নিজস্ব প্রতিবেদক ।।
বরিশাল নগরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের শিশু পার্ক কলোনির বাসিন্দা মানিক বিশ্বাসের বয়স এখন ৭৩ বছর। চোখে তেমন ভাল দেখেন না। বয়সের ভারে কাবু হয়ে পড়লেও মানিক বিশ্বাসের সততা এখনো সমুজ্জ্বল। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় নগরীর রূপালী ব্যাংকের বাজার রোড শাখায় চেকের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা তুলতে যান মানিক বিশ্বাস। এ জন্য ব্যাংকের ক্যাশ অফিসার জাকিয়া পারভিনের কাছে দেন ১০ হাজার টাকার চেক। কিন্তু জাকিয়া পারভিন ভুলে মানিক বিশ্বাসকে এক লাখ টাকা দেন। ব্যাংকে বসে টাকা না গুনে মানিক বিশ্বাস বাসায় চলে যান। বাসায় গিয়ে দেখতে পান ৫০০ টাকার ২টি বান্ডিলে তাকে দেওয়া হয়েছে এক লাখ টাকা। মানিক বিশ্বাস বলেন, 'বাসায় যাইয়া দেহি আমারে ১ লাখ টাহা দেছে। তহনি আমি টাহা ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত লই। আমাগো কাউন্সিলরের (ওয়ার্ড কাউন্সিলর) বাসায় গিয়া তারে ঘটনাডা জানাই। কাউন্সিলর আমারে ব্যাংকে লইয়া যায়, আমি ম্যানেজারের কাছে ৯০ হাজার টাহা ফেরত দিছি।'তিনি আরও বলেন, 'জীবনে অনেক কষ্ট করছি, কিন্তু অসৎ হইনাই। ব্যাংকের টাহা ফেরত না দিলে অন্যদিকে আমার বড় ক্ষতিও হইতে পারে। তাই আমি টাহা ফেরত দিছি।'
রূপালী ব্যাংক বাজার রোড শাখার ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক সামিনা আক্তার মিনারা বলেন, মানিক বিশ্বাস আমাদের পুরানো গ্রাহক। তিনি ১০ হাজার টাকার চেক দিলে ভুলে তাকে ১ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছিল। তিনি ৯০ হাজার টাকা ফেরত দিয়ে মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছেন।
নগরীর ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর খান মোহাম্মদ জামাল হোসেন বলেন, মানিক বিশ্বাস অন্যের জায়গায় ঘর তুলে স্ত্রী সেতারা বেগম ও ছোট ছেলে ওসমান বিশ্বাসকে নিয়ে বসবাস করেন। ব্যাংক থেকে দেওয়া বেশি টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য আমার বাসায় আসলে তাকে নিয়ে ব্যাংকে গিয়ে টাকা ফেরত দেই। দরিদ্র এবং কর্মহীন মানিক বিশ্বাসের এমন সততা বর্তমান সমাজে বিরল। রূপালী ব্যাংকের বরিশালস্থ উপ মহাব্যবস্থাপক দেবব্রত বিশ্বাস বলেন, দরিদ্র মানিক বিশ্বাস প্রশংসার কাছ করেছেন, আমরা তাকে পুরস্কৃত করব।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মামুনুর রশীদ নোমানী ।
যোগাযোগ: আদালত পাড়া সদর রোড,বরিশাল। ইমেইল: [email protected] মোবাইল: 01713799669
কপিরাইট © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 2008-2023 BarisalKhabar24.com