১.
পাহাড়ে হেলান দিয়ে নিস্তব্ধ রাত্রি ঘুমায়
আমি বিনিদ্র জেগে থাকি তোমাকে দেখার আশায়
সমুদ্রের গর্জনে ভয়ার্ত পাহাড়ের খাদে যে দাঁড়িয়ে থাকে
তার কি আছে ভয়,কোন কিছু হারানোর
যে সঙ্গোপনে নিজেকে হারিয়েছে অবলীলায়।
নিশাচর পাখির আনাগোনা গাছ থেকে গাছের মাথায়
রাতের নিরবতা ভাঙ্গে কুকুর শেয়ালের ডাক
বিরহী বধু ভাবে-যামিনী না পোহাক
বহু দিন পর পেয়েছে সে মিলনের স্বাদ
নিরবতারও ভাষা আছে স্বপ্ন দেখে বোবা
অন্তরময় যদি অন্তরে রয় দেহের বিরহে কি এসে যায়
আত্মা মিলে পরমাত্মায় মনসুরে তখন আনাল হক কয়
ফানা যে হয় প্রেমের মাঝে, হকের দাবী তারই সাজে
এক দেহেতে দু’জন মিলে-মীমের পর্দা দূর করিলে
জ্ঞান নয়ন যাবে খুলে চিনবে কে রব,রব্বানা।
২.
মানুষ কে?
আমাদের চারপাশে হাত পা মাথাওয়ালা ডিগ্রীধারী
সবগুলো কি মানুষ?
পাশে বসে নাজাজ আদায়কারী যার কপালে কালচে দাগ
মহাভারত বেদ বাইবেল পড়া পুরুতঠাকুর
যাদের মাথায় পাগড়ী, গলায় পৈতা, গেরুয়া বসন
কপালে চন্দনের তিলক
এর সবগুলো কি মানুষ?
যাদের খাবারের অভাব নেই তবুও কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে
চালের দাম বাড়ায়
হাজার বিঘা জমির মাঝে লোভ থাকে অসহায়ের এক গন্ডায়
অধিক মুনাফার লোভে রডের বদলে বাঁশ লাগায়
ঈদ বড়দিন পূজোর অযুহাতে যারা ফাইল আটকায়
অধিক ঘুষের আশায়
তাদেরকে কি মানুষ বলা যায়?
শ্রেণিকক্ষে না পড়িয়ে প্রাইভেটে বাধ্য করে
মাছের ফুলকায় রঙ লাগিয়ে পঁচা মাছ তাজা করে
পকেটে ইয়াবা দিয়ে নির্দোষীকে চালান করে
এরা কি মানুষ হতে পারে ?
পোশাকেতে পরিপাটি গাড়ি বাড়ি সমাজপতি
চেহারায় নূরানী জ্যোতি দেখতে ঠিক মানুষের ন্যয়
আসলেতে মানুষ নয়।
বাহিরে নক্সা করা, ভিতরে মরিচাধরা
মানুষের রূপ ধরে করে শুধু অভিনয়
মানুষ রূপের পশুটাকে চিনতে কিছু সময় লাগে
যখনেতে চেনা যায় তখন আমার মন চায়
সবাই মিলে হিসু করি মানুষ রূপী পশুটার গায়
পয়োনিষ্কাশনের সংযোগ দেই তার মুখে
ট্যাঙ্ক বসাই তার মাথায়।
৩.
ওহে মদীনাওয়ালা
ওহে উদয়াচলের রবি অস্তাচলে যাও যদি
ওহে মাশরেকি হাওয়া মাগরিবে যাও যদি
ওহে পূবাকাশের শশী পশ্চিমাকাশে পৌঁছি
গিয়ে নবীর রওজায় আমার সালাম দিও তাঁর রাঙ্গা পায়।
তাঁর চরণে চুমু খেয়ে সওগাত দিও আমার হয়ে
বাংলাদেশের আকাশ হতে যে বায়ু যায় মরুর পথে
শত ভক্তের কান্না তাতে যারা দেখতে পায়নি নবীজিকে
তায়েফ বাসীর নির্মমতা ইবনে কামিয়া ফাটালো মাথা
দাঁত মোবারক ভেঙ্গে গেল শিরস্ত্রানের আংটা ঢুকে
লোহিতে ভাসিল বদন দেখে সবাই করে রোদন
যার জন্য দুনিয়া সৃজন,কাঁদেন সদা উম্মতের কারণ
দেখলে যার নূরানী বদন ক্ষুধা তৃষ্ণা মিটে যায়
তাঁকে যেজন আঘাত করে হাবিয়ায় রাখিও তারে
শুনিয়া উহুদের কথা যার অন্তরে লাগে ব্যথা
না দেখিয়া নবীজিকে কাঁদেন যেজন নবীর শোকে
মরুর বায়ে মিশে তাহা অঞ্জলি দেয় নবীর পায়।
ওহে মদীনাওয়ালা মনেতে অনন্ত জ্বালা
তব প্রেমের রৌশনিতে মন কর উতলা।