স্ত্রীকে ‘পরকীয়া থেকে ফেরাতে না পেরে’ ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় ঝালকাঠি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আলী ইমাম খান অনুকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় কমিটি। সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ৪০মিনিটে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. তরিকুল ইসলাম পারভেজের ফেসবুক আইডিতে এমন একটি প্রেসবিজ্ঞপ্তি পোস্ট করা হয়, পরে বিষয়টি তিনি নিজেই মুঠোফোনে নিশ্চিত করেছেন।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান এতে স্বাক্ষর করেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের জরুরি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জানানো যাচ্ছে যে, আলী ইমাম খান অনু (সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ঝালকাঠি জেলা শাখা)কে তার কৃতকর্মের কারণে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হলো।
প্রসঙ্গত, স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে ফেসবুকে একাধিক স্ট্যাটাস দিয়ে থানায় আত্মসমর্পণ করেন স্বামী আলী ইমাম খান অনু (৩০)। সোমবার সকাল ১০টার দিকে প্রস্তাবিত ইকোপার্কে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। অনু শহরের ইছানীল (৭নং ওয়ার্ড) এলাকার দিদার হোসেন খানের ছেলে ও জেলা ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি। আর নিহত সায়মা পারভিন (২০) এ বছর ঝালকাঠি মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসিপাস করেন। তার বাড়ি ঝালকাঠি সদর উপজেলার নৈকাঠি এলাকায়, বাবার নাম শাহাদাত তালুকদার।
পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণের পর অনু জানিয়েছেন, সাড়ে চার বছর প্রেমের সম্পর্কের পর ২০২১ সালের ২ সেপ্টেম্বর পোনাবালিয়া ইউনিয়ন কাজির মাধ্যমে বিয়ে করেন সায়মা পারভিনকে। কিন্তু বিয়ের তিন মাস পর সায়মা পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। এ বিষয়ে একাধিকবার নিষেধ করা সত্ত্বেও না শোনায় ইকোপার্কে তাকে ডেকে নেন। সেখানে সায়মাকে সংশোধন হতে বললে সে বাগবিতণ্ডা শুরু করে। কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে তাকে সংশোধন করতে না পেরে ছুরি দিয়ে আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। তাকে সংশোধন করতে পারলে হত্যা করতেন না।
ছাত্রলীগ নেতা অনু আরও জানিয়েছেন, এরপর পুলিশ পাঠানোর জন্য একাধিকজনকে ফোন দিয়ে ঘটনাস্থলে অপেক্ষা করি। কিন্তু পুলিশ আসতে দেরি করায় ফেসবুকে এ হত্যার কথা স্বীকার করে কয়েকটি স্ট্যাটাস দিই। পরে নিজেই থানায় গিয়ে আত্মসমর্পন করি।
ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মুহিতুল ইসলাম বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর অনু নিজেই থানায় এসে আত্মসমর্পন করেন। তাকে নিয়ে পুনরায় ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ দেখতে পাওয়া যায়। সুরতহাল রিপোর্টে মরদেহের পেটে দুটি ও বুকে একটি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ছুরিকাঘাতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে।
পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, অভিযুক্তকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অনু নিজেই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে জানিয়েছে, পরকীয়ার কারণে তিনি একাই স্ত্রীকে হত্যা করেছেন। তবে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির সময় নিহতের ব্যাগ তল্লাশি করে একটি নতুন চাকুও উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মামুনুর রশীদ নোমানী ।
যোগাযোগ: আদালত পাড়া সদর রোড,বরিশাল। ইমেইল: [email protected] মোবাইল: 01713799669
কপিরাইট © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 2008-2023 BarisalKhabar24.com