সাব্বির আলম বাবু, বিশেষ প্রতিনিধি:
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে জোয়ার ও জলোচ্ছাসের আঘাতে দুর্গত চরাঞ্চলের পরিবার গুলো এখন চরম সংকটে দিন কাটাচ্ছে। ইয়াস চলে গেলেও উপকূলের প্রায় ২৩ চরে তার ক্ষতবিক্ষত চিহ্ন রেখে গেছে। সহায় সম্বল হারা পরিবার গুলো এখন চরম মানবেতর জীবন যাপন করছে।
জেলা ত্রাণ ও পূর্ণবাসন কর্মকর্তা মো. মোতাহার হোসেনের মতে,এই ঘুর্নিঝড়ে ২৩ টি চরে ১ লক্ষ ৭০ হার মানুষ দুর্যোগে আক্রান্ত হয়েছে। ভোলা জেলায় ১১ হাজার ৩০৯টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
প্রাথমিক তথ্যে জানা যায়, ইয়াসের প্রভাবে দ্বীপজেলা ভোলার সাত উপজেলার ৫১ ইউনিয়নের ৬৫৯টি গ্রাম আক্রান্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ১১ হাজার ৩০৯টি পরিবার। গৃহহারা পরিবারের সংখ্যা ৩ হাজার ৫৭৯ ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ ৭ হাজার ৭৩০ পরিবার। এতে সরাসরি আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় পৌনে ২ লাখ মানুষ। জোয়ারে ভাসিয়ে নিয়েছে কয়েক হাজার গরু- মহিষ।
নিম্নাঞ্চলের মানুষ সামান্য কিছু শুকনো খাবার পেলেও ঘুরে দাড়ানোর মতো কোন সহায়তা এখনো পৌছেনি তাদের কাছে। এদিকে ঘরবাড়ির পরই বেশি ক্ষতি হয়েছে গবাদি পশুর। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ৫০টি স্থানে প্রায় ১৬ বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। লবন পানির কারণে চরঞ্চালের পশুর মড়ক দেখা দিয়েছে।
জোয়ারের উচ্চতা কমলেও খাল-বিলে জলাবদ্ধতায় থাকা নোনা পানির কারণে নানা সংকট দেখা দিয়েছে। এ মুহুর্তে মহিষ গরু নিয়ে বিপাকে পড়েছে চাষীরা। মিঠা পানি আর গৌখাদ্যের সংকট চরমে। ঢাল চর, কুকরি মুকরি ইউনিয়নের মতোই চর নিজাম, কলাতলির চর, চর জহির উদ্দিন, মদনপুর, নেয়ামতপুর, মাঝের চর ও ভোলার রাজাপুরের দুর্গত ক্ষতিগ্রস্থদের দুর্ভোগ যেনশেষ নেই। ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাসানুজ্জামান জানিয়েছেন, ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ গুলো আসন্ন্ অমাবস্যার আগেই সংস্কার করা হবে। জোয়ারের পানি যেন ঢুকতে না পারে তার জন্য কাজ শুরু করা হয়েছে। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ইন্দ্রজিৎ কুমার মন্ডল জানান, তারা এ পর্যন্ত ১৩৪টি পশু মারা যাওয়ার খবর পেয়েছেন। ক্ষয় ক্ষতির তালিকার কাজ চলছে। তবে দক্ষিণের চর গুলোতে নোনা পানির কারণে মহিষের বিভিন্ন অসুখ দেখা দিয়েছে। প্রয়োজন অনুযায়ী তাদের টিম চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে। ভোলা জেলা ত্রাণ ও পূর্ণবাসন কর্মকর্তা মো. মোতাহার হোসেন জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্তদের চিহ্নিত করে তাদের কাছে শুকনো খাবার পৌছে দেয়া হয়েছে। যাদের ঘর সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তাদের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ টাকা ও ঢেউটিন বরাদ্দ করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তরা কি অবস্থায় আছে তা চিহ্নিত করার পর তাদের পুনর্বাসন করা হবে। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত পরিমান ত্রান সামগ্রী রয়েছে। চাহিদার সাথে সাথে দিতে পারছি। আমাদের কোন ঘারতি নেই।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মামুনুর রশীদ নোমানী ।
যোগাযোগ: আদালত পাড়া সদর রোড,বরিশাল। ইমেইল: [email protected] মোবাইল: 01713799669
কপিরাইট © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 2008-2023 BarisalKhabar24.com