দখল আর দূষণে নাব্যতা হারাচ্ছে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার প্রাণ ঐতিহ্যবাহী কালাইয়া খাল। এই খালের পাড়েই দক্ষিণাঞ্চলের প্রসিদ্ধ বাণিজ্যকেন্দ্র কালাইয়া হাট। প্রতিবছর এখান থেকে সরকার প্রায় দেড় কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করে। একসময়ের শ্রোতস্বীনি খালটি দখল দুষণে আবর্জনার ভাগারে পরিণত হয়েছে। জৌলুস হারাতে হারাতে এখন করুণ দশায় পরিণত হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন থেকে কালাইয়া খাল দখল করে এক শ্রেণীর লোক বিশেষ পদ্ধতিতে ‘ঝাড়া’ দিয়ে মাছ শিকার করছে। এছাড়াও খালের দুই তীর দখল করে গড়ে উঠেছে অসংখ্য অবৈধ স্থাপনা।
এদিকে কালাইয়া হাটের সব ময়লা আবর্জনা খালে ফেলা হচ্ছে। খালটির দুই তীরে অসংখ্য টয়লেটের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। অব্যাহত দখল, দূষণ আর নাব্যতা হারিয়ে কালাইয়া খালে নৌযান চলাচল করতে পারে না।
যুগ যুগ ধরে দক্ষিণাঞ্চলের ধান, চাল, গরু ও মহিষের মোকাম ছিল কালাইয়া হাট। প্রতি সোমবার এখানে সাপ্তাহিক হাট বসে। তাই প্রতি সোমবার দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বেপারীদের মিলনমেলায় পরিণত হয় কালাইয়া হাট। ধান, চাল, গরু ও মহিষের বাজারে প্রতি সপ্তাহে কয়েক কোটি টাকা লেনদেন হয়।
সরেজমিন দেখা গেছে, কালাইয়া খালের এই করুণ দশার কারণে প্রায় ৪ বর্গ কিলোমিটার আয়তন বিশিষ্ট কালাইয়া হাটও জৌলুস হারাতে বসেছে। জনগুরুত্বপূর্ণ কালাইয়া খাল নাব্যতা হারানোর কারণে নৌ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। কয়েকমাস আগে ড্রেজিং করা হলেও জোয়ার ভাটার উপর নির্ভর করে মালবাহী নৌযান চলাচল করতে হচ্ছে।
ঢাকা-কালাইয়া রুটের যাত্রীবাহী লঞ্চ ঈগল এর সুপারভাইজার আমির হোসেন বলেন, কয়েকবার ড্রেজিং করার পরও নাব্যতা ফিরে আসেনি এই খালে। ড্রেজিংয়ের পর জোয়ারের সময় পানি মেপে আমাদেরকে সান্তনা দেওয়া হয়। কিন্তু ভাটার সময় বড় নৌযান প্রবেশ করতে পারে না।
এছাড়াও ভাটার সময় কালাইয়া হাটে কোন মালবাহী কার্গো প্রবেশ করতে পারছে না। ফলে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। কালাইয়া ধান চাল আড়তদার সমিতির সভাপতি শহিদুল ইসলাম শাহিন বলেন, জোয়ারের সময় ট্রলার আকৃতির ছোট নৌযানে ধান চাল পরিবহন করতে হচ্ছে। এতে পরিবহন খরচ বেশী হচ্ছে।
এ বিষয়ে কালাইয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফয়সাল আহমেদ মনির মোল্লা বলেন, সম্প্রতি লঞ্চঘাট থেকে তেঁতুলিয়া নদী পর্যন্ত খালটি ড্রেজিং করা হয়েছে। ময়লা ফেলার বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।