ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার পথে বাধা বলে মনে করেন দেশের ৭৯ শতাংশ সাংবাদিক। সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিসের এক জরিপে এ তথ্য ওঠে এসেছে। কর্মক্ষেত্রে সুরক্ষা ও নিরাপত্তা বিষয়ে দেশের আটটি বিভাগের ১০০ জন সাংবাদিকের ওপর এ জরিপ চালানো হয়।
জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৬৩ শতাংশ ছিলেন ঢাকা বিভাগের, বাকি ৩৭ শতাংশ দেশের অন্য সাতটি বিভাগে কর্মরত। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৭০ শতাংশ পুরুষ এবং ৩০ শতাংশ নারী। ২০২০ সালে মহামারীর প্রথম লকডাউনের সময়কে বিবেচনায় নিয়ে পরিচালিত জরিপটি ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের আগস্টের মধ্যে সম্পন্ন করা হয়।
জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, উত্তরদাতাদের ৭৯ শতাংশ বলেছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ তাদের স্বাধীনভাবে কাজ করার ক্ষেত্রে একটি বাধা ছিল। ২৩ শতাংশ অংশগ্রহণকারীর মতে, মহামারীকালে কাজ করার সময় বাহ্যিক হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন। ১৩ শতাংশ সাংবাদিক মহামারীকালে তাদের সম্পাদকদের দ্বারা বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন।
এ জরিপে কর্মক্ষেত্রে কোভিড মহামারীর প্রভাব, সাংবাদিকতার মৌল তাত্ত্বিক বিষয়াদি, নৈতিকতা, সামাজিক অবস্থান ইত্যাদি বিষয়েও তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এসব ক্ষেত্রেও কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে।
জরিপে দেখা গেছে, বাংলাদেশের সাংবাদিকরা উচ্চহারে করোনাভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হয়েছেন। উত্তরদাতাদের মধ্যে ৩৪ শতাংশ করোনাভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হয়েছিলেন। আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে কর্মরত সাংবাদিকরা সবচেয়ে বেশি সংক্রমিত হয়েছেন ৪১ শতাংশ।
গবেষণার মতামত বিশ্লেষণ করে সাংবাদিকদের যেকোনো দুর্যোগ বা মহামারীর সময় তাদের দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত করার জন্য কিছু সুপারিশ প্রদান করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে, পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ, ভ্যাকসিন এবং সঠিক স্বাস্থ্য বজায় রাখার মতো উপযুক্ত আর্থিক ও মানসিক সহায়তা নিশ্চিত করা। প্রতিটি সম্ভব্য ঝুঁকি কমানোর উপর জোর দিয়ে নিরাপত্তা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা এবং এমন পরিবেশ তৈরি করা যেখানে সাংবাদিকরা কোনো অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক চাপ ছাড়াই কাজ করতে পারে।