জমিদখল ও মারামারি মামলায় চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতার অন্যরা হলেন- বাসন থানার তেলীপাড়া এলাকার মো. মোতালিব হোসেনের ছেলে মো. সাজ্জাদ হোসেন (৩৮), পালের পাড়া এলাকার মো. রজব আলীর ছেলে মো. আশিকুর রহমান (৩২), বাড়িয়ালী এলাকার ইয়াব উদ্দিনের ছেলে ফাহিম হোসেন ওরফে হৃদয় (২২), ভোড়া বাইপাস এলাকার আ. জব্বারের ছেলে জমশের আলী (৪৪), দীঘির চালা এলাকার মৃত পেটার আলীর ছেলে মোস্তাক আহাম্মেদ (২২), সদর থানার শিমুলতলী এলাকার আব্দুস সামাদের ছেলে জুয়েল রহমান (২৫), মতিউর রহানের ছেলে খালিদ সাইফুল্লাহ ওরফে জুলহাস (৩০) ও গাছা থানার শরিফপুর এলাকার আবুল হোসেন মণ্ডলের ছেলে মাহবুব হাসান ওরফে সাব্বির হোসেন (১৮)।
দীঘির চালা এলাকার বাসিন্দা মো. ইসমাইল হোসেন এ মামলাটি করেন। মামলায় মাহিয়া মাহি ও তার স্বামী রাকিব সরকারসহ ২৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে পুলিশের সুনাম ক্ষুণ্ন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যক্তিগত বিষোদগার ছড়ানোর অভিযোগে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
মাহি ওমরাহ পালন শেষে দেশে ফিরলে তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম। এর আগে শুক্রবার বাসন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রোকন মিয়া বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন।
মাহিকে আজ দুপুর সোয়া ১টার দিকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে- ৫ হাজির করলে বিচারক ইকবাল হোসেন তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। দুপুর পৌনে ২টার দিকে মাহি গাজীপুর জেলা কারাগারের পৌঁছান বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিনিয়র জেল সুপার মো. আনোয়ারুল করিম।
স্বামীর সঙ্গে ওমরাহ পালন করতে যান মাহি। শুক্রবার ভোরে সৌদি আরবের মক্কা শহর থেকে ফেসবুক লাইভে তার স্বামী রাকিব সরকারের ‘সানিরাজ কার প্যালেস’ নামে গাড়ির শোরুম ভাঙচুর ও হামলার অভিযোগ করেন।
এ সময় মাহি ফেসবুক লাইভে বলেন, ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের পূর্ব পাশে ‘সনিরাজ কার প্যালেস’ নামে তার স্বামীর একটি গাড়ির শোরুম রয়েছে। সেখানে দুর্বৃত্তরা হামলা করেছে। তারা শোরুমের গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে আসবাব, দরজা-জানালা, টেবিল-চেয়ার ভাঙচুর করছে। শোরুমের সাইনবোর্ড খুলে ফেলেছে। অফিসকক্ষ তছনছ করে টাকাপয়সা লুট করে নিয়ে গেছে। তাদের প্রতিপক্ষ ইসমাইল ওরফে লাদেন ও মামুন সরকারের নেতৃত্বে লোকজন নিয়ে ওই শোরুম দখল করে নিচ্ছে। আর এই কাজে সহযোগিতা করেছেন জিএমপি কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম।
তিনি অভিযোগ করেন, পুলিশ কমিশনার নজরুল ইসলাম প্রতিপক্ষের কাছ থেকে দেড় কোটি টাকা ‘ঘুষ’ নিয়ে বিনিময়ে তাদের গাড়ির শোরুম দখল করে দিচ্ছেন।
২৫ মিনিটের বেশি সময়ে ফেসবুক লাইভে তিনি লোকজনকে ডেকে আনেন এবং পুলিশ কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলামকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে বিভিন্ন কথা-বার্তা বলেন। এ সময় মাহির স্বামী রাকিব সরকার পাশেই ছিলেন। এর পর তিনি ফেসবুকে বেশ কয়েকটি পোস্ট করেন এই হামলা নিয়ে।
মাহি ফেসবুক লাইভে এও বলেন, তিনি দেশে ফিরে শনিবার বিকাল ৫টার দিকে ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজ সংলগ্ন ‘সানিরাজ কার প্যালেসে’ সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘটনার বিস্তারিত জানাবেন।
এদিকে শনিবার দুপুরে মোল্লা নজরুল ইসলাম তার কার্যালয়ের কনফারেন্স হলে প্রেস ব্রিফিং করে উল্লেখিত বিষয় নিশ্চিত করে বলেন, চিত্রনায়িকা মাহিয়া তার ফেসবুক লাইভে পুলিশের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও আমাকে জড়িয়ে ব্যক্তিগত বিষোদগার করেছেন। যা কখনো মেনে নেওয়া যায় না।
তিনি আরও বলেন, মাহিয়া মাহির স্বামী রাকিব সরকারের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে খুন, ধর্ষণ ও অস্ত্র আইনের মতো গুরুতর অভিযোগে তিনটি মামলার ফাইনাল রিপোর্ট প্রদান করা হয়েছে। বিষয়গুলো খতিয়ে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।