যশোর জেলা প্রতিনিধি : অবশেষে বহুঅপকর্মের হোতা ভুমিদস্যু দুধর্ষ সন্ত্রাসী সীমান্তের ত্রাস আাশা বাহিনী প্রধান আশাকে আটক করেছে বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশ।
শনিবার বিকালে বাহাদুরপুর এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। সাংবাদিক সুমন বাদি হয়ে মামলা দায়ের করায় আটক করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ ও ভুক্তভোগীরা।
তারা জানান অবৈধ ভাবে ফসলী জমি বিনষ্ট করে মাটি,বালু উত্তোলন কারী,ভূমিদস্যু, বেনাপোল পোর্টথানাধীন বাহাদুরপুর গ্রামের কুখ্যাত মাস্তান আশা বাহিনী’র আক্রমনে লাঞ্চিত হয় বেনাপোলের স্থানীয় সাংবাদিকরা। এই ঘটনাটি ঘটে ৩ নং বাহাদুরপুর ইউনিয়নের ধাণ্যখোলা গ্রামের মেন্দেরটেক এলাকায়।
ঊৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে ৩ নং বাহাদুরপুর ইউনিয়নের ধাণ্যখোলা গ্রামের মেন্দেরটেকে ফসলী জমি বিনষ্ট করে ভূমিদস্যু এবং ঐ এলাকার কুখ্যাত সন্ত্রাসী,মাস্তান আশা তার বাহিনী নিয়ে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে দেদারসে প্রায় শতবিঘা জমি থেকে অবৈধভাবে মাটি এবং বালি উত্তোলন করছিল। অবৈধ মাটি,বালু উত্তোলনের কাজে প্রায় ২০ থেকে ২৫টি ট্রাক এবং ট্রলি ব্যবহৃত হয়। মাটি,বালু ক্রয়-বিক্রয়ের কাজে ব্যবহৃত ঐ সকল ট্রাক,ট্রলির চলাচলে রাস্তার ধুলি কণায় ঐ এলাকার উঠতি ইরি-বোরো ধানের ব্যপক ক্ষতি সাধন হচ্ছে এবং ঐ এলাকার পাকা,আধাপাকা রাস্তা ভেঙ্গে খানাখন্দে পরিণত হচ্ছে,সেইসাথে গাড়ীর শব্দ দুষনে বাসা বাড়ীতে স্কুল,কলেজের শিক্ষার্থীরা ঠিকমত লেখাপড়া করতে না পারা, মসজিদ,মাদ্রাসা গুলোয় নামাজিরা ঠিকমত আল্লাহর ইবাদত করতে পারে না,এমন একটা পরিস্থিতিতে এলাকার মানুষ অতিষ্ট। বিষয়টি স্থানীয় সাংবাদিকদিকরা জানতে পেরে ১০-১১ জন সাংবাদিক তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের লক্ষ্যে মাটি,বালু উত্তোলনের স্থান ৩নং বাহাদুরপুর ধাণ্যখোলা গ্রামের মেন্দেরটেক বাওড় সংলগ্ন কৃষি জমি এলাকায় যায়। মাটি,বালু উত্তোলনের দৃশ্য ভিডিও ধারনের সময় সন্ত্রাসী,মাস্তান আশা এবং তার সন্ত্রাসী বাহিনী অতর্কিতে সাংবাদিকদের উপর হামলা চালায়। অবরদ্ধ করে রাখা হয়। দেওয়া হয় জীনব নাশের হুমকি। ছিনিয়ে নেওয়া হয় ক্যমেরা।
এ ব্যাপারে বেনাপোল পোর্ট থানায় পৃথক দুটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সাংবাদিক সুমন জানান, দুপর সাড়ে ১২ টার দিকে সংবাদ সংগ্রহের জন্য বাহাদুরপুর বাওড় সংলগ্ন মেন্দের টেকের পাশ থেকে কৃষি জমি থেকে মাটি উত্তোলন করছে, এমন সংবাদের ভিত্তিতে আমি এবং আমার সহকর্মী ৩ জন সাংবাদিক সহ সেখানে গিয়ে মাটি উত্তোলনের ছবি তুলি! এবং মাটিবাহী ট্রাক্টর চালকের নিকট জিজ্ঞাসা করি কে বা কারা মাটি উত্তোলন করছেন তখন দুর হতে খালি গায়ে আসা একাধিক অপকর্মের হোতা দুধর্ষ সন্ত্রাসী আশা স্বদলবলে এসে “ছবি তুললে কেন বলেই অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও মারপিট করে।
