সাব্বির আলম বাবু, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
ভোলায় কঠোর লকডাউনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উত্তাল মেঘনায় যাত্রী পারাপার করছে ইলিশার ৩ জনের নেতৃত্বে প্রভাবশালী একটি মহল। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটে নৌ-যান চলাচল বন্ধ ও ফেরীতে যাত্রী পরিবহন বন্ধ থাকায় প্রভাবশালী চক্রটি এ রুটে মাছ ধরার ছোট ছোট ট্রলার ও স্পিডবোটে অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে যাত্রী পারাপার করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে করে ছোট নৌ-যানে উত্তাল মেঘনা পাড়ি দিতে গিয়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। জানা যায়, করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় গত ২৩ জুলাই থেকে সারাদেশে ১৪ দিনের কঠোর লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। এসময় বিনা প্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের হওয়াসহ সকল ধরণের গণপরিবহন ও নৌ-যান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ভোলাতেও চলে এই কঠোর বিধিনিষেধ। কিন্তু ভোলা থেকে মূল ভূখণ্ডে যেতে একমাত্র মাধ্যম হলো নৌ-যান। যার ফলে ভোলার ইলিশা ফেরীঘাটে প্রতিদিন কর্মস্থলে যেতে হাজার হাজার লোক ভীড় করছেন। কিন্তু প্রশাসন তাদেরকে ফেড়ীতে উঠতে না দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দিচ্ছেন। এ সুযোগে ঘাটে থাকা দালাল চক্র সেখানে আসা লোকদের নদী পারাপার করতে ইলিশা ফেরীঘাটের পাশ্ববর্তী তালতলী ঘাট, শাহাজল বেপারীর ঘাট ও তার ভাই ফারুক বেপারী ঘাট দিয়ে ও বাজাপুরের জোরখাল এলাকায় নিয়ে যায়। স্থানীদের অভিযোগ এসব ট্রলার ও স্প্রীড বোড চলানোর মূল হোতা ইলিশার সরোয়ারদী মাস্টার, সাজল মেম্বার ও তার ভাই ফারুক বেপারী । তাদের লোক দিয়ে সেখান থেকে স্পিডবোট ও ছোট ছোট মাছ ধরার ট্রলার করে তাদেরকে লক্ষ্মীপুর পৌঁছে দেয়। এমনকি ৭০-১০০ টাকার ভাড়া যাত্রীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত এক হাজার টাকা করে আদায় করে। এছাড়াও ছোট ছোট নৌ-যানে রাতের আঁধারে জোড়খাল, শাফিজল বেপারীর ঘাট এবং ইলিশা লঞ্চঘাট দিয়ে যাত্রী পারাপার করছে চক্রটি। অভিযোগ রয়েছে রাজাপুর জোরখাল মাছ ঘাট এলাকায় এটি নিয়ন্ত্রণ করে সেখানকার বাসিন্দা মো. ইসমাইল মোল্লা। এ বিষয়ে শাফিজল বেপারী বলেন, আমি ও আমার ভাই এই ব্যাবসার সাথে জড়িত না। কারা করে সবাই জানে। এক দিকে কঠোর লকডাউন অপরদিকে ১৫ মার্চ থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটকে ডেঞ্জার জোন হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার। এই আইনকে উপেক্ষা করেই এ রুটে যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে। এতে করে করোনা সংক্রমণ ও নৌ-দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে।
তবে যাত্রী বলছে, নিজেদের চাকরি বাঁচাতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে তারা যাতায়াত করছেন। এতে করে তারা হয়রানিরও শিকার হতে হচ্ছে। এদিকে গত ২৭ জুলাই রাতে যাত্রী পারাপারের সময় ইলিশা ঘাট থেকে মো. মানিক ও মো. খেকন নামের দুই মাঝিকে আটক করেছে ইলিশা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র। পরে এদেরকে ভ্রাম্যমান আদালতে সোপর্দ করে। ভোলার ইলিশা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. আনিসুর রহমান বলেন, আমরা সোমবার রাতে যাত্রী পারাপারের সময় মাছ ধরার ট্রলারের দুই মাঝিকে আটক করে ভ্রাম্যমান আদালতে সোপর্দ করেছি। ভোলা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মিজানুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমরা শুনেছি। এখন থেকে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এই দুইটি ঘাটে অবস্থান করবে। যাতে করে কোনো ট্রলার বা স্পিডবোট চলাচল করতে না পারে। এর পরেও যদিও কেউ অবৈধ উপায়ে যাত্রী পারাপার করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তবে স্থানীদের সংখ্যা এই ট্রলার এবং স্পিডবোর্ড বন্ধ না হলে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মামুনুর রশীদ নোমানী ।
যোগাযোগ: আদালত পাড়া সদর রোড,বরিশাল। ইমেইল: [email protected] মোবাইল: 01713799669
কপিরাইট © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 2008-2023 BarisalKhabar24.com