বরিশাল খবর অনলাইন নিউজ : সমবায়ীদের মধ্যে তৃতীয় পক্ষের অনুপ্রবেশ প্রচেষ্টা, আন্ত:বহুমূখী কোন্দল, হামলা,মামলা,সমবায় বিভাগের কতিপয় কর্মকর্তার আদালতের রায় অবমাননা, ফরিদপুর শহরের ডিআইবি বটতলার শতবর্ষী ৭৩ শতাংশ মার্কেট, ভবন, সমিতির জমি বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা লোপাট অভিযোগ এবং সমবায় বিভাগের কতিপয় মতলববাজ কর্মকর্তার কূটকৌশল আর হয়রানির মধ্যে দিয়েই আজ শনিবার সারাদেশের মত ফরিদপুরে পালিত হচ্ছে জাতীয় সমবায় দিবস।
এই দিবসের কর্মসূচি ধরাবাঁধা নিয়মেই পালিত হয়ে শেষ হবে দিবস। এই দিবসের অনুষ্ঠান কে কেন্দ্র করে একাধিক গ্রুপ অনুষ্ঠানে অংশ নিবেন না বলে জানা গেছে। তাদের অভিযোগ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে লাভ কি ? সমবায় আন্দোলন সম্প্রসারণে সারা বছর সমবায় বিভাগের তেমন কোন সহযোগিতা পাওয়া যায় না। তারা সমিতির কমিটির ও সদস্যদের মাঝে দ্বন্দ্ব ফ্যাসাদ লাগিয়ে তদন্ত ও কমিটি গঠনের নামে সারা বছর কামাই বানিজ্যে তাদের মন সময় পড়ে থাকে। কিছু ক্ষেত্রে বহিরাগতদের সমবায় সমিতিতে অনুপ্রবেশে অর্থের বিনিময়ে সহযোগী করে থাকে। এর ফলে প্রকৃত সমবায়ীরা সব সময় আতংকে থাকতে হয়।
ফরিদপুর বিজ্ঞ সিনিয়র জেলা জজ আদালতে আলোচিত একটি মামলায় ঢাকা সমবায় বিভাগের উর্ধতন কর্মকর্তার একটি আদেশ গত বছর এই আদালত বাতিল ঘোষণা করলেও তাঁরা এ রায়ের ক্ষিপ্ত হয়ে রায় বাস্তবায়ন না করে উল্টো প্রশাসনের সদস্যদের দিয়ে ফরিদপুর কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি ব্যাংক লি: এর নতুন নির্বাচন এর জন্য অন্তবর্তী কালীন কমিটি গঠন করেছে সম্প্রতি। এ বিষয়ে একাধিক মামলা মোকদ্দমা থাকলেও আদালত অবমাননায় তারা পিছিয়ে নেই বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সমবায় সমিতি গুলো ১০০% নিজস্ব সদস্যদের অর্থে পরিচালিত। এই খাতে সরকারের সহযোগিতা ও অনুদান সাহায্য নেই বললেই চলে। সমবায় সমিতি আইন এর মারপ্যাচে তদন্ত তদন্ত খেলায় গত এক যুগে ফরিদপুর থেকে
শতাধিক সমিতি। সদস্যদের পুঁজিও খোয়া গেছে। এক সময়ের বড় বড় সমিতি যেমন –
শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকার কেন্দ্রীয় তাতঁ বহুমুখী সমবায় সমিতি লি:
এর ভবন,জমি, শহরের ডিআইবি বটতলার শতবর্ষী ৭৩ শতাংশ মূল্যবান জমি,
ভবন,মার্কেট, পৌরসভার সামনে অবস্থিত ফরিদপুর কেন্দ্রীয় মহিলা সমবায় সমিতি ও
ফরিদপুর জেলা সমবায় ইউনিয়ন এর জমি ভবন সমবায় অফিসের খাতায় থাকলেও এই সমিতি
গুলোর কোটি কোটি টাকার সম্পদ গিলে খেয়েছে একটি চক্র ।
এত সংকটের মধ্যে চালুরত ফরিদপুর কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাংক লি:, কোর্ট কম্পাউন্ডের ভবন গিলে খেতে গত আওয়ামী লীগ আমল থেকে চেষ্টা চলছে এবং বর্তমান সরকারের আমলেও একটি রাজনৈতিক দলের পেট মোটা নেতা ও হাউজিং কোম্পানির কু নজরে পড়েছে। এঁরা সমিতি দোকানদার, খেলাপী ঋণীদের দিয়ে কয়েক দফা মব সংস্কৃতি তৈরি করে এই প্রতিষ্ঠান কে নড়াচড়া শুরু করেছে। এরই মধ্যে তাদের আন্দোলন এর আইনগত বৈধতা না থাকলেও একটি নির্বাচিত কমিটি কে হটিয়ে কয়েকজন উর্ধতন সমবায় কর্মকর্তা পুনরায় কতিথ নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে এই সমিতিটিকে ও বহিরাগত তৃতীয় পক্ষের হাতে তুলে দিতে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে । এই বিষয়ে অভিযোগ জমা পড়েছে সমবায় বিভাগ এর নিবন্ধক বরাবর। সমবায় সমিতি আইন বহু জটিল হওয়ায় এই আইন সম্পর্কে জনগণ ও সদস্যদের মধ্যে নেই কেন ধারণা। আইন সহজ এবং সমবায়ী বান্ধব হওয়ার দরকার মনে করেন সমবায়ীরা। সমবায়ীদের অভিযোগ এই অধিদপ্তরে কোন অভিযোগ করে সুষ্ঠু প্রতিকার মেলে না ।
সমবায়ীরা বলেন, সমবায় দিবস সরকারি দিবস, আমাদের নয়। এখানে সমবায়ীদের অংশ গ্রহণ তেমন থাকে না। আমাদের সমস্যা দেখার কেউ নেই। তবে নতুন বাংলাদেশে সমবায় আন্দোলন আবার জাগবে এবং সমবায় বিভাগের সংস্কার জরুরি। গত এক বছরে এই বিভাগের কোন পরিবর্তন হয় নি। হবে বলেও মনে হয় না। কর্মকর্তাদের ভয়াবহ সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে সমবায় বিভাগে। তা-ই এদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া না হলে সমবায় সফল হবে না।
