সোমবার ৭ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ২৩শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ই-পেপার   সোমবার ৭ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ



দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত মহেড়ার রাজবাড়ি
প্রকাশ: ১২ জুলাই, ২০২২, ১:১১ অপরাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ

দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত মহেড়ার রাজবাড়ি

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা
কোরবানির ঈদের ছুটিতে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে মহেড়ার রাজবাড়িসহ (বর্তমান টাঙ্গাইল পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার) বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে এখন দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠছে। ঈদ উপলক্ষে দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড় বাড়ছে প্রতিটি বিনোদন স্পটে। বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার দর্শনার্থী আসছে মহেড়ার জমিদার বাড়ি (রাজবাড়ির) দৃষ্টি নন্দন  প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে।

মঙ্গলবার (১২ জুলাই) বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিলে স্থানীয় লোকজন জানায়, কোরবানি ঈদের ছুটিতে বিনোদন প্রেমীরা পরিবার পরিজন নিয়ে বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। একদিকে বিভিন্ন এলাকায় কানায় কানায় পানি অপর দিকে বিনোদন কেন্দ্রে বাড়ছে আকর্ষণীয় নানা আয়োজন। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে দর্শনার্থীর উৎসাহের শেষ নেই। মির্জাপুর উপজেলার উল্লেখযোগ্য বিনোদন কেন্দ্র হচ্ছে আজগানা ইউনিয়নেসর গবিরাকুড় বিনোদন স্পট, ধেরুয়া জল কুটির, মির্জাপুর ট্রেন স্টেশন, মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ, কুমুদিনী কমপ্লেক্স, ওয়ার্শি ব্রিজ, পাকুল্যা জমিদার ও পাকুল্যা শাহী মসজিদ, বুধিরপাড়া বিল, আজগানা, তরফপুর ও বাঁশতৈল ইউনিয়নে কয়েকটি বিনোদন স্পটসহ রয়েছে নৌ ভ্রমণ।

বেশি দর্শনার্থী আসছেন মহেড়ার রাজবাড়ি (জমিদার বাড়ি দেখতে। এখানে রয়েছে নানা আয়োজন। প্রায় দেড়শ বছরের পুরাতন হলেও এর দৃষ্টি নন্দন কারু কাজ এখনও দর্শনার্থীদের নজর কেড়ে নেয়। ১৮৯০ সালে রাজা আনন্দ মোহন রায় চৌধুরী ও তার চার ভাই মিলে ৪৮ দশমিক ৮৪ একর জমির উপর জমিদার বাড়ি নির্মাণ করেন। এখানে বসেই তারা রাজ্য কাজ পরিচালনা করতেন। এখানে চার ভাইয়ের আলাদা আলাদা দৃষ্টি নন্দন ভবন নির্মাণ করেন। বিশাল বিশাল ভবনে সুদক্ষ কারিগর দিয়ে তৈরি করেন নানা স্থাপনা। এখানে গড়ে তুলেন রানী মহল, নহবত খানা, অতিথি ভবন, মহারাজ লজ, আনন্দ লজ, অন্ধর মহল, বিশাখা সাগর,পাসরা পুকুরসহ নানা স্থাপনা। ব্রিটিশদের শাসনামলে ১৯৪৭ সালের পর দেশ ভাগ হওয়ার পর নানা প্রতিকূলতার মধ্যে জমিদারদের মধ্যে কয়েকজন দেশ ত্যাগ করে চলে যান। যারা ছিলেন তারাও ১৯৭১ সালে সমস্ত স্থাপনা ফেলে পালিয়ে যায়। বিশাল এই সম্পত্তি পরিত্যক্ত হয়ে পরে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের নির্দেশনায় ও টাঙ্গাইলের কৃতি সন্তান সাবেক মন্ত্রী জননেতা আব্দুল মান্নানের সার্বিক সহযোগিতায় ১৯৭২ সালে প্রথমে মহেড়া জোনাল পুলিশ ট্রেনিং স্কুল এবং ১৯৯০ সালে পুনাঙ্গ মহেড়া পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার গড়ে তোলা হয়।

এ ব্যাপারে মহেড়া পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের সহকারী পুলিশ সুপার মো. রাজিবুল হাসান বলেন একজন ডিআইজির নেতৃত্বে পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার পরিচালনা এবং রাজবাড়ির মুল ভবনগুলো ঠিক রেখে সকল স্থাপনার পরিবর্তন করার উদ্যোগ নেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ইতিমধ্যে রাজবাড়ি নানা সাজে সজ্জিত করা হয়েছে এবং গড়ে তোলা হয়েছে বিশাল বিশাল ভবন ও একাডেমিক ভবন। গড়ে তোলা হয়েছে মিনি চিড়িয়াখানা ও শিশু পার্ক। মহেড়ার রাজ বাড়ি দেখতে দর্শনার্থীরা জানিয়েছেন, এখানকার স্থাপনাগুলোর সৌন্দর্য সত্যিই নজর কেড়ে নেয়। রাজধানী ঢাকার উত্তরা, মহাখালী, যাত্রাবাড়ি, কলাবাগান এবং গাবতলী ও সাভার থেকে বাসে এবং কমলাপুর, বিমানবন্দর ও ক্যান্টনমেন্ট থেকে ট্রেনেও অনায়াসে মহেড়ার রাজবাড়িতে অল্প সময়ে আসা যায়।  প্রবেশ মূল্য ১০০শ টাকা করা হয়েছে। মহেড়ার রাজবাড়ি দেখতে প্রবেশ মূল্য কমানোসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা আরও বাড়ানো হবে প্রশাসনের কাছে এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসীর এবং দর্শনার্থীদের।

