এদিকে স্থগিত আদেশ থাকা সত্বেও চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন মামলার বাদী। হতাশা প্রকাশ করে মামলার আইনজীবী বলেছেন অনিয়ম করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আর নিয়ম মেনেই চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
মামলা পরিচালাকারী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. শামীম বলেন, স্থগিত আদেশ বহাল রয়েছে এটা সত্য। কিন্তু ২৪ ফেব্রুয়ারী বুধবার একই বেঞ্চ থেকে রিকল করা হয়। যার সুযোগটি নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তিনি বলেন ঠিক কি কারনে কেন রিকল করা হয়েছে তা আমার বোধগম্য নয়। কিন্তু যে কারন বা যে প্রক্রিয়ায় করা হোক না কেন চূড়ান্ত আদেশ না হওয়া পর্যন্ত হাসপাতাল কর্র্তৃপক্ষ নিয়োগ কার্যক্রম চালাতে পারে না । এটা অনিয়ম। তিনি বলেন, আজ রবিবার শুনানীর ছিলো। কিন্তু নি¤œ আদালতের অসহযোগিতার কারনে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না পাওয়ায় শুনানী হয়নি। আশা করছি শুনানী করা হবে।
মামলার বাদী সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমরা হতাশ এবং বিস্মিত। কিভাবে উচ্চ আদালতের স্থগিত আদেশ থাকা সত্বেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এমন কাজ করতে পারে। তিনি বলেন, আশা করছি পরবর্তী শুনানীর দিনে আদালত এর ফয়সালা করবেন।
হাসপাতাল উপ পরিচালক ও তৃতীয় শ্রেনীর নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব ডা. আবদুর রাজ্জাক বলেন, আমরা নিয়ম মেনেই নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করেছি। উচ্চ আদালত নিয়োগ কার্যক্রমে স্থগিত আদেশ প্রদান করেছিলো। একই আদালত তা ভ্যাকেড করেছে। তাই আমরা পুনরায় নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করে অবশিষ্ট কাজ শেষ করেছি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েব সাইডে দেয়া ফলাফল সুত্রে জানা গেছে, মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট (ল্যাব) পদে একজন, মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট (ডেন্টাল) পদে ৮ জন, ফার্মাসিষ্ট পদে ৬ জন, অফিস সহকারী-কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক তিন জন, ওয়ার্ড মাষ্টার ১ জন, টেলিফোন অপারেটর দুইজন, ষ্টোর কিপার, লিলেন কিপার, টেইলর ও ড্রাইভার পদে একজন করে নিয়োগ পেয়েছেন। তবে ইন্সট্রুমেন্ট কেয়ার টেকার পদে লিখিত পরীক্ষায় কেউ উত্তীর্ন হতে পারেনি। আর সহকারী হিসাব রক্ষক পদে যোগ্য প্রার্থী পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১২টি ক্যাটাগরিতে ৩য় শ্রেণীর ৩২ জন কর্মচারী নিয়োগের জন্য গত বছর ২৩ ডিসেম্বর একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। গত ৫ ফেব্রুয়ারি প্রায় ৭০০ আবেদনকারীর অংশগগ্রহণে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। লিখিত পরীক্ষায় ৪৪৪ জনকে উত্তীর্ণ দেখিয়ে ৬ ফেব্রুয়ারি ফলাফল প্রকাশ করে কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের কয়েকজন কর্মচারীর সন্তান ও স্বজন জালিয়াতি করে এই নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। একই সাথে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওইদিন পরীক্ষার হলে তাদের পছন্দের প্রার্থীদের নকল সরবরাহ করে বলে অভিযোগ করা হয়। এই অভিযোগে গত ৯ ফেব্রুয়ারি হাসপাতালের পরিচালক সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে বরিশাল সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন দুই পরীক্ষার্থী। এরপরও নিয়োগ কার্যক্রম চলমান রাখায় তারা ওই নিয়োগ কার্যক্রম বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। এর প্রেক্ষিতে সোমবার ১৫ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি একে-এম শহীদুল হকের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের একক বেঞ্চ কেন এই নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল হবে না জানতে চেয়ে রুল জারীর নির্দেশ দেন। একই সাথে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া ৬ সপ্তাহের জন্য স্থগিতের নির্দেশ প্রদান করেন।