মানুষ সম্পদ নিরাপদে রাখতে ট্রাংকে, ঘরে, দোকানে, বাড়ির গেটে তালা লাগায় এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু রসের হাঁড়িতে তালা দেওয়ার কথা কেউ কোনোদিন শোনেননি। তবে এমনই অবাক করা ঘটনা ঘটেছে বরিশালের আগৈলঝাড়ায়।
উপজেলা সদরের ফুল্লশ্রী গ্রামের গাছি (যিনি খেজুর গাছ কাটেন) দিপক মজুমদার খেজুর গাছ কেটে রস সংগ্রহ করে তা দিয়ে গুড় তৈরি ও কাঁচা রস বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। চলতি বছরে চোরেরা একাধিকবার রসের হাঁড়িসহ রস চুরি করে নিয়ে গেছে।
এরপর দিপক মজুমদার ১৫০ টাকায় তালা ও ১৬০ টাকায় শিকল কিনে রস ও হাঁড়ি নিরাপদে রাখতে খেজুর গাছের সঙ্গে শিকল দিয়ে তালা মেরে রাখেন। এ ঘটনা জানাজানি হলে এলাকার উৎসুক জনতা তার রসের হাঁড়ি তালা মারা দেখতে খেজুর গাছের নিচে ভিড় জমান।
জানা যায়, দীপক মজুমদারের বাবা দেবেন্দ্র নাথ মজুমদারও জীবদ্দশায় খেজুরের গাছকাটা পেশার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
দীপক জানান, চলতি বছর শীতের এই মৌসুমে ১০-১২টি খেজুর গাছ কেটে রস সংগ্রহ করে আসছেন। খেজুরের রস সংগ্রহের জন্য প্রতিটি মাটির হাঁড়ি ৮০ টাকায় কিনতে হয়। এ থেকে প্রতিদিন ৪-৫ হাঁড়ি রস সংগ্রহ করে। প্রতি হাঁড়ি (মাঝারি) কাঁচা রস ৩শ টাকায় মানুষ তার বাড়ি থেকে কিনে নিয়ে যায়। ২৫০ টাকায় প্রতি মণ লাকড়ি কিনে খেজুরের রস আগুনে পুড়িয়ে খাঁটি গুড় তৈরি করে ৫শ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে স্ত্রী কনিকা, ছেলে দিগন্ত ও মেয়ে জয়িতাকে নিয়ে সংসার চালিয়ে আসছেন।
তিনি জানান, রস ও হাঁড়ি নিরাপদে রাখতে খেজুর গাছের সঙ্গে শিকল দিয়ে তালা মেরে রাখেন তিনি।
তিনি আরও জানান, বাদুরের উৎপাতে খেজুর গাছের সঙ্গে প্লাস্টিকের জাল দিয়ে গাছের হাঁড়ি ঢেকে রাখেন। অনেক সময় বাদুর নেট ছিদ্র করে রস খাওয়ায় তার কাছে যারা কাঁচা রস নিতে আসে তাদের নিপা ভাইরাস থেকে বাঁচতে কাঁচা রস না খাওয়ার পরামর্শ দেন।