে। পুলিশ তাঁদের সরাতে চাইলে তাঁরা পুলিশকে লক্ষ্য করে বৃষ্টির মতো ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে জানমাল রক্ষার্থে পুলিশ কাঁদুনে গ্যাস ও শর্টগানের গুলি ছোঁড়ে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নগরের ডিআইটি বাণিজ্যিক এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের এ সংঘর্ষ হয়। এ সময় কাঁদুনে গ্যাস, গুলি, ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় ওই এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষে চারটি মোটরসাইকেলে আগুনসহ সাত-আটটি যানবাহন ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ সকাল ১০টার দিকে বিএনপির ৪৪ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জেলা ও মহানগর বিএনপির উদ্যোগে শোভাযাত্রা করতে নগরের ডিআইটি বাণিজ্যিক এলাকার আলী আহাম্মদ চুনকা পাঠাগারের সামনে নেতা-কর্মীরা জড়ো হতে শুরু করেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ বিএনপির নেতা-কর্মীদের শোভাযাত্রা করতে বাধা দেয়। এ সময় বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বিএনপির নেতা-কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। অন্যদিকে পুলিশ লাঠিপেটা করে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে পুলিশ বিএনপির নেতা-কর্মীদের লক্ষ্য করে কাঁদুনে গ্যাস ও শটগানের গুলি ছোড়ে। এ সময় শহরের দুই নম্বর রেলগেট ও আশপাশের এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মামুন মাহমুদ বলেন, পুলিশ অতর্কিতভাবে তাঁদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে লাঠিপেটা করেছে। এরপর শটগানের গুলি ও টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করেছে। এতে একজন গুলিবিদ্ধসহ অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছে। গুলিবিদ্ধ যুবদলকর্মী শাওন মাহমুদকে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তিনি মারা গেছেন।