ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতার কনস্টেবলের পক্ষে কর্মকর্তাকে আসামি করে পাল্টা মামলা
প্রকাশ: ২৯ আগস্ট, ২০২২, ৪:০২ অপরাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক :
কীর্তনখোলা নদীতে ঝাঁপিয়ে পালানোর চেষ্টাকারী পুলিশ কনস্টেবলকে ক্রসফায়ারের হুমকি ও মারধরের অভিযোগে মুন্সীগঞ্জ টুরিস্ট পুলিশের এসআইসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলায় পুলিশ কনস্টেবল কাওছারের বিরুদ্ধে ‘ধর্ষণ’ মামলার বাদী তরুণীর মা এবং খালাকেও আসামি করা হয়েছে।
রোববার বরিশাল অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতার বরিশাল জেলা পুলিশে কর্মরত কনস্টেবল কাওছারের ভাই ফেরদাউস হোসেন বাবু। তিনি জানান, আদালত মামলাটি গ্রহণ করে বরিশাল পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, বরিশাল জেলা পুলিশে কর্মরত কনস্টেবল কাওছার বরিশাল নগরীর ১৩নং ওয়ার্ড দক্ষিণ আলেকান্দা নূরিয়া স্কুলের পিছনে বুকভিলা গলিতে নাসিরের বাসায় ভাড়া ওঠেন। বৃহস্পতিবার নাসিরের স্ত্রী মোবাইলে কাওছারকে তার বাসায় ডাকেন। সেখানে আগে থেকেই অপেক্ষা করছিলেন এএসআই হাফিজুর রহমানসহ র্যাবের কয়েকজন লোক। উপস্থিত ছিল বাড়িওয়ালার স্ত্রী (ধর্ষণ মামলার বাদীর মা), ও তার বোন (ধর্ষণ মামলার বাদীর খালা)। এএসআই হাফিজুর নিজেকে র্যাবের লোক পরিচয় দিয়ে কনস্টেবল কাওছারের চোখ বেঁধে ফেলেন এবং কপালে পিস্তল ঠেকিয়ে সঙ্গে থাকা ২০ হাজার টাকা ও চেইন নিয়ে যায়। কাওছারের স্ত্রী স্বামীর খোঁজ করতে গিয়ে জানতে পারে তাকে ত্রিশ গোডাউন এলাকায় তাকে আটকে নির্যাতন করা হচ্ছে। সেখানে গিয়ে দেখে কাওছারকে ইট নিয়ে মারধর করা হচ্ছে। এ সময়ে এএসআই হাফিজুর কনস্টেবল কাওছারের হাতে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে হত্যার জন্য নদীতে ফেলে দেয়।
এদিকে রুবাইয়া আক্তার রুবি তার মেয়েকে (ধর্ষিত) বিয়ে করতে বলেন। অন্যথায় ২০ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে। এসময়ে কাওছার ওখানকার লোকজনের সাহায্য চাইলে লোকজন এগিয়ে এসে উদ্ধার করে। পরে পুলিশ গিয়ে আহত কাওছারকে থানায় নিয়ে আসেন। বর্তমানে কনস্টেবল কাওছার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
মামলার বাদী ফেরদাউস হোসেন বাবু বলেন, আমি ওই মেয়ের মাকে বলেছি আপনার মেয়েকে দরকার হলে কাওছার দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে নেবে। কিন্তু তারা তাতে রাজি হননি। এএসআই হাফিজুর রহমান আমার কাছে সরাসরি ২০ লাখ টাকা দাবি করেছেন। এখন আমি চাই সঠিক তদন্তের মাধ্যমে আসল সত্য উদঘাটিত হোক। যদি আমার ভাই অপরাধী হতেন তাহলে তারা আগেই আইনের আশ্রয়ে নিতে পারতেন। কিন্তু তারা তা নাকচ করে মুন্সীগঞ্জ টুরিস্ট পুলিশের এএসআই হাফিজুর রহমান বরিশাল এসে আমার ভাইকে ধরে নিয়ে মারধর করে, হ্যান্ডকাপ পরায়। এটা কি সে পারে? মামলার বিষয়ে এএসআই হাফিজুর রহমান মোবাইলে ফোনে কথা বলতে রাজি হননি।
প্রসঙ্গত, ধর্ষণের মামলায় গ্রেফতার কনস্টেবল কাওছার বর্তমানে কারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি বাড়িওয়ালার মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে ধর্ষণ করায় অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পরে ওই তরুণী। সেই তরুণী গিয়ে ত্রিশ গোডাউন এলাকায় কাওছারকে ধরলে সে নদীরে ঝাঁপিয়ে পড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। পরে পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।