ভোলা প্রতিনিধি
ভোলার মনপুরায় স্ত্রীকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতনকারী সেই মাদ্রাসাশিক্ষককে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। স্থানীয়রা ওই শিক্ষককে রাজনৈতিক চাপে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ করলেও নির্যাতন সহ্য করা ওই শিক্ষকের স্ত্রী ও তার মা এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এদিকে নারী নির্যাতনকারীদের আইনের আওতায় না এনে ছেড়ে দেওয়ায় সমাজে নারী নির্যাতন বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
মনপুরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইদ আহমেদ জানান, দুই পরিবার মীমাংসা হওয়ায় ও নির্যাতিত ওই গৃহবধূ ও তার মা কোনো অভিযোগ করেননি। তাই পুলিশ ওই মাদ্রাসাশিক্ষকের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়। তবে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে তার স্ত্রী মামলা করতে চাইলে পুলিশ মামলা নিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার বিকাল ৪টায় মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেওয়া হয় স্ত্রীকে নির্যাতনকারী চরফৈজুদ্দিন ফকিরহাট দাখিল মাদ্রাসার সেই শিক্ষক মো. শামীমকে।
মঙ্গলবার সকাল ১০টায় এ তথ্য সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন মনপুরা থানার ওসি সাইদ আহমেদ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা জানান, সোমবার সকালে সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে থানায় যান ওই শিক্ষকের শাশুড়ি। পরে থানার ভিতরে স্থানীয় প্রভাবশালী একাধিক রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ ওই অভিযুক্ত শিক্ষকের পরিবারের সদস্যরা ঘিরে ধরে মীমাংসার জন্য চাপ দেন। পরে একপর্যায়ে ওই মা মীমাংসায় রাজি হন। পরে পুলিশ মুচলেকা রেখে বিকাল ৪টায় ছেড়ে দেয়।
তবে এ ব্যাপারে ওই শিক্ষকের স্ত্রী ও তার মায়ের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক মো. শামীমের মোবাইল ফোনে চেষ্টা করেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। তাই তার বক্তব্য নেওয়া যায়নি।
নারী অধিকার ও নারী ও শিশু নির্যাতন নিয়ে কাজ করা কোস্টট্রাস্টের সাবেক কর্মকর্তা মাকছুদ ও নারী শিক্ষক নিয়ে কাজ করা নজরুল ইসলাম জানান, নারী নির্যাতনকারী যত বড়ই হোক না কেন তাদের আইনের আওতায় না এনে ছেড়ে দিলে সমাজে নারী নির্যাতনকারীরা উৎসাহিত হবে এবং সমাজে নারী নির্যাতন বেড়ে যাবে। তাই তারা নারী নির্যাতনকারীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দাবি করেন।
উল্লেখ্য, গত সোমবার রাত ১টায় চরফৈজুদ্দিন ফকিরহাট দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক মো. শামীম তার স্ত্রীকে হাত-পা বেঁধে শারীরিক নির্যাতন চালায়। খবর পেয়ে ওই শিক্ষকের স্ত্রীর মা ৯৯৯ নাম্বারে ফোন করে মেয়েকে উদ্ধারে পুলিশের সহায়তা চান। পরে রাত ২টায় মনপুরা পুলিশের একটি টিম ওই শিক্ষকের বাড়ি থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় শিক্ষকের স্ত্রীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে ও অভিযুক্ত শামীম মাস্টারকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মামুনুর রশীদ নোমানী ।
যোগাযোগ: আদালত পাড়া সদর রোড,বরিশাল। ইমেইল: [email protected] মোবাইল: 01713799669
কপিরাইট © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 2008-2023 BarisalKhabar24.com