প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আটক করে রাখার ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে মন্ত্রণালয়। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব (উন্নয়ন) মো. সাইফুল্লাহিল আজমকে আহ্বায়ক করে এ কমিটি গঠন করা হয়। গতকাল সোমবারের তারিখে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
কমিটির দুই সদস্য হলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব মো. আবদুছ সালাম ও মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান মোল্লা।
পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য গতকাল সোমবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে গেলে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে সেখানে প্রায় ছয় ঘণ্টা আটকে রেখে হেনস্তা করা হয়। তাঁকে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য বারবার বলা হলেও তা দেওয়া হয়নি। পরে রাত সাড়ে আটটার দিকে পুলিশ তাঁকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যায়। ওই দিন রাত পৌনে ১২টার দিকে পুলিশ জানায়, রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে মামলা হয়েছে। তাঁকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আজ পুলিশ তাঁকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করলেও আদালত তা নাকচ করে দেন। রোজিনা ইসলাম এখন কারাগারে।
রোজিনা ইসলাম দেশের নামকরা সাংবাদিকদের একজন। তিনি প্রথম আলো পত্রিকার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক। সাংবাদিকতার জন্য তিনি বেশ কিছু পুরস্কারও পেয়েছেন। কিন্তু স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের তদন্ত কমিটির অফিস আদেশে রোজিনা ইসলামের সাংবাদিক পরিচয়টিই অগ্রাহ্য করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবের একান্ত সচিবের কক্ষে জনৈক রোজিনা ইসলাম নামীয় এক নারী ১৭ মে বেলা দুইটা ৫৫ ঘটিকায় একান্ত সচিবের অনুপস্থিতিতে প্রবেশ করে অসৎ উদ্দেশ্যে সরকারি গুরুত্বপূর্ণ/মূল্যবান গোপনীয় কাগজপত্রাদির (ডকুমেন্টস) ছবি তোলা এবং হার্ড কপি নিজের শরীরে লুকিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় আটক হওয়ার ঘটনা তদন্ত করতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হলো।
তদন্ত কমিটির অফিস আদেশে আগেই রোজিনা ইসলামকে দোষী সাব্যস্ত করে বলার পর এই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন আদৌ সঠিক হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে গুরুত্ব পেয়েছে রোজিনা ইসলামকে গ্রেপ্তারের খবর
এদিকে রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরকারী স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব মো. শিব্বির আহমেদ ওসমানীর দপ্তর বদল করা হয়েছে। তাঁকে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের জনস্বাস্থ্য-১ অধিশাখা থেকে জনস্বাস্থ্য-২ অধিশাখায় পদায়ন করা হয়েছে। গত সোমবারের অফিস আদেশে এই বদলি করা হলেও আজ সেটি জানা যায়। একই আদেশে আরও পাঁচ কর্মকর্তার দপ্তর বদল করা হয়েছে