নাজমুল সানী : বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জের কালাবদর ও তেঁতুলিয়া নদীর কাজীর দোয়াণী মোহনা তীরবর্তী শ্রীপুর ইউনিয়ন বর্ষা মৌসুমের শুরুতে ভাঙ্গনের শুরু হয়।গত কয়েক দিনে কালাবদর নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে ভাঙ্গনের তীব্রতা বেড়েছ। কালাবদর নদীর ভাঙ্গনে তীরবর্তী ঐতিহ্যবাহী শ্রীপুর বাজার বিলীন হয়ে গেছে অনেক আগে। বিভিন্ন স্থানে গড়ে ৩ থেকে ৪ মিটার এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বর্ষা মৌসুমে কালাবদর নদীতে ৬ থেকে ৭ সে. মিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। নদীর অব্যহত ভাঙ্গনে বিলীন হওয়ার পথে শ্রীপুর ইউনিয়ন।
স্থানীয় সুত্র জানাগেছে, নদীর ভাঙ্গনে শ্রীপুর ইউনিয়ন এর বসত বাড়ী, জমি, পানের বরজ, সুপারীর বাগান, স্বাস্থ্য ক্লিনিক,স্কুল, ভূমি অফিস, মৃৎশিল্প,মসজিদসহ দুই তৃতীয়াংশের বেশি চলে গেছে কালাবদর ও তেঁতুলিয়া গর্ভে। মানবেতর জীবন যাপন করছে হাজারো মানুষ। এই বর্ষা মৌসুমে নদী ভাঙ্গন ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে। ভাঙন তীব্রতা এতটাই বেগবান যে আনুমানিক গত১ মাসে ১০০’শ একর জমি বিলীন হয়ে গেছে।
শ্রীপুর ইউনিয়নের মহা আতঙ্কের নাম নদী ভাঙ্গন। মেহেন্দিগঞ্জ মান চিত্র থেকে দীরে দীরে বিলীন হয়ে যাচ্ছে শ্রীপুর ইউনিয়ন। উপজেলা পরিষদ থেকে দক্ষিণ দিকে নদী বেষ্টিত এই ইউনিয়নের প্রধান সমস্যা নদী ভাঙ্গন। এটা দীর্ঘ বছরের সমস্যা, যা থেকে রক্ষা পায়নি এ এলাকার মানুষ। নদী ভাঙ্গনের ভয়াবহতায় গ্রাস হচ্ছে শ্রীপুর ইউনিয়ন । এর মধ্যে শ্রীপুর এবং বাহেরচর গ্রামের অবস্থা খুবই ভয়াবহ। নদী ভাঙ্গনে একে একে বিলীন হচ্ছে রাস্তা ঘাট, ফসলি জমি, বাড়ি ঘর, মসজিদ এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এ ভরা বর্ষা মৌসুমে নদী ভাঙ্গনের ক্ষিপ্রতায় মহা আতঙ্কে এলাকার সব শ্রেণী পেশার মানুষ।
গত কয়েক মাস আগে স্থনীয় সংসদ সদস্য পংকজ নাথ এর আমন্তনে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব) জাহিদ ফারুক শামীম এমপি, শ্রীপুর নদী ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শনে এসে ছিলেন। তখন তিনি ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী সমাধানের আশ্বাসে বলে ছিলেন, এ কাজে তাকে একটু সময় দিতে হবে। কিন্তু হঠাৎ করে ভাঙ্গনের তীব্রতা বেড়েছে এখন। শ্রীপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মো: মাহমুদ হাসান বেপারি বলেন শ্রীপুর নদী ভাঙ্গন দীর্ঘ দিনের সমস্যা বিগত সরকারের আমলে নদী রক্ষার জন্য কোন দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা করা হয়নি। অবৈধ ভাবে এই এলাকার নদী থেকে বালি উত্তোলনের কারণে ভাঙ্গনের তীব্রতা বেড়েছে। প্রাকৃতিক এই বিপর্যয় থেকে শ্রীপুর কে রক্ষার জন্য, দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা করে অতিদ্রুত কার্যকর না করলে আরো বড় হুমকির মুখে পড়বে এলাকাবাসী ভিটে মাটি হারিয়ে।
১৪নং শ্রীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ মোল্লা বলেন, ভাঙ্গন প্রতিরোধ ও ক্ষতিগ্রস্থদের পুনর্বাসনের দাবিতে জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডে স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক ঘর তোলার জন্য ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে টিন বিতরণের আশ্বাস দিয়েছেন।
নদী ভাঙ্গনে সর্বশান্ত মো: আল-আমিন বলেন, কালাবদর, তেঁতুলিয়ার পেটে গেছে তাদের বসত ভিটা, বাগান, দোকান ঘর ও জমিজমা। ৩০ লক্ষ টাকার উপরে ক্ষতি হয়েছে। এখন অন্যের বাড়িতে কোনমতে একটি ঘর তুলে থাকছেন। সরকারি কোন সহযোগিতা পাননি।