বরিশাল খবর :
চার দিন আগে যে গোলাপ ফুল বিক্রি হয়েছিল ১০-১৫ টাকা, সেটি এখন বরিশালের বাজারে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চার দিনের ব্যবধানে এতটা দাম বেড়ে যাওয়ায় অবাক হয়েছেন ফুল কিনতে আসা অনেক ক্রেতা।
ফুল ব্যবসায়ীরা বলছেন, ফাল্গুন আর ভালোবাসা দিবস একই দিনে হওয়ায় চাহিদা বেড়েছে গোলাপের। ক্রেতারা বলছেন, এ সুযোগে অতিরিক্ত দাম নিয়ে বেশি মুনাফা করছেন ব্যবসায়ীরা।
ভালোবাসা দিবসের আজ ফুলের দোকান এলাকা সদররোডে ঘুরে দেখা গেছে, সব দোকানে ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত গোলাপ ফুল বিক্রি হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, এসব এলাকার ফুলের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড়। এই ভিড় সামলাতে দোকানের সামনে অস্থায়ী স্টল খুলে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। কোনও দোকানে তিন জন, কোনোটায় ছয় জন পর্যন্ত কর্মচারী রয়েছেন।
এসব দোকানে তিন ধরনের গোলাপ বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে একটি দেশি, বাকি দুটি চায়না৷ চায়না হলুদ গোলাপ চার দিন আগে বিক্রি হতো ১০-১৫ টাকা, এখন তা ৯০-১০০ টাকা। চায়না সাদা গোলাপ বিক্রি হতো ২০ টাকা, এখন তা ৯০ টাকা। দেশি গোলাপ আগে ছিল ১০-১৫ টাকা, এখন ৬০-৭০ টাকা।
এ ছাড়া জারবেরা, গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধা, ভুট্টা কেলেনডোলা, চন্দ্রমল্লিকা, জিপসি ও গাঁদাসহ নানা জাতের ফুল রয়েছে দোকানগুলোতে। সেগুলোর দামও বেড়েছে। তবে চাহিদা তুলনামূলক কম হওয়ায় সেগুলোর দামের বিষয়ে কারও অভিযোগ নেই।
এদিকে, প্রত্যেক স্টলে গোলাপ নিয়ে দরদাম করতে দেখা গেছে ক্রেতাদের। বেশি দাম হওয়ায় অনেকে চারটির স্থলে দুটি, ১০টির স্থলে পাঁচটি কিনেছেন।
বন্ধুদের নিয়ে ফাল্গুন বরণের জন্য ফুল কিনতে এসেছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়,বিএম কলেজ,মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা।
গোলাপের দরদাম করছিলেন তাহমিনা। তিনি বলেন, আগে ১৫ টাকা দিয়ে গোলাপ নিতাম, এখন ১০০ টাকা দিয়ে নিলাম। ভেবেছিলাম অনেকগুলো নেবো। কিন্তু মাত্র তিনটি নিয়েছি। আর ক্রাউনের দামও অনেক বেশি। কয়েকদিন আগেও ১৫০ টাকায় প্লাস্টিকের ফুলের ক্রাউন পাওয়া যেতো। এখন ২০০ টাকার নিচে ক্রাউন পাওয়া যায় না। এভাবে ফুলের দাম বাড়িয়ে ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবসের আনন্দটাই মাটি করে দিলেন ব্যবসায়ীরা।
ফুল কিনতে আসা শোয়েব বলেন, বোনের জন্য ক্রাউন নিতে বলেছে। একটি ক্রাউনের দাম এক কেজি মুরগির মাংসের দামের চেয়েও বেশি। এভাবে দাম বাড়ালে কি আর আনন্দ থাকে?
১০ বছরের বেশি সময় ধরে ফুলের দোকানে কাজ করছেন এমন এক কর্মচারী বলেন, বিভিন্ন দিবসের সাত দিন আগে ফুল স্টক করতে হয়। না হয় ফুল পাওয়া যায় না। আর পাইকাররা চাহিদা বুঝে দাম বাড়িয়ে দেন। তাই আমাদের আর কিছু করার থাকে না। দাম বেশি দিয়েই কিনতে হয়। বেশি দামেই বিক্রি করতে হয়।
বরিশালের বাজারে গোলাপের চাহিদা বেশি উল্লেখ করে তিনি বলেন, গোলাপের পাশাপাশি ক্রাউনের চাহিদাও বেশ। এজন্য দাম বেশি। তবে অন্যান্য ফুলের চাহিদা কম। এজন্য দামও তেমন বাড়েনি।
তবে যেকোনো দিবস এলে সিন্ডিকেট করে ফুলের দাম বাড়ানো হয় বলে জানালেন এক বিক্রেতা । তিনি বলেন, আমরা বেশি দামে কিনি বলে বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। এ ছাড়া এক-দুই দিন আমাদেরও ব্যবসা করতে হয়। কারণ সারা বছর তো আর ফুলের চাহিদা থাকে না। দিবস ঘিরেই সবার ব্যবসা। সেজন্য দামটা একটু বেশি। এরপরও ফুলের টান পড়বে।
তবে ফুলের দাম অতিরিক্ত রাখার বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনও অভিযোগ পাননি বলে জানিয়েছেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর।
সূত্র জানিয়েছে, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর দাম নির্ধারণ করে না। তবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন লঙ্ঘনের প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মামুনুর রশীদ নোমানী ।
যোগাযোগ: আদালত পাড়া সদর রোড,বরিশাল। ইমেইল: [email protected] মোবাইল: 01713799669
কপিরাইট © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 2008-2023 BarisalKhabar24.com