বানারীপাড়া প্রতিনিধিঃ
বানারীপাড়ায় বের হচ্ছে থলের বিড়াল একের পর এক বিভিন্ন প্রকল্পের নামে টাকা আত্নসাৎ এর অভিযোগ।
বরিশালের বানাড়ীপাড়া পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট ও অনুশীলন সাংস্কৃতিক সোসাইটি প্রকল্পের নাম দিয়ে ব্যক্তি মালিকানা বিল্ডিংয়ে নাম ফলক লাগিয়ে টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলকে লেখা ছিল প্রকল্প বাস্তবায়নে জেলা পরিষধ, প্রাক্কলিত ব্যায়ঃ ১ লক্ষ টাকা অর্থ বছর ২০১৬-১৭, প্রকল্প সভাপতিঃ শরীফ উদ্দীন আহম্মেদ
ওই বিল্ডিংয়ের মালিক কেরামত আলী ফকির। তার ছেলে উপজেল যুবদলে যুগ্ম আহ্বায়ক রিয়াজ ফকির অভিযোগ করেন, তার বিল্ডিংয়ে ২য় তলায় সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শরীফ উদ্দিন আহমদ কিসলু ভাড়া নেন এবং তার বিল্ডিংয়ের রুমের সামনে একটি সরকারী বরাদ্দের নাম ফলক লাগান। যাতে বরিশাল জেলা পরিষদ থেকে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে বানারীপাড়া বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট এর নামে বরাদ্দের লাখ টাকা বরাদ্দ ছিল। যা উত্তোলন করে নিয়েছেন উপজেলা পরিষদ সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শরীফ উদ্দিন আহমদ কিসলু ।
বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অরুন সরকার রানা ও সাংগঠনিক সম্পাদক সুজন হালদার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ও তাদের ফেসবুক আইডিতে বানারীপাড়া উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক লেখেন
বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, কোন ধরনের সরকারি কিংবা বেসরকারি প্রকল্পের ঠিকাদারী/প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান নয়।
২০১৬/ ১৭ অর্থবছরে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের নাম ভাঙ্গিয়ে জনাব শরিফ উদ্দিন আহমদ যে কাজ করেছেন, তা সংগঠনের শৃঙ্খলা পরিপন্থী।
বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের ঐতিহ্য ও ভাবমূর্তি বিনষ্ট হওয়ায় জনাব শরিফ উদ্দিন আহম্মেদ কিসলুর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।
এ বিষয়ে ওই প্রকল্পের সভাপতি ও উপজেলা বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি এবং উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শরীফ উদ্দিন আহমদ কিসলু বলেন, ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে শিশু-কিশোর সমাবেশ ও বাদ্যযন্ত্র ক্রয়ে জেলা পরিষদের বরাদ্দের ওই টাকা তখন ব্যয় করা হয়েছিল।
এ ব্যাপারে বানারীপাড়া উপজেলা বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ওয়াহীদুজ্জামান দুলাল বলেন, প্রকল্পের টাকা প্রকল্পের কাজেই ব্যয় করতে হয় অন্য কোন খাতে ব্যয় করার সুযোগ নেই।।
এ প্রসঙ্গে বরিশাল জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখার উপ-পরিচালক (ডিডিএলজি) মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, এ সংক্রান্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। পেলে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জেলা পরিষদের তৎকালীন প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফা বদলি হয়ে বর্তমানে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) ঝালকাঠীর রাজাপুর উপজেলা প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, কয়েক বছর আগের কথা। ঠিকমতো সব কিছু মনে নেই। যতদূর মনে পড়ে বরিশাল জেলা পরিষদ থেকে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট এর জন্য এক লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। সিপিসির মাধ্যমে কাজ করা হয়। যদি কোন দুর্নীতি করা হয় তার ব্যবস্থা নেওয়ার হবে। তবে এই টাকার সিপিসি বানারীপাড়া উপজেলা পরিষদ এর সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন আমার মনে পড়ে ।
প্রসঙ্গত, বানারীপাড়ার পূর্ব উদয়কাঠি গ্রামে মুন্সি বাড়ির সামনের খালে আয়রণ ব্রিজের স্থলে সুপারি গাছের সাঁকো নির্মাণ এবং বাইশারী ইউনিয়নের গরদ্বার গ্রামের খলিল মোল্লার বাড়ির সামনের খালে আয়রণ ব্রিজের বরাদ্দে মাত্র চারটি লোহার খুঁটি স্থাপন করে লাখ টাকা খেয়ে ফেলার অভিযোগ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ায় তোলপাড় হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় বেড়িয়ে আসছে একের পর এক থলের বিড়াল।
সাধারন মানুষের দাবি জনগণের উন্নয়নের জন্য বরাদ্দের টাকা ঠিক ভাবে ব্যায় করা হয়েছে কিনা তার সঠিক তদন্ত প্রয়েজন। এতে বেরিয়ে আসতে পারে লুকায়িত আরো দুর্নীতির চিত্র।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মামুনুর রশীদ নোমানী ।
যোগাযোগ: আদালত পাড়া সদর রোড,বরিশাল। ইমেইল: [email protected] মোবাইল: 01713799669
কপিরাইট © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 2008-2023 BarisalKhabar24.com