হবিগঞ্জ সদর উপজেলার পইল গ্রামের মাছের মেলায় বিক্রি হয়েছে প্রায় সোয়া দুই কোটি টাকার মাছ। পঞ্চাশ হাজারে বিক্রি হয় এ মেলায় সবচেয়ে বড় বাঘাইড় মাছটি। যে মাছের ওজন ছিল ৪৫ কেজি। রবিবার দুপুর থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত মেলায় মাছ বিক্রি হয়। সেখানে নিরাপত্তা জোরদার করে উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসন।
করোনা সংক্রমণের কারণে দুই বছর বন্ধ থাকার পর পৌষ সংক্রান্তির এই মেলাটি এবার বেশ জমে ওঠে। এতে মাছের পসরা নিয়ে বসেন পাঁচ শতাধিক মাছ বিক্রেতা।
মেলায় সোয়া দুই কোটি টাকার মাছ বেচাকেনা হলেও ৩০ কেজি ওজনের একটি রুই ও ৪৫ কেজির বাঘাইড় মাছকে ঘিরেই ছিল মানুষের উৎসাহ। এ দুটি মাছ বিক্রি হয় রাতে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পাঁচ শতাধিক মাছ বিক্রেতা হরেক রকমের দেশীয় মাছ মেলায় নিয়ে এসেছেন। এর মধ্যে রয়েছে বাঘাইর, রুই, কাতল, বোয়াল, মৃগেল, শিং, মাগুর, কই, পাবদা, চিংড়ি, চিতলসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ।
৪৫ কেজি ওজনের একটি বাঘাইর মাছ নিয়ে আসেন হবিগঞ্জ সদর উপজেলার জালালাবাদ গ্রামের জাবুর আলী। তিনি মাছটির দাম হেঁকেছেন ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। তবে রাত ১০টার দিকে ৫০ হাজার টাকায় তার মাছটি বিক্রি হয়।
জাবুর আলীর পাশেই ৩০ কেজি ওজনের একটি রুই নিয়ে বসেন পইল ডালিহাটি গ্রামের আব্দুল আলী। উৎসুক লোকজন এই মাছটিরও চারদিকে ভিড় জামান। তিনি মাছটির দাম হেঁকেছিলেন ৫০ হাজার টাকা। রাতে এটি বিক্রি হয়েছে ২৫ হাজার টাকায়।
মাছ বিক্রির জন্য আজমিরীগঞ্জ থেকে আসেন কামরুল মিয়া। তিনি বলেন, ছোটবেলা থেকেই বাবার সঙ্গে মেলায় মেলায় মাছ বিক্রি করতাম, এখন আমি নিজেই বিক্রি করি। এবার আমার নিয়ে আসা প্রতিটি মাছ ১০ থেকে ২০ কেজি ওজনের।
মেলায় হবিগঞ্জ সদর, বাহুবল, নবীগঞ্জ, লাখাই, চুনারুঘাট ও মাধবপুর উপজেলাসহ আশপাশের ৮ থেকে ১০টি উপজেলার মানুষ এসেছিলেন।
পইল নতুন বাজার খেলার মাঠে বিশাল জায়গাজুড়ে এই মেলাটি বসে। মাঠের বেশিরভাগ জায়গায় শুধু মাছ। বাকি জায়গায় রয়েছে, নানারকম পণ্য, খেলনা ও খাবারসহ গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী নানা পণ্য।
সোমবার সকালে পইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ মঈনুল হক আরিফ জানান, মেলায় প্রায় সোয়া ২ কোটি টাকার মাছ বিক্রি হয়েছে। সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বেশি মাছ বিক্রি হয়।
তিনি আরও জানান, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম বাগ্মী নেতা বিপিন চন্দ্র পালের জন্মভূমি পইল গ্রামে প্রতিবছর এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এই মেলাকে ঘিরে এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। কিন্তু করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে গত দু’বছর মেলাটি আয়োজন করা হয়নি। এজন্য এবার ক্রেতা ও বিক্রেতাদের উপস্থিতি বেশি ছিল।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মামুনুর রশীদ নোমানী ।
যোগাযোগ: আদালত পাড়া সদর রোড,বরিশাল। ইমেইল: [email protected] মোবাইল: 01713799669
কপিরাইট © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 2008-2023 BarisalKhabar24.com