ঝালকাঠি থেকে সংবাদদাতা : ‘লঞ্চে আগুন লাগার সময় নিচতলার ইঞ্জিন রুমের পাশে স্বামী ও মাইয়া লইয়া ঘুমাইয়া আছিলাম। ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্ট ট্যার পাইয়া লাফাইয়া উইড্ডা দেহি হারা লঞ্চে আগুন। পরে তিনতলায় উইড্ডা মাইয়া আর স্বামীরে লইয়া নদীতে লাফ দিছি। দুই ঘণ্টা নদীতে ভাইস্যা আছিলাম। পরে এলাকার মাইনসে আইয়া উদ্ধার করছে। হুঁশ হইয়া মাইয়ারে পাইলেও স্বামীরে পাই নাই।’
কথাগুলো বলছিলেন ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার সাধারণ ওয়ার্ডে পোড়ার ক্ষত নিয়ে চিকিৎসাধীন ময়ফুল বিবি (৬৫)। পাশেই আহত তাঁর মেয়ে হালিমা বেগম (৪৫)। হালিমার বাবা আবদুল হামিদ হাওলাদার (৭৫) এখনো নিখোঁজ।
তাঁরা হামিদের জন্য বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। তাঁদের বাড়ি বরগুনার বামনা উপজেলার গোলাকাটা গ্রামে।
হালিমা বেগম বলেন, ‘নদীতে ঝাঁপ দিয়া দ্যেহি চাইরো দিকে কুয়াশা। দুই আত (হাত) পাশের কিছু দ্যেহায়না। মাইয়ারে লইয়া দুইঘণ্টা নদীতে ভাইস্যা আছিলাম। তয় কূলে উইড্ডা আমার বুড়া বাপজানরে পাইলাম না।’
ময়ফুল বিবি বলেন, ‘আমার স্বামীরে লইয়া ঢাকায় মাইয়ার বাসায় ব্যাড়াইতে গ্যাছিলাম। অনেক দিন পর লঞ্চে দ্যাশে ফেরতে আছিলাম। কিন্তু আমার স্বামী তো ফিরলো না।’
কয়েকজন যাত্রী অভিযোগ করে বলেন, ঝালকাঠির নলছিটির কাছে আসতেই লঞ্চের ইঞ্জিনে আগুন ধরে যায়। কিন্তু লঞ্চ কর্তৃপক্ষ পাড়ে ভেড়ানোর চেষ্টা করেনি। পরে আগুন বেশি ছড়িয়ে পড়লে সদরেরচর ভাটারকান্দা গ্রামের চরে ভেড়ানোর চেষ্টা করেন লঞ্চটির চালক। কিন্তু সেখানের চরে লঞ্চটি না আটকে ওপারের দিয়াকুল গ্রামে গিয়ে ভিড়ে। এই সময়ের মধ্যে হতাহতের সংখ্যা বেড়ে যায়।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মামুনুর রশীদ নোমানী ।
যোগাযোগ: আদালত পাড়া সদর রোড,বরিশাল। ইমেইল: nomanibsl@gmail.com মোবাইল: 01713799669
কপিরাইট © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 2008-2023 BarisalKhabar24.com