স্টাফ রিপোর্টার ॥ সম্প্রতি অতিবৃষ্টি ও অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি বাড়ায় বরগুনা জেলাজুড়ে বিভিন্ন জমি আবাদি ঘাস তলিয়ে গেছে। এতে দেখা দিয়েছে গো-খাদ্যের তীব্র সংকট। পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে কৃষকের গচ্ছিত খড়। ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন নিচু এলাকার খামারিরা। শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) জেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম ঘুরে গো খাদ্য সংকটের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। জানা গেছে, গত শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত হয়। এর এর প্রভাবে টানা পাঁচদিন ধরে বৃষ্টিপাত হয়। জোয়ারের পানিতে ডুবে যায় বরগুনার নিচু এলাকা। এর ফলে গো খাদ্যের সংকট দেখা যায়। যা এখন প্রবল আকার ধারণ করেছে।
কারণ, অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে ঘাসের জমি, আউশ, বোনা আমন সব ডুবে গেছে। বোরো ধানের খড় এমনিতেই কম হয়। যে কারণে গো খাদ্যের চাহিদা মিটছে না। এসব খড় গো-খাদ্যের চাহিদা মেটাতে পারে না। ফলে গৃহস্থরা সারা বছর আমনের খড় দিয়েই চাহিদা মেটান। বৃষ্টিতে ও পানিতে ডুবে অনেকের খড় পচে গেছে। এ অবস্থায় গরু প্রস্তুত করতে ব্যয় আরও বাড়ছে। ফলে আগামীতে পশুর দাম বেড়ে যেতে পারে। এলাকার খামারিরা জানান, অন্তত ১০ দিনের গো-খাদ্য সরকারি অথবা বেসরকারিভাবে সহযোগিতা পাওয়া গেলে সংকট থেকে কিছুটা সহজ হবে। নলটোনা ইউনিয়নে অধিকাংশ বাসিন্দাদের পেশা গবাদি পশু পালন। টানা বৃষ্টিপাতের কারণে তাদের এলাকার জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। যে কারণে ঘাস পচতে শুরু করেছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা। অতিবৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা উপজেলার খামারি ও গৃহস্থরা গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছে। অন্যদিকে চোর-ডাকাতের ভয় এবং গো-খাদ্য সংকটে রাতের ঘুম উধাও হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেন কয়েকজন খামারি। মালেক মুন্সি নামে এক খামারি জানান, পরিবারের ৪ সদস্যসহ মোট ৬টি গরু পালেন তারা। খড়ের দাম ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বেড়ে গেছে। এতে গরু পালা তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ছে। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে পশুর খাদ্যের সহায়তা কামনা করেন তিনি। বরগুনা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, অতিবৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতার কারণে গো-চারণ ভূমি ও আবাদি জমির নেপিয়ার ঘাস এবং অন্যান্য কাঁচা ঘাস পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। কিন্তু গবাদিপশুর কোনো রোগবালাই দেখা দেয়নি। সংকট মোকাবিলায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান। শুধু বরগুনাতে নয় এ অবস্থা দক্ষিণাঞ্চলের সর্বএ। এমনটা চলতে থাকলে আগামীতে পশু মৃত্যুর হার বাড়বে। গো -খাদ্যের দিকে সরকারের দৃষ্টি দেয়া উচিত বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।