বিবিসি:
ইউক্রেনজুড়ে নতুন করে শুরু করা রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছে। দানিপ্রো শহরের একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকে ওই হামলায় এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
কিয়েভ, খারকিভ এবং ওডেসা শহরের ওপরেও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে।
একাধিক শহরের বিদ্যুৎ স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত করার পর ইউক্রেনের বেশিরভাগ এলাকা এখন জরুরি ব্ল্যাকআউট বা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে।
এর আগে যুক্তরাজ্য জানিয়েছিল যে, ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা জোরালো করতে সহায়তার অংশ হিসাবে তারা দেশটিকে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর অন্যতম শক্তিশালী যুদ্ধাস্ত্র চ্যালেঞ্জার-২ ট্যাঙ্ক সরবরাহ করবে।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেছেন, রাশিয়ান বাহিনীকে হটিয়ে দিতে সহায়তা করবে এসব ট্যাঙ্ক।
তবে এর পাল্টা জবাবে রাশিয়া বলেছে, ইউক্রেনকে আরও অস্ত্র দেয়া হলে তা রাশিয়ার অভিযানকে আরও ব্যাপক করে তুলবে এবং তাতে অনেক বেশি সাধারণ মানুষ হতাহত হবে।
‘’এজন্য (রাশিয়ার হামলা ঠেকানো) কী করা দরকার? আমাদের পশ্চিমা বন্ধু দেশগুলোর গুদামে যেসব অস্ত্র রয়েছে আর আমাদের সৈন্যরা যেসব অস্ত্রের জন্য অপেক্ষা করছে, সেগুলো দরকার,’’ একটি ভিডিও বার্তায় বলেছেন মি. জেলেনস্কি।
তিনি জানিয়েছেন, ইউক্রেনের বাহিনী ২০ থেকে ৩০টি ক্ষেপণাস্ত্র আকাশেই ধ্বংস করে দিয়েছে।
এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় সবচেয়ে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে দানিপ্রো শহরে। সেখানকার একটি নয় তলা ভবনের প্রবেশমুখে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত করলে বেশ কয়েকটি তলা ধূলিসাৎ হয়ে যায়।
ইউক্রেনেরে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ওই আঘাতে অন্তত ৭৩ জন আহত হয়েছে যাদের মধ্যে ১৪টি শিশুও রয়েছে। গত কয়েক মাসের মধ্যে এটাই সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা।
ভিডিও বার্তায় মি. জেলেনস্কি জানিয়েছে, দানিপ্রো শহরের বিধ্বস্ত ভবনে সারারাত ধরে ধ্বংসস্তূপ সরানো আর উদ্ধার অভিযান চলেছে।
কিন্তু শহরের বিদ্যুৎ অবকাঠামোর কাছাকাছি না হওয়ার পরেও কেন এই ভবনটিকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে, সে বিষয়ে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।
ধারণা করা হচ্ছে, ইউক্রেনের বিদ্যুৎ অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা করা হলেও হয়তো এটি রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর লক্ষ্য নির্ধারণে ত্রুটিপূর্ণ ছিল। অথবা রাশিয়ার যেসব ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেন ভূপাতিত করেছে, এটি তার একটিও হতে পারে, যদিও সেই সম্ভাবনা কম।
দুই সপ্তাহ আগে সর্বশেষ ইউক্রেনের বিদ্যুৎ অবকাঠামোয় হামলা চালিয়েছিল রাশিয়া। ইউক্রেন জানিয়েছে, এসব হামলায় খারকিভ আর কিয়েভ অঞ্চলে বিপর্যয়কর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
ইউক্রেন এবং পশ্চিমা দেশগুলোর কর্মকর্তারা ভাবতে শুরু করেছিলেন যে, রাশিয়ার ‘এনার্জি ওয়ার’ হয়তো শেষ হতে চলেছে কারণ এজন্য পর্যাপ্ত ক্ষেপণাস্ত্র সংকট রয়েছে রাশিয়ার। তাছাড়া এই কৌশল ইউক্রেনিয়ানদের মনোবল ভাঙ্গতেও সক্ষম হচ্ছে না।
কিন্তু শনিবারের হামলা প্রমাণ করেছে যে, মস্কো এখনো এই কৌশল অব্যাহত রাখার কথা ভাবছে।