এইচ.এম. রাসেল, আমতলি,বরগুনা : বরগুনার আমতলী উপজেলায় বেকারি গুলোতে অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে তৈরি হচ্ছে মুখরোচক বেকারির পণ্য। নামসর্বস্ব এসব বেকারির কারখানায় দীর্ঘদিন ধরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি করে বাজারজাত করা হলেও নজরদারি নেই প্রশাসনের। এতে কোনো নিয়ম মানার প্রয়োজন মনে করেন না বেকারির মালিকেরা। নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শকের তথ্য অনুযায়ী, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খাদ্যপণ্য উৎপাদনকারী ছোট-বড় প্রায় ২০-২৫টি বেকারির কারখানা রয়েছে। অধিকাংশ কারখানার নেই বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) অনুমোদন। তারপরও এসব কারখানায় খাদ্যপণ্য তৈরি হচ্ছে। পাশাপাশি তারা বিএসটিআইয়ের মনোগ্রাম ব্যবহার করে এসব পণ্য প্যাকেটজাত করে বাজারে বিক্রি করছে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, নিম্নমানের তেল এবং বিষাক্ত কেমিক্যাল দ্বারা উৎপাদিত এসব পণ্য গ্রহণে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে সাধারণ মানুষের।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন ‘সাধারণত পেটের পীড়াজনিত রোগগুলো ভেজাল খাবারের কারণে হয়।‘বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষেরা চায়ের দোকানে বেকারির খাবার খান। এতে গ্যাস্ট্রিক-আলসার, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন তাঁরা। এসব সস্তা খাবার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো যদি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নভাবে খাদ্যপণ্য তৈরি করত, তাহলে রোগ থেকে কিছুটা মুক্তি পেত সাধারণ মানুষ।
সরেজমিন শনিবার বিকেলে পৌর শহরের সবুজবাগ এলাকার মেসার্স আল্লাহর দান বেকারি ও সুইজগেটের ভাই ভাই বেকারিতে গিয়ে দেখা গেছে, বেকারির কর্মচারীরা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি করছেন খাবার। চারদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখা ছিল বেকারির পণ্য তৈরির পাত্রগুলো। সেসব পাত্রে জমেছে ময়লার আস্তরণ।
কারখানায় তৈরি করা খাবারগুলোও মেঝের চারপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখা ছিল। কারখানায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খালি গায়ে কাজ করছিলেন শ্রমিক শিশু শ্রমিক । ময়লাযুক্ত কড়াই থেকে খালি হাতে ট্রেতে সাজাচ্ছিলেন বিস্কুট তৈরির উপকরণ।
আলাপকালে শ্রমিক শফিক জানান, তাঁরা এভাবে কাজ করতে অভ্যস্ত। দীর্ঘদিন একই পরিবেশে তাঁরা খাদ্যপণ্য তৈরি করছেন। খালি হাতে খাদ্যপণ্য তৈরি করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, কারখানার মালিক তাঁদের কখনো হ্যান্ডগ্লাভস কিংবা মাথার ক্যাপ দেননি। তাই তাঁরা প্রতিদিন খালি হাতেই খাদ্যপণ্য তৈরি করেন।
আল্লাহর দান বেকারির স্বত্ত্বাধিকারী নবীন বলেন আমরা ভালভাবেই খাবার বানাই,পরিবেশ খারাপ না।
উপজেলা ফুড ইনেসপেক্টর সাভেরা পারভিন বলেন, উপজেলেয় অনেক অ- অনুমোদিত কারখানা আছে, যাদের বিষয়ে আমরা জেলা সিভিল সার্জনকে অবগত করেছি,শীগ্রই ভোক্তা অধিকারকে সাথে নিয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা ভোক্তা অধিকার কর্মকর্তা বিপুল বিশ্বাস বলেন আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করি, এই মাসের অভিযানও শেষ করেছে, আশাকরি খুব শীগ্রই এই বেকারিগুলোতে অভিযান চালানো হবে।