এ ব্যাপারে মহেড়া পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের কমান্ডার (ডিআইজি) মো. ময়নুল ইসলাম বলেন, মহেড়ার রাজবাড়ি এখন বাংলাদেশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার। এখানে পুরাতন স্থাপনাগুলো সরকারী নির্দেশনা ও সহযোগিতায় নানা সাজে সজ্জিত করা হয়েছে এবং দর্শনার্থীদের দেখানোর নানা সুযোগ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।

এ ব্যাপারে মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. হাফিজুর রহমান ও মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম  বলেন, মহেড়ার জমিদার বাড়ি আমাদের টাঙ্গাইল তথা মির্জাপুর উপজেলাবাসির জন্য গর্বের। মহেড়ার রাজবাড়িতে বর্তমানে বাংলাদেশের দ্বিতীয় পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার গড়ে উঠেছে। সরকার এই রাজবাড়ির ইতিহাস ও ঐতিহ্য ধরে রাখার নানা উদ্যোগ ও উন্নয়ন করে যাচ্ছেন। এছাড়া মির্জাপুর উপজেলার প্রতিটি বিনোদন কেন্দ্রেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে দর্শনার্থীদের নিরাপত্তাসহ সার্বিক সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।

টাঙ্গাইল-৭ মির্জাপুর আসনের মাননীয় জাতীয় সংসদ সদস্য ও ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য খান আহমেদ শুভ বলেন, মহেড়ার রাজবাড়ি (বর্তমানে পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার) আমাদের মির্জাপুর তথা টাঙ্গাইলবাসির জন্য গর্বের বিষয়। এখানকার পুরাতন স্থাপনাগুলো নতুন ভাবে সজ্জিত করা হয়েছে। বর্তমান সরকার পুলিশের পেশার মানউন্নয়নে প্রশিক্ষণের পাশাপাশি  স্থাপনাগুলো বিনোদন প্রেমীদের দেখার সুযোগ করে দিচ্ছেন। ভবিষ্যতে এই রাজবাড়ির সৌন্দর্য বর্ধন এবং দর্শনার্থীদের নানা সুযোগ সুবিধা বাড়ানোর জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সকল প্রকার সহযোগিতা করা হবে।




এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

প্রধান উপদেষ্টা : প্রফেসর শাহ্ সাজেদা ।

উপদেষ্টা সম্পাদক : সৈয়দ এহছান আলী রনি ।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মামুনুর রশীদ নোমানী ।

যোগাযোগ: আদালত পাড়া সদর রোড,বরিশাল।

ইমেইল: nomanibsl@gmail.com

মোবাইল: 01713799669/01711358963

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি।
© বরিশাল খবর সম্পাদক মামুনুর রশীদ নোমানী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

  নলছিটির মগড় ইউনিয়নবাসীর সেবা করতে চান মোঃ সাইফুজ্জামান সুমন তালুকদার   প্রাণ ফিরছে বরিশাল নগরীর ৭ খালে   বেতারের সঙ্গীত শিল্পী (পল্লীগীতি) হিসেবে মনোনীত হলেন অ্যাড: জুয়েল   বরিশালের মাহমুদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্বেচ্ছাচারী প্রধান শিক্ষিকা স্ট্যান্ড-রিলিজ !   বরিশাল ল’ কলেজে দুর্নীতি, উন্নয়নের নামে অর্থ আত্মসাৎ   অনিয়ম দুর্নীতির আতুরঘর বরিশাল বেতার : চলছে জোড়াতালি দিয়ে   বরিশাল ডাকঘরের ক্যাশিয়ার নুরুল কবিরের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ   দেড় লাখ মামলা মাথায় বিএনপির ৫০ লাখ নেতাকর্মীর   আলু শুন্য বরিশালের পাইকারী বাজার   বাংলাদেশে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাধাদানকারীদের ওপর মার্কিন ভিসানীতি শুরু   মাদারীপুরের হিমাগারে ৩০ হাজার বস্তা, বাজারে আলুর কৃত্রিম সংকট   যুদ্ধ স্যাংশন সংঘাতের পথ এড়াতে প্রধানমন্ত্রীর আহবান   Mamunur Rashid Nomani charged with violating Bangladesh’s Digital Security Act   ঝালকাঠিতে রোহিঙ্গা আটক এসেছিলো ভোটার হওয়ার জন্য   সাঈদুর রহমান রিমনকে নিয়ে দিলিপ কুচক্র মহলের ষড়যন্ত্রের জবাব!   বাবুগঞ্জে ইজিবাইক ছিনতাই চক্রের চার সদস্য আটক   নলছিটিতে ৫০তম গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ   অপরাধ ঘটাতে আগাম ‘রেকি‘ করে গেছেন তারা!   ঝালকাঠি কারাগার: কু-প্রস্তাবের দাম দশ লাখ টাকা! জেলার বহাল তবিয়তে   রাজাপুর সাব-রেজিস্ট্রার অফিস দুর্নীতির আখড়া