এক কর্মচারীর বদলি নিয়ে বরিশাল জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী এম এম মহিউদ্দিন মাহিন ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম জাহাঙ্গীরের মধ্য বিরোধ উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। সোমবার দুপুরে চেয়ারম্যানের দপ্তরে প্রধান নির্বাহীর সঙ্গে চেয়ারম্যানের ছেলের বাগ্বিতণ্ডা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ সময় শিহাব ছাত্রলীগের কিছু কর্মীকে জেলা পরিষদে ডেকে আনলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে। প্রধান নির্বাহী এম এম মহিউদ্দিন মাহিন নিরাপত্তার জন্য নিজ কক্ষে গিয়ে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে রাখেন। চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী মামুনকে বদলিকে কেন্দ্র করে এ বিরোধ প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে বলে জানা গেছে।
বরিশাল জেলা পরিষদের বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, দুই দিন আগে কর্মচারী মামুনকে মারধর করে চেয়ারম্যানের গাড়িচালক। বিষয়টি প্রধান নির্বাহী জানতে পেরে মামুনকে ডাকবাংলো থেকে বদলি করে অফিসে ফিরিয়ে আনেন। অপর দিকে গাড়িচালকের মাধ্যমে প্রভাবিত হয়ে চেয়ারম্যান কর্মচারী মামুনকে আগৈলঝাড়ায় বদলির আদেশ দেন। এ ঘটনা থেকেই বিরোধ চরম আকার ধারণ করে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহীর মধ্যে।
জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী মহিউদ্দিন মাহিন বলেন, চতুর্থ শ্রেণির অস্থায়ী কর্মচারী মো. মামুনের পদায়ন ছিল জেলা পরিষদ ভবনসংলগ্ন ডাকবাংলাতে। রোববারের আগে তাঁকে জেলা পরিষদ দপ্তরে পদায়ন দেওয়া হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর কর্মচারী মামুনকে আগৈলঝাড়া উপজেলা ডাকবাংলোতে বদলি করার আদেশ দেন।
প্রধান নির্বাহী আরও বলেন, ‘পদাধিকার বলে প্রশাসনিক সব কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব আমার। কর্মচারী বদলি-নিয়োগের ক্ষমতাও এর মধ্য পড়ে। চেয়ারম্যান শুধু উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবেন। সে হিসেবে মামুনকে বদলি করার এখতিয়ার চেয়ারম্যানের নেই। এ বিষয়টি জানাতে চেয়ারম্যানের কক্ষে যাই। তখন চেয়ারম্যান আমার সঙ্গে রূঢ় আচরণ করে বলেন, “চেয়ারম্যান হিসেবে সবকিছু করার ক্ষমতা তার আছে।” চেয়ারম্যানের পাশে থাকা তাঁর ছেলে আতিকুর রহমানও ঔদ্ধত্যপূর্ণ ব্যবহার করেছেন। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’
অভিযোগের বিষয়ে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর বলেন, ‘পরিষদের সব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবেন প্রধান নির্বাহী। তিনি সব কাজের আগে চেয়ারম্যানের সঙ্গে পরামর্শ করবেন। মামুনকে ডাকবাংলো থেকে দপ্তরে বদলি করার বিষয়টি প্রধান নির্বাহী আমার সঙ্গে আলোচনা করেননি। আমি অন্য মাধ্যমে শুনে প্রধান নির্বাহীকে নিষেধও করেছিলাম। তারপরও বদলির আদেশ দেওয়ায় দুপুরে প্রধান নির্বাহীর কাছে কারণ জানতে চাই। তখন প্রধান নির্বাহী আমার সঙ্গে উল্টো রূঢ় আচরণ করে চেয়ারে ধাক্কা দিয়ে উঠে দাঁড়ান। তখন সেখানে আমার ছেলে প্রধান নির্বাহীর কাছে এ ধরনের আচরণে কারণ জানতে চান।’