সে বলে আমার এলাকায় তোদের ঢোকার পারমিশন কে দিছে। তোদের মত সাংবাদিকদের মাটিতে পুতে রাখবো এসব বলে আমাদের সাথে থাকা ক্যামেরা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয় আশা ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর বাবলু,সুমন,মিঠুন সহ অরোও ১০/১৫জন। তারপর তারা আমাদেরকে শারিরিক ভাবে নির্যাতন ও মারধর করে এবং ধারণকৃত ভিডিও মুছে ফেলার জন্য সাথে থাকা ক্যামেরা ও স্ট্যান্ড অস্ত্রের মুখে ছিনতাই করে নেয়। এদিকে একই নিউজের সংবাদ সংগ্রহে সেখানে উপস্থিত হন সাংবাদিক সাহিদুল ইসলাম শাহিন সহ তার সহযোদ্ধা ৬ জন।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে আশা বাহিনী তাদেরকেও মাছের ঘেরে আটক করে নির্যাতন চালিয়ে তাদের নিকট থেকে ক্যামেরা ছিনিয়ে রেখে ভয়ভীতি ও হুমকী দিয়ে বলে আর কখনো এই এলাকায় দেখলে গুলি করে মাথার খুলি উড়িয়ে দেব।
এরপর সকল সাংবাদিক কে তারা মাঠের একটি ঘরে তালা বদ্ধ করে রাখে। এ অবস্থায় সাংবাদিকদের আত্মচিৎকারে ঐ এলাকার মানুষ বেনাপোল পোর্টথানায় খবর দেয়।
খবর পেয়ে পোর্টথানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুুন খান তার পুলিশ ফোর্সের মাধ্যমে আটকে রাখা সাংবাদিকদের উদ্ধার করে। এ বিষয়ে সাংবাদিক সাহিদুল ইসলাম বলেন, নিউজের তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে সন্ত্রাসী আশা গং কর্তৃক সাংবাদিকদের যে লাঞ্ছিত করা হলো, এই সন্ত্রাসীর খুটির জোর কোথায় সেটা বের করতে প্রশাসন ব্যর্থ হলে আমরা কঠোর থেকে কঠোরতর পদক্ষেপ হাতে নেব। অবিলম্বে সন্ত্রাসী, ভূমিদস্যু আশা সহ তার সন্ত্রাসী বাহীনিকে আটক সহ সাংবাদিকদের ক্যামেরা উদ্ধার করে দিতে হবে, অন্যথায় সকল সাংবাদিক সংগঠনের সমন্বয়ে কঠোর কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে।
স্থানীয়রা জানান আশা বাহিনীর কবলে কৃষি জমি বিলীন হলেও নির্যাতন সহ গুম খুনের ভয়ে মুখ খোলে না কেউ। আশা মাদক, গরু পাচার, জবরদখল, নারী নির্যাতন সহ নানা অপকর্ম করে এলাকায় একটা ত্রাস সৃষ্টি করে রেখেছে। এ ঘটনা উলেখ্য করে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
বিষয়টি জানাজানির পর শার্শা উপজেলার সংবাদ কর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। এছাড়াও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যাক্তি জানান,বাওর সংলগ্ন ৪০ বিঘা সরকারি জমি দখল করে মাছের ঘের বনিয়ে সেখান থেকে কোটি কোটি টাকার বালু উত্তোলন করে দেদারসে বিক্রি করছেন আর এর ফলে ঘেরের পাশে থাকা কৃষি জমিতে পানি থাকছে না। ঘটনার পর পরই সাংবাদিকরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর আলীফ রেজাকে অবহিত করা করেন।
এ ব্যাপারে বেনাপোল পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মামুন খান বলেন, অভিযোগ গ্রহন করা হয়েছে তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে আসামী আশাকে আটক করা হয়েছে। অন্যদেরকেও আটকের চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানান তিনি। তবে অভিযুক্তদের সবাইকে আটক করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবী জানান সাংবাদিকরা।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মামুনুর রশীদ নোমানী ।
যোগাযোগ: আদালত পাড়া সদর রোড,বরিশাল। ইমেইল: [email protected] মোবাইল: 01713799669
কপিরাইট © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 2008-2023 BarisalKhabar24.com